শহরে এসেছিল গল্পবলা এক দেবদূত

সাদাত হোসাইনের সঙ্গে লেখক
সাদাত হোসাইনের সঙ্গে লেখক

গল্পের ছবি আঁকতে আঁকতে জানালার ওপাশে যে লেখক একদিন ভেবেছিলেন, ‘আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই’; ‘যেতে চাইলে এখুনি যাও, পরে গেলে ছায়া বেড়ে যাবে। থেকে গেলে এখুনি থাকো, বেলা শেষে মায়া বেড়ে যাবে’। সেই লেখকই বাংলাদেশের মানুষকে বলেছেন, যেতে চাইলে যেও আরশিনগরে। আরশিনগরে পা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ প্রায় হঠাৎ করেই আবিষ্কার করল, ‘আমাদের শহরে চলে এসেছে, গল্পবলা এক দেবদূত। তারপর সেই বিস্ময়কর গল্পবলা দেবদূত একে একে বলেছেন, অন্দরমহল ও মানবজনমের গল্প।’

মানবজনমের কথা বলতে বলতে কী যেন কী মনে করে তিনি বলেছেন, ‘আমি একদিন নিখোঁজ হব’, ‘আমাকে হারাতে দিলে, নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিতে ছেয়ে যাবে তোমার শহর’। নিখোঁজ হওয়ার কথা ভাবতে ভাবতে কখনো তিনি তাকিয়ে থেকেছেন নিঃসঙ্গ নক্ষত্রের পানে, আবার কখনো তিনি ভেবেছেন সেই কাজল চোখের মেয়েটিকে। কাজল চোখের মেয়েটিকে বলেছেন, ‘শোনো কাজল চোখের মেয়ে, আমার দিবস কাটে বিবশ হয়ে, তোমার চোখে চেয়ে।’ নিঃসঙ্গ নক্ষত্রকে তিনি কী বলেছেন, অনেকেই তা জানি আবার অনেকেই জানি না। জানালার ওপাশে বসে ছবির গল্প বলা যে লেখক একদিন বলেছিলেন, ‘আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই’; কিংবা ‘কোথায় যাবে তোমার মানুষ রেখে? মানুষ কেন হারিয়ে গেলে শেষে, মানুষ পাওয়া শেখে?’ জীবনের গল্পবলা সেই লেখকই এখন চলে যেতে চান নির্বাসনে, নির্বাসনে।

সিডনিতে সাহিত্যসন্ধ্যায় সাদাত হোসাইনকে স্মারক উপহার দেওয়া হচ্ছে
সিডনিতে সাহিত্যসন্ধ্যায় সাদাত হোসাইনকে স্মারক উপহার দেওয়া হচ্ছে

যদি অবাক দুই চোখে, ছায়া কাঁপে অভিমানে। তবুও হারিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই এখানে। হারিয়ে যাবে বলে, পা টিপে এগোতে গেলেই, গোটা শহর বাতি জ্বেলে একসঙ্গে বলবে, তক্ষক ডাকা নিশুতিতে কোথাও নেই ঝুমঝুম অন্ধকার, ভালোবাসা ধুয়ে দেবে গোটা মুখ তোমার।
...

শাখাওয়াৎ নয়ন: কথাসাহিত্যিক ও একাডেমিক। ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া।
ফেসবুক: <shakhawat. nayon>