অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে পয়লা বৈশাখ

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ বরণ উপলক্ষে কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন অটোয়ায় পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। Bronson Centre–এ আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত লোক মেলা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত দপ্তরের (টিএফও) কর্মকর্তাসহ অটোয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

হাইকমিশনের কাউন্সেলর ও দূতালয়প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের উপপরিচালক ফিলিপ বেইন সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে কানাডা-বাংলাদেশের বিদ্যমান সুসম্পর্কের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। টিএফওর পরিচালক জাকি মুন্সি তাঁর বক্তব্যে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো অধ্যাপক নিপা ব্যানার্জি বাংলাদেশের চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি, বিশেষ করে পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এর তাৎপর্যের কথা তুলে ধরেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান
বক্তব্য দিচ্ছেন মিজানুর রহমান

সভাপতির বক্তব্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান উপস্থিত সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব মানবতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এ স্বীকৃতি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে। তিনি পয়লা বৈশাখ ও মঙ্গল শুভযাত্রা শুধু আনন্দ–উৎসবই নয় বরং এই উৎসব বাংলার অসাম্প্রদায়িক ও উদারনৈতিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালনের মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমাজকে সুসংহত রাখার অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান। হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সব প্রবাসীকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।

উপস্থিতির একাংশ
উপস্থিতির একাংশ

লোক মেলায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিচালিত বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আটটি স্টল প্রদান করে। এসব স্টল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার ও পোশাক বিক্রি এবং কানাডায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণের বিষয়ে তথ্য বিনিময় করে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথমে শিশুশিল্পী চন্দ্রিমা ও মাশরুম সংগীত এবং শিশুশিল্পী অর্থী, তাকবির ও আনাহি নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর পয়লা বৈশাখের চিরায়ত গান এসো হে বৈশাখ এসো এসোসহ সংগীত পরিবেশন করেন ডালিয়া ইয়াসমিন, অং সুয়ে থোয়াই, নার্গিস আক্তার রুবি, ফারজানা ইসলাম মাওলা, হিমাদ্রি শেখর, আরেফিন কবির ও আফরোজা আক্তার লিপি এবং হাইকমিশনের পক্ষে মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, ফারহানা আহমেদ চৌধুরী ও নাদিরা হক। কবিতা আবৃতি করেন শিউলি হক ও জুলফি সাদেক। তবলায় সহযোগিতা করেন আর্য মুখার্জি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়

সবশেষে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে রাতে উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। দিনব্যাপী এ আয়োজন দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখরিত ছিল। বিজ্ঞপ্তি