ভুবনেশ্বরের বিজু পাটনায়েক

হোটেল সি প্যালেস
হোটেল সি প্যালেস

ওডিশার বিজু পাটনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরের দিন যথাসময়ে পৌঁছাল সুচরিত। বিমানবন্দরের নামকরণ হয়েছে এককালের স্বাধীনতাসংগ্রামী ও ওডিশার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজু পাটনায়েকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে। এটি চালু হয় ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ এপ্রিল। আটপৌরে চেহারা। চার কিলোমিটার আয়তন। নিরালা প্রকৃতির স্পর্শে ছিমছাম। চারপাশের সবুজ বেষ্টনীতে উদোম বাতাসের ঢেউ। মেঘলা আকাশের শরীর চুইয়ে তখনো ঝিরঝিরে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ঝরে পড়ছিল। সেসব দেখতে দেখতে তৃপ্তিতে ছুঁয়ে গেল বহ্নির ভালো লাগার অনুভব। প্রকৃতির এমন নিরাভরণ রূপের ছোঁয়া বহুবার সে পড়েছে বাংলার কবিদের বর্ণনায়।

তাদের গন্তব্যস্থল বঙ্গোপসাগরের কোল ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হোটেল সি প্যালেস। শহর পুরি থেকে সামান্য দূরে। এখানে পরপর দু-তিনটি হোটেল আধুনিক ফ্যাসিলিটি রক্ষা করে নির্মিত হয়েছে বছর কয়েক আগে। যেখানে শুয়ে-বসে সারা দিনই শোনা যায় অশ্রান্ত সাগরের ফুঁসে ওঠার গর্জন। যেন খাঁচায় বন্দী ক্রুদ্ধ সিংহীর বিদ্রোহ ঘোষণার সোচ্চার, জানিয়েছিলেন পুরি শহরের ট্যুরিস্ট কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ শতপতি। শতপতির চার পুরুষের বসবাস পুরির চক্রতীর্থ চৌরাস্তার মোড়ে। বাক্যালাপে কুশলী হওয়ায় প্রবাসী ট্যুরিস্টদের সঙ্গে নিয়মিত তাঁর যোগাযোগ। ফোনে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, একবার এসেই দেখুন না, শতপতি কী রকম ব্যবস্থা রেখেছে আপনাদের জন্য। ফি বছর বিদেশ থেকে শত শত ট্যুরিস্ট আসছেন এখানে। প্রকাশ শতপতি তাদের সব্বাইকার চেনা! সে তো আর অমনি অমনি হয়নি স্যার। সে রকম সার্ভিস পেয়েছেন বলেই তাঁরা আমায় ভরসা করেন। সুচরিত বাড়তি কথায় মন্তব্য না বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, হোটেলে আসার জন্য এয়ারপোর্টে ট্যাক্সি পাওয়া যাবে তো? নিশ্চয়ই। তার ব্যবস্থাও করে রেখেছি। বুনু মোহান্তি নামের এক ট্যাক্সি ড্রাইভার আনতে যাবে আপনাদের। তার বুকের ওপর ইংরেজিতে নাম লেখা থাকবে। দেখলেই চিনতে পারবেন। কিছুক্ষণ থেমে ফের বলেছিলেন, সেদিন ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি স্যার, উনি সাগর, সবুজ আর পাহাড় দেখতে খুব ভালোবাসেন। এখানে তার সব ব্যবস্থাই রয়েছে। ফোন নম্বর তো রইলই, আরও যা যা ভালো লাগে এসে একবার কেবল জানিয়ে দেবেন। সব হুকুম তালিম হয়ে যাবে স্যার। ট্যুরিস্টদের তৃপ্ত করাই তো আমাদের কাজ। হোটেলের স্টাফরাও দক্ষ এসব কাজে।

শতপতি কয়েক দিনের বাক্যালাপে স্পষ্ট করেছেন, ওডিশা প্রদেশের সবগুলো দর্শনীয় স্থান, গলি ঘিঞ্জির ইতিহাস তার নখদর্পণে। সুচরিত আজীবন সরাসরি সোজা পথে চলার মানুষ। কোনো অচেনা পথে সামান্যতম ঝুঁকিও নিতে রাজি নয় সে। প্রকাশজীর অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় টাকা পাঠিয়ে আগেই তাই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে রেখেছে। আকাশের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে, জমাট মেঘের স্তরগুলো অঝোর ধারায় বর্ষণ না ঝরিয়ে শান্ত হবে না আজ। বাইরের বারান্দায় অপেক্ষা করতে করতে ওরা বুনু মোহান্তির সন্ধানে প্রখর দৃষ্টি ছড়াল সবখানে। বাইরে অপেক্ষমাণ জনতার ভিড় নেই আজ। সম্ভবত বিমানবন্দরে বৃষ্টিভেজা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ বলেই জনসমাবেশ কম। সুতরাং কয়েক মিনিটের মধ্যেই বুনুকে ওরা আবিষ্কার করে ফেলল। সুচরিত বিরক্ত হয়ে বলল, বোঝো ওর বুদ্ধির বাহার! বৃষ্টিতে অত দূরে বাইরে না দাঁড়িয়ে বারান্দার কাছে এসেও তো দাঁড়াতে পারত! এত দূর থেকে নাম পড়া যায়? আহা থাক না। বুঝতে পারেনি। এইটুকু বুঝতে না পারলে ট্যাক্সি চালাচ্ছে কী করে?

