জাপানে হানামি উৎসব

চেরি ফুল
চেরি ফুল

চেরি ফুলের দেশ জাপান। চেরি ফুলকে জাপানিরা সাকুরা বলে। গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো প্রধানত গোলাপি ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। এই সময় জাপানের সর্বত্রই চেরি ফুলের সমাহার। চেরি ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই অবর্ণনীয়। তাই চেরি ফুলের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে জাপানের বিখ্যাত কবি মাতসুও বাশো বলেছিলেন, ‘মানুষের দুটো জীবনের মাঝখানে আর একটি সময় আছে, আর সেটি হলো চেরি ফুল ফোটার সময়।’

চেরি ফুল
চেরি ফুল

মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত পুরো জাপান নানা রঙের চেরি ফুলের চাদরে ঢেকে যায়। এই চেরি ফুলকে নিয়ে জাপানিদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। চেরি ফুলকে বরণ করে নিতে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠানের। দেশি-বিদেশি লাখো পর্যটকের পদচারণে জাপানজুড়েই থাকে উৎসবের আমেজ।

চেরি ফুল
চেরি ফুল

অনুকূল আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেভাগেই কখন কোথায় চেরি ফুল ফুটবে, তার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে জাপানিরা এই চেরি ফুল নিয়ে উৎসব পালন করে আসছে, যা ‘হানামি’ নামে পরিচিত। হানামি জাপানি শব্দ। এর অর্থ হলো সবাই মিলে চেরি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা।

চেরি ফুলের বাগানে সহপাঠীদের সঙ্গে লেখক
চেরি ফুলের বাগানে সহপাঠীদের সঙ্গে লেখক

হানামিকে ঘিরে জাপানিদের রয়েছে নানা প্রস্তুতি। পার্কগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়। সবাই দল বেঁধে পার্কগুলোতে জড়ো হয় একসঙ্গে চেরি ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। চেরিগাছের নিচে আয়োজন করা হয় পিকনিকের। হানামি উৎসব এখন জাপানি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। মূলত চেরি ফুল বরণ করে নেওয়ার জন্যই হানামি উৎসবের আয়োজন করা হয়। রাতে চেরি গাছগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়, যা সত্যিই চোখধাঁধানো। রাতের হানামিকে জাপানিরা ‘ইওজাকুরা’ বলে।

লেখক
লেখক

চেরি ফুলের সৌন্দর্য মনমাতানো হলেও এটা খুবই ক্ষণস্থায়ী। তাই চেরি ফুল মানবজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। আর জাপানিদের জীবন-দর্শনের ওপরও এই চেরি ফুলের রয়েছ সুদূরপ্রসারী প্রভাব।
...

মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন: শিক্ষার্থী, কিউশু ইউনিভার্সিটি, জাপান।