আমেরিকায় এসে প্রথম সমুদ্র দর্শন

কলম্বিয়া রিভার জর্জের সিনিক ভিউতে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা
কলম্বিয়া রিভার জর্জের সিনিক ভিউতে লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা

‘Twenty years from now you will be more disappointed by the things you didn’t do than by the ones you did do.’— Mark Twain

ছোটবেলা থেকেই শুনেছিলাম বাঙালিরা নাকি ঘরকুনো। কিন্তু যত বড় হয়েছি, নিজের পরিমণ্ডল থেকে বাইরে বের হয়েছি। ততই বুঝেছি কথাটা ষোলো আনাই মিথ্যা। আমরা ছা-পোষা কামলা প্রজাতির ছাত্রছাত্রীরা ছুটি পেলেই ছোট-বড় ট্যুর প্ল্যান করে ফেলি। ঘোরাঘুরি যেন আমাদের কাছে নেশার মতো।

এখানে প্রতি সেমিস্টারে সাত দিনের একটা লম্বা ছুটি থাকে। কিন্তু যেহেতু আমাদের প্রধান কাজ রিসার্চ, তাই ছুটি থাকলেও ল্যাবে বা ডিপার্টমেন্টে যেতে হয়। রিসার্চ-মিটিং সবই করতে হয়। গত স্প্রিংয়ের ছুটিতে তাই সবাই মিলে তিন দিনের (শনি, রোব ও সোমবার) প্যাসিফিক ওশান, অরিগন কোস্ট ট্যুর প্ল্যান করে ফেললাম। আমাদের ইচ্ছা ছিল ছুটি শুরুর আগেই আমরা বয়েসিতে থাকব।

ট্যুরে যাত্রী আমরা সাতজন। আমি, মৌ, রাফি আপু, রকিব ভাইয়া, রিদফান (ট্যুরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বয়স এক বছর), রিফাত ভাইয়া ও অর্পা। এক সপ্তাহ আগেই কার বুকিং, হোটেল বুকিং করা হয়ে গিয়েছিল। আমেরিকায় এসে প্রথম সমুদ্র দর্শন। তার ওপর আবার রাফি আপুর পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিক হয়েছিল, আমাদের সমুদ্র দর্শন হবে শাড়ি পরে। ভাবা যায়? সবাই খুব উত্তেজিত ছিলাম এটা নিয়ে।

প্যাসিফিক সাগরে
প্যাসিফিক সাগরে

শনিবার সকালে সবকিছু নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম প্রথম সমুদ্র দর্শনে। সকালের নাশতা ছিল রাফি আপুর নিজের হাতে বানানো সুস্বাদু স্যান্ডউইচ। দুই পাশে পাহাড় আর গাছকে পেছনে ফেলে আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে নিজের গন্তব্যে। যেকোনো ট্যুর গান আর আড্ডা ছাড়া কেমন যেন পানসে লাগে। গান, আড্ডা, নিজেদের জীবনদর্শন আর একটু একটু করে পেছনে ফেলে আসা অপরূপ প্রকৃতি, যার মধ্যে ছিল পাহাড়, লেক, সারি সারি সবুজ গাছ—সব মিলিয়ে এক গভীর আত্মোপলব্ধি এনে দিচ্ছিল।

বারবার বলতে ইচ্ছা হচ্ছিল, ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হারিয়ে মোরে আরও আরও দাও প্রাণ’। এরপর আমরা পৌঁছালাম কলম্বিয়া রিভার জর্জে। এটি আমেরিকার বৃহত্তম জাতীয় সিনিক ভিউ হিসেবে পরিচিত। কলম্বিয়া রিভার ৮০ মাইল প্রশস্ত ক্যানিয়ন এবং ১২৪৩ মাইল দীর্ঘ নদী, যা ওরেগন ও ওয়াশিংটন রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত। এই রুটে ছয়টি জলপ্রপাত আছে, যার মধ্যে বিশ্বের বিখ্যাত আইকনমিক মাল্টনোমাহ ফল অন্যতম।

এখানকার ভূতাত্ত্বিক উত্সগুলো লাখ লাখ বছর আগের। প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রীদের অন্তত ১০ হাজার বছর আগে স্থানীয় আমেরিকানরা এখানে বসতি স্থাপন করেছিল। এখানে মৌর রান্না করা অসাধারণ খিচুড়ি আর অর্পার রান্না করা মজাদার চিকেন দিয়ে লাