প্রযুক্তির দাসত্ব নয়

সভ্যতার শুরু থেকেই আমরা পুরানকে ভেঙে নতুন ও আধুনিকের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। পরে প্রযুক্তি এসেছে। দিন দিন প্রযুক্তি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রয়োজনের বাইরে বিলাসিতাতেও মানুষ প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে কোনো শেষ নেই যেন। বলা যায়, বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি নিয়ে মানুষে-মানুষে, দেশে-দেশে একপ্রকার প্রতিযোগিতা চলছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের উন্নয়নের মাপকাঠি এখন প্রযুক্তিনির্ভর। যে দেশ প্রযুক্তিতে যতটা এগিয়ে ওই দেশ উন্নয়নে ততটা ওপরের সারিতে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পক্ষের একজন মানুষ আমি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেমন বিশ্বাস করি; দৈনন্দিন প্রয়োজনেও তা ব্যবহার করি। এমনকি উপভোগও করি বিজ্ঞানকেন্দ্রিক নতুন নতুন আবিষ্কার। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার আমার কাছে একপ্রকার আশীর্বাদস্বরূপ। বিজ্ঞান যেমন বিশ্বকে ছোট করে দিয়েছে, ঠিক তেমনি প্রযুক্তি বিশ্বকে মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ স্মার্টফোন। স্মার্টফোনে সবই আছে, কথোপকথনের জন্য ফোন, ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, ক্যামেরা, ক্যালেন্ডার, অডিও রেকর্ডিং, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারের সুবিধা। স্মার্টফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষদের খুব কাছ থেকে দেখার সুবিধা পর্যন্ত আছে। এ তো গেল স্মার্টফোনের কথা মাত্র। বিভিন্ন সফটওয়্যারের বদৌলতে আরও এক ধাপ এগিয়ে আছে কম্পিউটার। এরপরও তৈরি হয়েছে রোবট। দিন দিন রোবটগুলো এত তথ্যবাহী হচ্ছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, একদিন রোবটই রোবট তৈরি করবে এবং আমরা ডাইনোসরের মতো বিলুপ্ত হয়ে যাব। তখন ওই রোবটগুলোর কোনো একটি রোবট মানুষকে তাদের ঈশ্বর (সৃষ্টিকর্তা) হিসেবে তুলে ধরবে।

অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, আমার এমন ব্যক্তিগত মতামত হওয়ার কারণ কী?

কারণটাও বিজ্ঞান। বস্তুর ভর, গতি ও বলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে স্যার আইজ্যাক নিউটনের তিনটি সূত্র আছে, যা নিউটনের গতি সূত্র নামে পরিচিত। ওই সূত্রগুলোর তৃতীয় সূত্রটি হচ্ছে, প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই তৃতীয় সূত্রটি বস্তুর ভর, গতি ও বলের বাইরেও যেকোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

যেমন ভালোবাসা। ভালোবাসা কিন্তু কোনো বস্তু নয়। ভালোবাসা একপ্রকার আবেগ কিংবা অনুভব। ভালোবাসার ক্ষেত্রে মানুষ পরস্পর পরস্পরকে যতটা ভালোবাসে, কোনো জানা কিংবা অজানা কারণে ভালোবাসায় কঠিন ব্রেক কষতে হলে কিংবা কোনো দুর্ঘটনায় ভালোবাসায় ফাটল ধরলে, তখন তা হ্রাস পেয়ে পেয়ে এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে তারা পূর্বে পরস্পর পরস্পরকে যতটা ভালোবাসত, দুর্ঘটনার পর ঠিক ততটাই অবহেলা করে কিংবা এড়িয়ে চলে। তা ছাড়া ওষুধ যেমন ব্যাধি সারায়, ঠিক ওই ওষুধই আবার শরীরের অন্য কোনো ক্ষতি করে। তাই ওষুধের প্যাকেটে লেখা থাকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপসর্গগুলো। আবার ধূমপান মানুষের অন্তর ব্যথা কিছু সময়ের জন্য হলেও উপশম করে, কিন্তু চিরতরে ধ্বংস করে দেয় ফুসফুস।

এখন ফিরে আসা যাক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শত শত আশীর্বাদের বিপরীত প্রতিক্রিয়াগুলো কী এবং কেন এগুলো নিরীহ মানুষদের ভাবায়?

