বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে নেপলসে সেমিনার

বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে নেপলসে সেমিনার
বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে নেপলসে সেমিনার

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশ বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশে রয়েছে স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা, উৎপাদিত পণ্যের বিশাল বাজার ও উৎপাদনের জন্য নিম্ন শ্রমমজুরি। সর্বোপরি সরকারের পক্ষ থেকে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ প্রণোদনা প্যাকেজ। ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকর্ষণের জন্য আয়োজিত এক সেমিনারে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র, বিনিয়োগের পরিবেশ, বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরার লক্ষ্যে ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস নেপলস চেম্বার ভবনে গত শুক্রবার (৩১ মে) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার। নেপসল চেম্বার অব কমার্সের নেতারাসহ কাম্পানিয়া অঞ্চলের প্রায় ৩০ জন ইতালিয়ান ব্যবসায়ী এতে অংশ নেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন নেপসল চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাব্রিজিও লুওঙ্গ। স্বাগত বক্তব্য দেন নেপলসের বাংলাদেশ অনারারি কনসাল জেনারেল ফিওরেল্লা ব্রেগলিয়া।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে নেপলসে সেমিনার
বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে নেপলসে সেমিনার

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ সম্পর্কে এবং বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিত্র ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে একটি চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দেশের এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। এ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে তিনি দেশটির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান।

সেমিনারে ইকোনমিক কাউন্সেলর মানস মিত্র ‘বাংলাদেশ: ডেস্টিনেশন নেক্সট’ শিরোনামে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। এর শুরুতে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। এরপর বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থান ও ইতালির সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করেন।

প্রেজেন্টেশনে হাইটেক পার্ক ও নির্ধারিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বরাদ্দ নিয়ে বিনিয়োগ করার সুযোগসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র তুলে ধরা হয়। বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র হিসেবে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সিরামিকস, নবায়নযোগ্য শক্তি, ব্ল-ইকোনমি ও ট্যুরিজম বিষয়ে বিস্তারিত তুলা ধরা হয়।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা

প্রেজেন্টেশনের পর প্রশ্নোত্তর ও মুক্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল আগ্রহ ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রশ্নোত্তর ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন উপস্থিত ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা দূতাবাসের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ ধরনের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত ও ইকোনমিক কাউন্সেলর ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রাজীব ত্রিপুরা আগত অতিথিদের দূতাবাসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে, বিশেষ করে মিলান, ভেনিস, ফ্লোরেন্স, নেপলস, জেনোয়া, পালেরমো ও কাতানিয়া শহরে এ ধরনের সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। গত ১৭ মে ফ্লোরেন্সে এ ধরনের একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি