গুয়াঞ্জুতে আন্তর্জাতিক ঈদ উৎসব

গুয়াংজুতে আন্তর্জাতিক ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
গুয়াংজুতে আন্তর্জাতিক ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

দক্ষিণ কোরিয়া মুসলিম কমিউনিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশটিতে এ বছর ৫ জুন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপিত হয়েছে। গুয়াঞ্জু তথা দেশটির প্রবাসী মুসলিমদের জন্য দিনটি ছিল সবচেয়ে আনন্দের দিন। দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উদ্‌যাপিত হয় ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের জামাতে একসঙ্গে শরিক হন গুয়াঞ্জু শহরে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ অন্য দেশের মুসলিম শিক্ষার্থী। সবাই একসঙ্গে দাঁড়িয়ে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় এবং নামাজের পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

দেশটিতে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য কোনো সরকারি ছুটি থাকে না। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববার (৯ জুন) বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গুয়াঞ্জুর উদ্যোগে শহরের কেন্দ্রবিন্দু চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আয়োজন করা হয় এক আন্তর্জাতিক ঈদ পুনর্মিলনী তথা ঈদ উৎসব। এ আয়োজনে সহযোগিতা করে গুয়াঞ্জু মুসলিম কালচারাল কমিউনিটি ও গুয়াঞ্জু ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গুয়াঞ্জুর নেতৃত্বে ২০১৮ সালে গঠিত হয়েছে গুয়াঞ্জু মুসলিম কালচারাল কমিউনিটি।

ঈদ উৎসবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, মিসরসহ বিভিন্ন দেশের মুসলিম শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া ভিন্নধর্মাবলম্বীর কিছু মানুষও এতে অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁরাও মেতে ওঠেন ঈদ আনন্দে।

গুয়াংজুতে আন্তর্জাতিক ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
গুয়াংজুতে আন্তর্জাতিক ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পোস্ট ডক ড. মুসফিকুর রাহমান। সার্বিক সহায়তায় ছিলেন চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ছাত্র ড. সৌমিত্র কুমার কুণ্ডু। উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিভার্সাল কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মুকুল বসু।

বিকেল চারটায় ড. মুসফিকুর রাহমানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয়। সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতেই বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে পরিবেশন করা হয় সমবেত গান ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’। সাংস্কৃতিক পর্বে রাখা হয় দর্শকপর্ব ও ফ্যাশন শো। ফ্যাশন শোর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। বিভিন্ন দেশের অনেকেই অনুষ্ঠানে গান ও কবিতা পরিবেশন করেন। এভাবেই এক এক করে সাংস্কৃতিক পর্বগুলো চলতে থাকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।

এরপর শুরু হয় খাবারদাবারের পর্ব। বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার উপস্থাপন করে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খাবার ছিল আফগানি কাবুলি পোলাও, পাকিস্তানি চানা চাট, মাটন বিরিয়ানি, বাংলাদেশের কাচ্চি বিরিয়ানি, পাকিস্তানি হালুয়া, বাংলাদেশি লাচ্ছি, পায়েস, কাজাখস্তানের সবজি ভাজিসহ অনেক কিছু।

রাত আটটায় মুকুল বসু ও ড. মুসফিকুর রাহমানের সমাপনী বক্তব্য ও সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির ইতি টানা হয়।