এক. হাতের লেখা খারাপ বলে কম্পিউটারের বোতাম টিপে লিখতে খুব ভালো লেগেছিল আমার প্রথম প্রথম। কম্পিউটারে লিখতে জেনে নিজেকে আধুনিকও মনে হয়েছিল বেশ। তবে এখন যখন কোনো কিছু হাতে লিখতে হয় এবং স্পষ্ট দেখতে পাই হাতের লেখা আগের তুলনায় আরও খারাপ হয়েছে, তখন নিজেকে তিরস্কার করি। অনুশোচনা করি কম্পিউটারে টাইপের পাশাপাশি হাতের লেখার অনুশীলন না করার জন্য।

দুই. একটা সময় আমরা আঙুলের কর গুনে এবং মাথায় মাথায় যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করে হিসাব মিলিয়ে ফেলতাম অনেক বড় বড় অঙ্ক কিংবা দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর। সুর করে নামতা মুখস্থ করতাম। ক্লাসের অঙ্ক পরীক্ষায় ভালো নম্বরও পেতাম। এখন সামান্য গ্রোসারির হিসাব মেলাতেও লাগে ফোনের ক্যালকুলেটর। নতুন প্রজন্মের সন্তানদের সামনে যদি কখনো মনের ভুলেও মাথায় মাথায় হিসাব করতে বসেছি, তো হয়েছে। তারা দ্রুত সেলফোনের ক্যালকুলেটরে নম্বর চাপতে চাপতে একগাদা উপদেশও দিয়ে থাকে। এই যেমন মানুষ লেখাপড়া শিখে ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেছে ব্যবহারের জন্য। হাতের কাছে ক্যালকুলেটরের সুব্যবস্থা থাকতে হিসাব মেলানোর কাজে খামোখা মাথা ব্যবহার করার দরকার হয় কেন? তারা বুঝতে চায় না, এটা একপ্রকার অনুশীলন। শরীর ভালো রাখতে যেমন নিয়মিত ব্যায়াম প্রয়োজন, মানুষের মেধা সচল রাখতেও ঠিক তেমন মেধার ব্যায়াম প্রয়োজন।

তিন. আধুনিক ল্যান্ডফোন ও স্মার্টফোনগুলো আমাদের একপ্রকার জড়ো পদার্থে পরিণত করছে দিন দিন। ফোনগুলোতে সেভ করে রাখা যায় অসংখ্য ফোন নম্বর, ই–মেইলের ঠিকানা, বাড়ি ও কাজের ঠিকানা ইত্যাদি। দুই দশক আগেও টেলিফোন নম্বরগুলো থাকত মানুষের মনের পাতায় লেখা। সবাই মনে রাখার চেষ্টা করত তুলনামূলকভাবে বেশি ব্যবহৃত নম্বরগুলো। তা ছাড়া প্রয়োজনীয় নম্বর লিখে রাখা হতো ডায়েরি কিংবা পকেট নোটবুকে। বর্তমানে নম্বরগুলো স্মার্টফোন কিংবা ল্যান্ডফোনে সেভ করে রাখা হয় বলে আমরা অনেকেই আর মনে রাখি না নিজের বাসার ফোন নম্বর কিংবা সন্তান ও প্রিয় ব্যক্তির ফোন নম্বরও। এমনকি নম্বরগুলো ডায়েরিতেও লিখে রাখা হয় না আর। এভাবে আমরা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি দিন দিন। কোনো কারণে ফোন নষ্ট হয়ে গেলে, ব্যাটারির আয়ু শেষ হয়ে গেলে কিংবা ফোন হারিয়ে গেলে, কিছু সময়ের জন্য হলেও আমরা জরুরি প্রয়োজনেও পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হই।

