মরিশাসে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন

বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ
বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ

মরিশাসের বাংলাদেশ হাইকমিশন দেশটিতে বসবাসরত অভিবাসীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উদ্‌যাপন করেছে। এ উপলক্ষে পোর্ট লুইসে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ১ মে বুধবার এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনার শুরুতে দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) মো. আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা দৈনিক 8 ঘণ্টা কর্মের দাবিতে আলোচনা গড়ে তুলেছিলেন। তাঁরা নামমাত্র মজুরিতে মালিকদের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে বাধ্য হতেন। হে মার্কেটের আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায় এতে ছয়জন শ্রমিক মারা যান ও অনেকে আহত হন। বস্তুত এ দিবসের পথ ধরেই শ্রমিকদের অধিকার অর্জিত হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের নিজেদের এবং তাঁদের শ্রমের মর্যাদা গুরুত্ব পেয়েছে। উন্নত দেশে এখন শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি কাজের পরিবেশ উন্নত হয়েছে।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ বলেন, মরিশাসে কর্মরত প্রবাসী কর্মীরা তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো আছেন। এখানে প্রবাসী কর্মীদের জন্য আবশ্যিকভাবে কোম্পানি কর্তৃক খাবার ও বাসস্থান নিশ্চিত করা হয়। কোনো কারণে দু-একটি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলেও হাইকমিশন মরিশাসের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মীদের অন্য কোম্পানিতে কাজের সংস্থান করে দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের অবশ্যই এ দেশের আইন-কানুন মেনে চলতে হবে। অবৈধভাবে কেউ থাকার চেষ্টা করবেন না। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে দেশে চলে যাবেন। পুনরায় নতুন ভিসা নিয়ে আবার আসবেন।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে আবার মরিশাসে আসা যায়। যা আগে এক বছর ছিল। তিনি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে প্রদত্ত বিভিন্ন সুবিধাদি সম্পর্কেও আলোকপাত করেন।

প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নোত্তর

রেজিনা আহমেদ তাঁর বক্তব্যের আগে প্রবাসী কর্মীদের তাঁদের সমস্যাবলি জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। প্রবাসী কর্মীরা এ সময় মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। মুক্ত আলোচনায় অধিকাংশ কর্মীই মত প্রকাশ করেন, তাঁরা তুলনামূলকভাবে ভালো আছেন। দুজন মাত্র তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এ ব্যাপারে হাইকমিশন অচিরেই সমাধানের আশ্বাস প্রদান করে।

সম্মাননাসূচক সার্টিফিকেট প্রদান
সম্মাননাসূচক সার্টিফিকেট প্রদান

এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে থেকে হাফিজুর রহমান হাফিজকে সম্মাননা সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। যিনি তাঁর কাজের পাশাপাশি সামাজিক ও শ্রম কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখে প্রবাসী কর্মীদের বিপদে–আপদে সহায়তা প্রদান করে আসছেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) ও দূতালয় প্রধান মো. অহিদুল ইসলাম।

উপস্থিতির একাংশ
উপস্থিতির একাংশ

অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ‘নিজের অধিকার সম্পর্কে জানুন’ নামে একটি পুস্তিকা উপস্থিত প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। পুস্তিকাটি ব্রিটিশ হাইকমিশন ও মরিশাসের বিচার, মানবাধিকার ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার মন্ত্রণালয় থেকে ইংরেজিতে প্রস্তুতকৃত। হাইকমিশন তা বাংলায় প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি