২৬ মার্চ বাংলাদেশ দিবস হিসেবে উদ্যাপন

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে অটোয়ার সিটি হল প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে অটোয়ার সিটি হল প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়

কানাডার রাজধানী অটোয়ায় এ বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়েছে। অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চকে বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন বেঙ্গলি কমিউনিটি সার্ভিস সেন্টার অব কানাডা (বিসিএসসিসি) ও কানাডা-বাংলাদেশ পার্টনারশিপ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগে তিনি দিনটিকে বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করেন। এ উপলক্ষে অটোয়া সিটি হল প্রাঙ্গণে অটোয়ার মেয়র এবং স্থানীয় সাংসদ ও আয়োজক প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে অটোয়া সিটি হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তব্য দেন সিটি মেয়র, হাইকমিশনার ও দেশটিতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত। এ অনুষ্ঠানে দেশটির কেন্দ্রীয় সাংসদ চন্দ্র আরিয়াসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে অটোয়ার সিটি হলের অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে অটোয়ার সিটি হলের অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়

অটোয়ায় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন করেছে দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশন। ২৬ মার্চ স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় বাংলাদেশ ভবনে হাইকমিশনার মিজানুর রহমান জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির শুরু করেন। এ সময় হাইকমিশনার, তাঁর সহধর্মিণী নিশাত রহমান, হাইকমিশনের অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।

সন্ধ্যায় দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন হোটেল ডেলটা অটোয়া সিটি সেন্টারে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীর সংসদীয় সচিব কামাল খেরা এমপি। এ ছাড়া দেশটিতে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কোরের সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা এবং অটোয়া, মন্ট্রিয়ল ও টরন্টো শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন কামাল খেরা
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন কামাল খেরা

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কামাল খেরা বাংলাদেশ ও কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ ও ক্রমবর্ধমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমপিজি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সফলতাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অগ্রগতি ও উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশের সফলতার প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে কানাডা সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

হাইকমিশনার মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অর্জিত বিভিন্ন সফলতার কথা বর্ণনা করেন। তিনি কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক যেমন বাণিজ্যিক, সামাজিক উন্নয়ন, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সহযোগিতার কথা বর্ণনা দেন। তিনি বর্তমান সরকার গৃহীত ২০২১ ও ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কানাডা সরকার ও কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতার প্রত্যাশা করেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান

বক্তব্যের পর প্রধান অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী এ দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। পরে কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরী।

সবশেষে অভ্যাগত অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার দিয়ে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়।

প্রধান অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী এ দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেক কাটেন
প্রধান অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী এ দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেক কাটেন

এ ছাড়া সকালের অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মিয়া মো. মাইনুল কবির, কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, কাউন্সেলর (বাণিজ্য) মো. শাকিল মাহমুদ ও প্রথম সচিব (কনস্যুলার) অপর্ণা রানী পাল এ দিবস উপলক্ষে যথাক্রমে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাইকমিশনের সহকারী কনস্যুলার কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তি

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার একটি দৃশ্য
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার একটি দৃশ্য