এগুলো তো ছোট ছোট কতিপয় নেতিবাচক বিষয়, যা আমরা ইচ্ছে করলেই এড়িয়ে চলতে পারি। বেরিয়ে আসতে পারি প্রযুক্তির দাসত্ব থেকে। তবে খুব বড় আকারে এবং ভয়াবহ রূপ নিয়ে আসছে অন্যান্য যে বিষয়গুলো:

এক. অনেক দিন ওয়াইফাইয়ের বিকিরণ মানবদেহে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জল্পপনাকল্পনা হয়ে থাকলেও বিষয়টি বর্তমানে প্রশ্নাতীত। বলা হয়, ওয়াইফাই বিকিরণ মানবদেহে তেমন কোনো ক্ষতি করে না। যাক বাঁচা গেল। তবে ওয়াইফাই মানবদেহে ক্ষতি না করলেও ক্ষতি করে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে সারাক্ষণ স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে মানুষের চোখের, মনের ও মেরুদণ্ডের। স্মার্টফোনে ব্রাউজিং করতে করতে অনেকের হাতের কবজায় নানা সমস্যা দেখা দেয়। যত্রতত্র ওয়াইফাই থাকায় মানুষ সামাজিকতা ভুলে পারস্পরিক নান্দনিক আলাপচারিতা রেখে ওয়াইফাই ব্যবহার করে নিজের আরামদায়ক জগতে থাকতে ভালোবাসে। প্রযুক্তির যুগে এসে পরিবারে সদস্যদের মধ্যেও বাড়ছে দূরত্ব। ২০১৪ সালের যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণায় দেখা গেছে, গভীর রাতে বেডরুমে স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি করছে। গবেষণাটি ২৪ হাজার ইউরোপিয়ান দম্পতিকে নিয়ে করা হয়েছিল।

দুই. কয়েক বছর যাবৎ আমেরিকার বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, যে টিন এজাররা এখন আর আগের মতো বই পড়ে না। এর মূল কারণ হিসেবে প্রতিবারই স্মার্টফোন ও প্রযুক্তির কথা উঠে এসেছে। বই না পড়া এই পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত যেমন অভিভাবকেরা, তেমনি সুধীসমাজও। পাশাপাশি বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, সমাজে অসুখী মানুষের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এর মূল কারণও প্রযুক্তির অন্যতম সৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম) ব্যবহার।

তিন. প্রযুক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় ছোট–বড় সব আকারের অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজ যেমন সহজ হয়েছে, ঠিক পাশাপাশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহক সেবার মান হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। সে তুলনায় সেবা ও পণ্যের মূল্য হ্রাস পায়নি একটুও; বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গ্রাহক সাধারণ প্রতারিত হচ্ছেন প্রায়ই। যেমন এয়ারপোর্ট, ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মতো খুব দরকারি স্থানে কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে সেলফসার্ভিস বুথ খোলা হয়েছে। এর অর্থ এই দাঁড়ায়, গ্রাহকেরা নিজের কাজ নিজে করে নিন; মূল্য ঠিকঠাক স্থানে রেখে যান। যার ফলে বেকারের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বল্প শিক্ষিত তরুণসমাজ পড়াশোনা শেষে চাকরি না পেয়ে বেকারত্বের অভিশাপ মাথায় নিয়ে অসামাজিক ও অন্যায় কাজের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে।

এ ছাড়া যেকোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কাজগুলো পূর্বে অফিসেই করা হতো। অফিসগুলোতে নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা হতো। ব্যবসার আকার ও ধরন অনুযায়ী লোক নিয়োগ করা হতো। মোটকথা, পেশাদারি ছিল প্রায় প্রতিটি পদে পদে। কিন্তু টেকনোলজির সদ্ব্যবহার করতে কর্মচারীদের বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া হয় আজকাল। পেশাজীবীরা সুযোগ পেয়ে খুশি মনে বাড়িতে অফিসের কাজের পাশাপাশি বেবিসিটিং, ঘর–সংসারের কাজও করে থাকেন। সাধারণ দৃষ্টিতে দেখা যায়, একজন মানুষের মনোযোগ যখন একাধিক বিষয়ে ছড়িয়ে থাকে তখন কোনো কাজই শতভাগ নিখুঁত হয় না। আবার ছোট ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষ প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে তাদের খরচ কমাতে একজন সেক্রেটারি নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না আর। তাঁরা একটি স্মার্টফোন হাতে নিয়ে স্মার্টফোনের মতো সব কাজ একার অধীনে রাখতে চান; সংসার, বাজার, অফিস, সব একত্রে একাই করতে চান যেন।

