জাপানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘুড়ি উৎসব

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘুড়ি উৎসব
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘুড়ি উৎসব

জাপানের রাজধানী টোকিও এবং এর আশপাশ এলাকায় বসবাসরত ঢাকাবাসীর আয়োজনে সাইতামা জেলার ওমিয়া দাইসান পার্কে হয়ে গেল ঘুড়ি উৎসব। এতে সমবেত হয়েছিলেন ঢাকাবাসীসহ শতাধিক প্রবাসী। উৎসবে শিশু-কিশোরদের আনন্দের মাত্রা ছিল দেখার মতো। ১০ দিনের টানা ছুটির দ্বিতীয় দিন গত ২৮ এপ্রিল এ ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

জাপানে গত ২৭ এপ্রিল থেকে নজিরবিহীন ১০ দিনের এই ছুটি শুরু হয়েছে। ৩০ এপ্রিল জাপানের সম্রাট আকিহিতো অবসর নিয়েছেন। এরপর তাঁর বড় ছেলে নারুহিতো (৫৯) সিংহাসনে বসেন। পুরোনো সম্রাটের বিদায় ও নতুন সম্রাটের অভিষেক অনুষ্ঠান ছাড়াও জাপানিরা দেশটির ঐতিহ্যবাহী গোল্ডেন উইকও এ সময়ে উদ্‌যাপন করছেন। দুই উপলক্ষ মিলিয়ে টানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘুড়ি উৎসব
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘুড়ি উৎসব

জাপানে এত দীর্ঘ সময় কাজবিহীন থাকার কথা ভাবতেই পারেন না সাধারণ মানুষ। তাই অনেকেই সরকারের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, উৎসবপ্রিয় বাঙালিরা এই সুযোগে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দীর্ঘ এই ছুটি কাজে লাগাচ্ছেন।

ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ
ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ

বাংলাদেশে পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব পালন করা হয়। পৌষসংক্রান্তি বা মকরসংক্রান্তি ঢাকাবাসীর কাছে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এই দিনকে ঘিরে উৎসবের আয়োজন করা হয়। পুরান ঢাকার সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রবাসী ঢাকাবাসী কামাল উদ্দীন, দেলওয়ার, তানি, জুলু, শাহু, লোপা, পপ প্রমুখ মিলে জাপান-বাংলাদেশ ঘুড়ি উৎসব পরিবারের ব্যানারে আয়োজন করেন এই ঘুড়ি উৎসব। জমজমাট এই উৎসবে সমবেত হয়েছিলেন অনেক প্রবাসী। সেদিন রাজধানী টোকিওতে বাঙালিদের আরও তিনটি অনুষ্ঠান থাকলেও এই আয়োজনেও অনেকেই এসেছিলেন।

ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ
ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ

চমৎকার রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে উৎসবের শুরুতে পুরান ঢাকা ও বনানী ট্র্যাজেডিতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। এরপর মুনশী আজাদ ঘুড়ি উৎসবের সূচনা করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন কাজী ইনসানুল হক, আশরাফুল ইসলাম, হোসাইন মুনির, খান মোহাম্মদ ইকবাল, মাসুমসহ আরও অনেকে। আনুষ্ঠানিক সূচনার পর শিশু-কিশোরসহ বড়রাও ঘুড়ি ওড়ানো এবং আড্ডা ও হইহল্লায় মেতে ওঠেন।

ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ
ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ

আয়োজনে শিশুদের ক্যাটওয়াক দিয়ে শহীদ মিনার তৈরির পর্বটা ছিল চমৎকার। এরপর ছিল খাওয়াদাওয়া। ঢাকাইয়া ঐতিহ্য কাঁঠালপাতার দাওনায় তেহারি, গজা ও বাখরখানি দিয়ে সবাইকে আপ্যায়িত করা হয়। বিকেলে ছিল মুড়িমাখা।

ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ
ঘুড়ি উৎসবে সমবেতদের একাংশ

উৎসবের মাঝে বাংলাদেশ থেকে আগত বাজনা বিট ব্যান্ডের জাপানি জনপ্রিয় গায়িকা ও অভিনেত্রী মায়ে ওয়াতানাবে তাঁর এক বাংলাপ্রেমী বান্ধবীকে নিয়ে আসেন এবং নাচ ও গান পরিবেশন করেন।

ভবিষ্যতে আরও বড় আয়োজনে জাপানপ্রবাসী ঢাকাবাসীদের নিয়ে আয়োজনের অভিপ্রায় রেখে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধান উদ্যোক্তা কামাল উদ্দীন ও আকিকো দম্পতি।

উৎসবের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন গোলাম মাসুম জিকো। বিজ্ঞপ্তি