বুনুর বয়স পঁচিশের কাছাকাছি। আকারে ছোট। মাথার ওপরে ছাতার বদলে লম্বা এক প্লাস্টিকের আচ্ছাদন। এমনভাবে মাথা ঢেকে দাঁড়িয়েছে যে কেবল বুকের ওপর নাম লেখা কাগজ ছাড়া অন্য কিছু চোখে পড়ে না। কাছে এসে নাম উচ্চারণ করে হাত তুলতেই বুনুর নিটোল মুখে সরল হাসির ফুলঝুরি ফুটল। তারপর কথা না বলে ট্যাক্সির কাছে এসে দাঁড়াল সে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথায় করে ট্যাক্সিতে উঠল বহ্নিরা। আর তখনই বৃষ্টি এল। সুচরিত ধরেই নিয়েছে বুনুর পক্ষে ইংরেজি, বাংলা কোনোটাই জানা সম্ভব নয়। তাই অদ্ভুত হিন্দিতে একটু পরই জিজ্ঞেস করল, বুনু, কোনো ঢাকনাটাকনা হ্যায়? একই সঙ্গে ইশারায় বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল জোর বাতাসে খোলা দরজায় বৃষ্টির ছাঁট লেগে ভিজে যাচ্ছে তাদের পরিচ্ছদ!

জবাবে অপ্রস্তুত মুখে কাঁধ ঘুরিয়ে এক ঝলক পেছনে তাকাল বুনু। বহ্নিও নিশ্চিত হলো সুচরিতের অনুমান সত্য। কেবল বাংলা, ইংরেজি নয়, বুনুর বোধ করি অদ্ভুত হিন্দিটাও বোধগম্য হয়নি। সুচরিত নিশ্চিত হয়ে মুখ খুলল ফের, দেখলে? শতপতির কাণ্ডটা দেখলে? কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বদলে এমন একখানা জাঙ্ক জিনিস পাঠিয়েছে যে ট্যাক্সি বলেই চেনা যায় না! দরজা–জানালা সব খুলে পড়ছে। ইঞ্জিনটা ঠিক আছে কি না, তাই বা কে বলতে পারে। হোটেল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলে হয়। চাপা গলায় কথা বলল বহ্নি, আঃ অত জোরে বলছ কেন? বাংলা বলতে না পারলেও বুঝতে পারছে না সে রকম তো নাও হতে পারে। পারলে পারুক। বৃষ্টির দিনে একখানা ছাতা অবধি নেই। ওর নিজের মাথাতেও প্লাস্টিকের ঢাকনা। এতটা পথ বৃষ্টি ভিজে অসুখ করলে তখন কী হবে? একে না পাঠালে ট্যাক্সি নিজেই তো জোগাড় করে নিতাম। শতপতিকে ফোন করেও ধরতে পারছি না। ফোন তুলছেই না হয়তো। কথা শেষ না হতেই বুনু রাস্তার পাশে ট্যাক্সি থামিয়ে তার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের আচ্ছাদন দিয়ে সুচরিতকে ঢেকে দিতে এল। এতক্ষণে ওদের মনে হলো হয়তো ওদের সব বক্তব্যই বুনুর বোধগম্য হয়েছে।

