মরিশাসে হাজারো মানুষের সমাগমে বাংলা নববর্ষ

মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা

মরিশাসের পোর্ট লুইসে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রবাসী ও বিদেশির উপস্থিতিতে বরণ করা হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬। দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ বরণ করা হয়। এ উপলক্ষে হাইকমিশন দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে। মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি টানা হয়।

মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা

মরিশাস সরকারের এডুকেশন, হিউম্যান রিসোর্স, টারশিয়ারি এডুকেশন ও সায়েন্টিফিক রিসার্চ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী লিলা দেবী দকুন লুচমুন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বোবাসা রোজহিল মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র কেন ফ্যাট ফংসুকুন।

উপস্থিতির একাংশ
উপস্থিতির একাংশ

সকাল সাড়ে ১০টায় বিপুলসংখ্যক প্রবাসী কর্মীর অংশগ্রহণে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটি উদ্বোধন করেন লিলা দেবী। মঙ্গল শোভাযাত্রায় রংবেরঙের ফেস্টুন, দেশীয় বাদ্যযন্ত্র, বাহারি পোশাক পরে হাজারো বাঙালি অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ উপস্থিত প্রবাসী ও বিদেশি অতিথিদের কাছে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ইউনেসকো বাংলাদেশের এ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইনটানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলে থাকেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরাও এখানে এই উৎসবের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা দেশেই থাকি আর বিদেশেই থাকি, আমাদের চেতনার রং লাল-সবুজ, আমরা ধারণ করি বঙ্গবন্ধুর চেতনা এবং আমরা স্বপ্ন দেখি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।’

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

প্রধান অতিথি লিলা দেবী সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা এবং ইউনেসকোর কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মরিশাসের জনগণের মধ্যে পরিচিত করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের এই আয়োজনকে অনন্য বলে উল্লেখ করেন।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

মরিশাসে এ বছরই প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। অন্যদিকে রাজধানী শহর পোর্ট লুইসের বাইরে এই প্রথম দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন করা হয়। মেলার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি বাহারি খাবার ছিল উপস্থিত সবার কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। দিনের শেষে আয়োজন করা হয় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বাংলাদেশি শিশু–কিশোরদের উপস্থাপনার পাশাপাশি মরিশাসের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের পরিবেশনা ছিল দর্শকনন্দিত। এ ছাড়া ভারতের প্রবাসী বাঙালিরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। নৃত্যগীতের মূর্ছনায় পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল ব্যাপক আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য।

অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য
অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য

দিনব্যাপী চলমান অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত হন দেশটির ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার আইভান লেসলি কলিনদা ভেলু, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুর রউফ বন্ধন, কার্টাবন মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র সুলেখা জেপল রাদয়োয়া ও পোর্ট লুইস মিউনিসিপ্যালিটির ডেপুটি মেয়র ইহসান ইসমে মামুদিসহ দেশটির সিভিল সোসাইটির বিভিন্ন ব্যক্তি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয় কমিউনিটি, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি, প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিপুলসংখ্যক প্রবাসী কর্মী।

বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ
বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ

এ ছাড়া পয়লা বৈশাখের দুদিন আগে হাইকমিশনারের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সকল মন্ত্রী, স্পিকার, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, মেয়র ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার কর্ণধারকে মিষ্টান্ন উপহার হিসেবে পাঠানো হয়।

মেলার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি বাহারি খাবার ছিল উপস্থিত সবার কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়
মেলার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি বাহারি খাবার ছিল উপস্থিত সবার কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়

বিজ্ঞপ্তি