ইদানীং অনেক অফিসের ফোন নম্বরে ফোন করলে যিনি ফোন ধরেন তিনি হয়তো অফিসের নম্বর নিজের সেলফোনে ফরওয়ার্ড করে সশরীরে থাকেন কাঁচাবাজার কিংবা ট্রাফিকে রাস্তা পারাপারের মতো অন্য কোনো কাজে মনোযোগী। সুতরাং তখন তার কথোপকথনে পেশাদারিটা শতভাগ থাকে না আর। গ্রাহক যিনি ফোন করেন, তিনি পারিপার্শ্বিক শব্দে কথা ভালো করে শুনতে পান না। কোনো জরুরি ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁরা গ্রাহক সেবা থেকে বঞ্চিত হন। একপ্রকার প্রতারিতই হন গ্রাহকেরা। অন্যদিকে চাকরি হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষেরা। যাঁরা সামান্য চাকরির উপার্জনে চালাতেন পুরো একটা পরিবার।

চার. উন্নত বিশ্বের কর্মসংস্থানগুলোতে মানুষের কর্মক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা তুলনা করা হয় কম্পিউটার ও মেশিনের উৎপাদনশীলতার সঙ্গে। অতঃপর মানুষদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে চাপ দেওয়া হয় বিভিন্নভাবে। মানুষ কাজ হারানোর ভয়ে মেশিনের মতো চলতে শুরু করে। তখন লোপ পায় মানুষের পরস্পর পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও অনুভূতিগুলো। নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তিগত বিদ্যাশিক্ষায় এগিয়ে চলছে। কিন্তু তাদেরই বাবা-মা, অভিভাবক কিংবা মাঝামাঝি প্রজন্মের মানুষেরা সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে। বলা যায়, প্রযুক্তির উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে তারা অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। সে ক্ষেত্রে তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করে প্রযুক্তিবিহীন কিংবা স্বল্প প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানগুলোতে। যেমন শপিং মল, রেস্তোরাঁ কিংবা শারীরিক পরিশ্রম প্রয়োজন এমন কোনো স্থানে। সেখানেও ব্যবসায়ীরা খরচ কমাতে একটি মেশিন বসিয়ে একাধিক কর্মচারী বরখাস্ত করছেন। যার ফলে ডমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবার ও সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণে মানুষ এখন বিষণ্নতায় ভোগে অহরহ।

প্রযুক্তির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখানে তুলে ধরা হয়েছে বলে প্রযুক্তিকে অবহেলা করার মতো কিছু ঘটেনি। বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কীভাবে এড়িয়ে চলা যায় কিংবা ওগুলো থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে বের করাই এই লেখার প্রধান উদ্দেশ্য। আমরা যেন ভুলে না যাই, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বলেই আমরা আজ এত আধুনিক ও নিরাপদ বিশ্বে বসবাস করতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্ব আমাদের কাছে এত ছোট হয়ে এসেছে। বিভিন্ন মরণব্যাধির চিকিৎসা হচ্ছে। প্রযুক্তিকে যদি কেবল প্রয়োজন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, তবে আমরা উপকৃত হব অধিকতর। মোটকথা, প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিমিতিবোধ জাগ্রত করা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে এখন। প্রযুক্তির দাসত্ব নয়, মানুষের সহজ-সরল জীবনধারা অধিক আকর্ষণীয় হয়ে উঠুক।