ট্যাক্সি উল্কাবেগে ছুটছে। বৃষ্টির ধারা কখনো প্রবল হয়ে, কখনো শিথিলতায় ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে ঝরছে। রাস্তার দুই পাশে গ্রামবাসীর ঘরবাড়ি। জলবিধৌত উঠান। গরু বাঁধার গোয়াল। কোথাও ঘন গাছাপালার আড়াল। কোথাও পানাবোঝাই ছোট–বড় জলাশয়। বৃষ্টির তোড়ে তাদের বুকের ওপর জলের খই ঝাঁকে ঝাঁকে ফুটছে। সৌন্দর্যের এমন উদোম রূপ কোনো দিন দেখিনি বহ্নি। আশ্চর্য ভালো লাগায় মুগ্ধতার প্রলেপ পড়ছে তার বুকের মধ্যে। কিন্তু কুড়ি মিনিট চলার পরই পল্লির পথে ট্যাক্সি থামাল বুনু। সুচরিত সংশয় নিয়ে স্ত্রীর মুখে তাকাল, ইঞ্জিনটাও এবার গেল তাহলে। বুনু মুখ খুলল পেছনে তাকিয়ে, স্যার ডাব এনে দিই? এখানকার ডাব খেতে খুব টেষ্টি। বুনুর বক্তব্য শুনে বিস্ময়ের আকুতিতে সুচরিত প্রথমেই স্ত্রীর মুখে তাকাল। ছেলেটা স্পষ্ট উচ্চারণে বাংলায় কথা বলছে। বহ্নি হেসে জিজ্ঞেস করল, তুমি বাঙালি? না ম্যাডাম। তবে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি তিনটেই বলতে পারি অনায়াসে। শতপতি স্যারের সঙ্গে ছেলেবেলা থেকেই আছি কিনা। সবটাই তাই শেখা হয়ে গেল। ডাব খাবেন তো? হ্যাঁ নিশ্চয়ই। তোমার জন্যও এনো। সঙ্গে স্ট্র।

পথের অদূরে ঢালু জায়গায় একটি ছোট্ট কুটির। সামনেই পলিথিনের নিচে ডাবের স্তূপ। একজন বৃদ্ধ অপেক্ষা করছেন খরিদ্দারের জন্য। কয়েক মিনিটেই বৃষ্টিভেজা কাক হয়ে ফিরে এল বুনু। বহ্নির মাতৃহৃদয়ে কষ্টের প্রলেপ পড়ছিল অনেক সময় ধরে। বলল, প্লাস্টিকের ঢাকনাটা মাথায় দিয়ে গেলে না কেন? অনেকবার ভিজেছ আজ। যদি অসুখ করে! বুনু ডাবের জল খেতে শুরু করেছিল। কৃতজ্ঞতায় হাসল লজ্জিতভাবে, অসুবিধা নেই ম্যাডাম। আমার অভ্যাস আছে। সুচরিত বলল, আমার এতে অ্যালার্জি। একটুখানি গায়ে পড়লেই...। বুনু বিজ্ঞের মতো তাকাল, জানি স্যার। গত বছর অস্ট্রেলিয়া থেকে মিস্টার স্টিফেন এসেছিলেন। তখনো বৃষ্টি হতেই সাহেবের স্ত্রী বলেছিলেন, সাবধান বুনু, স্যারের গায়ে যেন বৃষ্টি না লাগে। এতে ওর বড় অসুখ হয়। হোটেলে ওঠার আগেই আমাকে দিয়ে এক জোড়া ছাতা কিনিয়েছিলেন। বেশ তো, তাহলে আমাদের জন্যও এক জোড়া ছাতা কিনে নাও। ঠিক আছে স্যার। পুরি শহরে আমার চেনা দোকান আছে। আপনাদের হোটেলে নামিয়ে কিনে দিয়ে আসব। প্রায় এসে গিয়েছি আমরা। ট্যাক্সি আরও খানিকটা চলার পর বৃষ্টি আর বাতাস থিতিয়ে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্যের আলোয় ভরে উঠল চারপাশ। বুনুর সঙ্গে স্যারের আলাপচারিতা জমে উঠেছে বেশ। বুনু প্রস্তাব রেখেছে, কাল সূর্যমন্দিরে আমিই আপনাদের নিয়ে যাব। ঠিক আছে। তাহলে কাল সকাল নয়টায় চলে এসো হোটেলে। আমরা অপেক্ষা করব। আপাতত সুচরিতের মনের ওয়েদার ফোরকাস্ট চমৎকার। বুনুর জাঙ্ক ট্যাক্সির জন্য আর কোনো বিরাগ নেই অন্তরে।

পুরি শহরে প্রবেশ করতেই নিরালা পথে হঠাৎই বছর ত্রিশের একজন মানুষ হাত উঁচিয়ে ট্যাক্সি থামাল। আকার-প্রকারে বুনুর দেড় গুণ সে। রাস্তার পাশে ঝকঝকে ট্যাক্সির গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েছিল এতক্ষণ। বুনু কথা না বলে দ্রুত ট্যাক্সি ছেড়ে চলে গেল। আর যেতেই তীব্র বচসা শুরু হলো দুজনের মধ্যে। তাদের আঞ্চলিক ভাষার দ্রুত কথন ওদের বোধগম্য হলো না। কিন্তু স্পষ্ট বুঝতে পারল, কোনো একটা বিষয় নিয়ে তীব্র বিরোধিতা চলছে। সুচরিতের মুখ অপ্রসন্ন হলো, এই শতপতি মানুষটা পদে পদে বিপত্তি ঘটাবে দেখছি। হোটেলে গিয়ে আজ আর লাঞ্চ খাওয়া হবে না। বহ্নি বলল, তাহলে বাইরে খেয়ে নেব। পেটে সহ্য হবে? মিনিট দুই পরে দ্বন্দ্বযুদ্ধ শেষ করে বুনু মুখ লাল করে ফিরে এল। সুচরিত বিরক্তভাবে জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার বুনু? হঠাৎ ট্যাক্সি থামিয়ে...! সে উত্তর দেওয়ার আগেই অচেনা মানুষ কাছে এল। যেন কিছুই হয়নি এমনিভাবে হেসে ইংরেজিতে বলল, হোটেল সি প্যালেসে আমিই পৌঁছে দেব স্যার। আমার ট্যাক্সিতে উঠুন। বলে কিছু সমঝে ওঠার আগেই সব লাগেজগুলো নিজের ট্যাক্সিতে তুলে নিল। সুচরিত লাফিয়ে নামল ট্যাক্সি থেকে, একদমই না। আগে ব্যাপারটা আমাকে বুঝতে দাও। হঠাৎ ট্যাক্সি বদল কেন? পরিস্থিতি বিবেচনা করে বুনু মুখ খুলল এতক্ষণে, অসুবিধা নেই স্যার। এ–ও শতপতি স্যারের লোক। নাম বলরাম।

হোটেল সি প্যালেসে চেক ইন করে রুমে পৌঁছাতে তিনটে বেজে গেল। ভাগ্য ভালো সময় পেরোলেও দুপুরের খাবার ঘরে বসে পাওয়া যাবে, জানিয়ে দিল ম্যানেজার কাম অভ্যর্থনাকারী দীনকৃষ্ণ মিশ্র। দীনকৃষ্ণকে দেখে বহ্নির বড় ভালো লেগেছে। অমায়িক ছেলে। মুখে সর্বদাই প্রফুল্ল হাসি। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তার।

পোশাক বদলে হাত–মুখ ধুয়ে ফ্রেশ না হতেই নক পড়ল দরজায়। খুলতেই কিশোর কণ্ঠের আওয়াজ এল। হিন্দিতে জানতে চাইল, খাবার এনেছি। আসব ভেতরে? বহ্নি ওয়াশরুম থেকে শুনতে পেল সুচরিত ইংরেজিতে বলছে, এসো। টেবিলের ওপর রেখে যাও। আর আমাদের জন্য কিছু জলের বোতল কিনে দিয়ে যাও প্লিজ। কতক্ষণ লাগবে? বেশি সময় নয় স্যার? এই তো সামনেই দোকান। আচ্ছা তাহলে টাকাটা নিয়ে যাও। ভালো জল এনো কিন্তু। হ্যাঁ ভালো জলই আনব। মিনিট দশেক পরেই ফিরে এল সে। বোতলগুলো রেখে টাকা ফিরিয়ে দিতে সুচরিত বলল, ফেরত দিতে হবে না। ওটা তোমার। কিন্তু এ তো অনেক স্যার। আমার রেট ১০ রুপি। তা হোক। আজকের মতো নিয়ে নাও। ছেলেটি কী ভাবল কে জানে। মুহূর্তের জন্য মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থেকে ভারি কোমল স্বরে বলল, আপনার যখন যা দরকার হবে আমায় বলবেন। ততক্ষণে ওয়াশরুম ছেড়ে বাইরে এসেছে বহ্নি। দেখল বারো–তেরো বছরের একবারেই একটি বাচ্চা ছেলে। দেখেই জিজ্ঞেস করল, কী নাম তোমার? পলকের জন্য সে চোখ ফেলল বহ্নির মুখে। পরক্ষণেই দৃষ্টি নামিয়ে নরম স্বরে জবাব দিল, আজ্ঞে, চৈতন পট্টাসনি। বলেই স্যারের মুখে আরেকবার কৃতজ্ঞতার দৃষ্টি ছুড়েই আর দাঁড়াল না। বহ্নি ওর মনের ভাষা অক্ষরে অক্ষরে পড়ে নিল। বুঝল, তার কচি মনের পরতে পরতে কৃতজ্ঞতার উতরোল জেগেছে। মুখের চেহারাজুড়ে তাই এমন অন্তরের আলোড়ন। (চলবে)

ধারাবাহিক এ ভ্রমণ কাহিনির আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: