তুলুজপ্রবাসী বাঙালিদের অ্যান্ডোরায় আনন্দ ভ্রমণ

আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীরা
আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীরা

নানা জল্পনাকল্পনা ও শীত অবসানের পর আনন্দ ভ্রমণের অংশ হিসেবে আমরা হাজির হয়েছিলাম অ্যান্ডোরাতে। দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র অ্যান্ডোরা। তবে ক্ষুদ্র হলেও অ্যান্ডোরাতে স্কি ও স্নোবোর্ডিংয়ের ব্যবস্থা আছে। হাইকিং, বাইকিং ও আল্পস পর্বতমালার অসাধারণ দৃশ্যাবলি পর্যটকদের ডেকে আনে।

অদৃশ্য সে ডাকে সাড়া দিয়ে আমরাও গিয়েছিলাম অ্যান্ডোরার অন্যতম এক বৈচিত্র্যময় অঞ্চল দ্য লা ক্যাসায়। আমরা বলতে ফ্রান্সের বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন তুলুজের আয়োজনে। প্রায় দুই শ সদস্য। সকাল আনুমানিক সাড়ে নয়টা। অপেক্ষার প্রহর শেষ। বাসে চেপে তুলুজ থেকে আমরা রওনা হলাম অ্যান্ডোরার পথে।

হু হু করে গাড়ি চলছে। তুলুজ-অ্যান্ডোরা সংযুক্ত রাস্তা অতিক্রম করছি। দুই পাশে অসংখ্য গাছগাছালি। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখছি প্রকৃতির নানা বৈচিত্র্য। কংক্রিটের ঘরগুলো যেন দৌড়ে যাচ্ছে। রাস্তার দুই ধারে বরফে ঢাকা নৈসর্গিক প্রকৃতির মনোরম পরিবেশ বেশ সুন্দর। সবকিছু যেন পরিপাটি করে সাজানো। দিঘল সবুজ বাগান। সারি সারি ফুলগাছ। থরে থরে রংবেরঙের ফুল। বরফের চাদরে আবৃত যত্রতত্র লজ্জাবতীগাছের সঙ্গে বুনো ঘাসের মিতালি।

শীতকালে প্রচুর বরফ পড়ে এই এলাকার পাহাড়ি রাস্তাগুলো প্রায়ই বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষত তুলুজের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী রাস্তাটি। গান, কবিতা আর ছন্দের তালে গাড়ি চলছে। আমরা বেশ উপভোগ করছি। আগের রাতের এক পশলা বৃষ্টির কল্যাণে দিনটি চমৎকার উপভোগ্য। ধুলোহীন প্রকৃতি। স্বচ্ছ আকাশের বুকে ধবধবে তুলো মেঘ দিনটিকে দিয়েছিল অন্য মাত্রা। ঋতুরাজ বসন্ত আগমনের শুরুতে এমন একটি সোনালি সকাল যাত্রাকে করে তুলেছিল আরামদায়ক।

অবশেষে আমরা পৌঁছে গেলাম নির্দিষ্ট গন্তব্যে। চারদিকে অসম্ভব সৌন্দর্যরূপে ঘিরে আছে। চোখধাঁধানো সৌন্দর্য নিশ্চয় মহান আল্লাহর কাকতালীয় কুদরতের বহিঃপ্রকাশ। নির্বিকার চিত্তে অবলোকন করছি। বরফের আবরণে নির্মল প্রকৃতি যেন হেলেদুলে যাচ্ছে। সে কী দাপুটে হণ্টন! পথচলায় কোনো আড়ষ্ট ভাব নেই। যেন হিম স্রোত নেমে এসেছে। মুক্ত আকাশের রোমাঞ্চকর সময় কাটছে।

সময় গড়িয়ে দুপুর ছুঁই ছুঁই। সবার ক্ষুধার আবির্ভাব ঘটছে। বিরিয়ানির মাতাল করা ঘ্রাণ যেন ক্ষুধাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। খাবার পর্ব শেষ। প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে যেতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। সবাই মিলে ছবি তুললাম। স্মৃতির ক্যানভাসে ছবিগুলোর নৈসর্গিক দৃশ্য অমলিন হয়ে থাকবে।

এবার যাওয়ার পালা। তবে এর আগে স্মরণ করছি কয়েকজনকে, যাঁরা এ ভ্রমণের সঙ্গী হয়েছিলেন। তাঁরা হলেন বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন তুলুজের (ফ্রান্স) সভাপতি ফখরুল আ ক ম সেলিম, জোসেফ ডি কস্তা, জাহাঙ্গীর হোসেন, তাজিম উদ্দিন, ফারুক হোসেন, মোতালেব হোসেন, এনজাম খান, ফিরোজ আল মামুন, কাওসার আহমেদ, সাকের চৌধুরী, আমিনুর রহমান, ইফতেখার মাহমুদ, শাকিল চৌধুরী, জামান, মিঠু প্রমুখ।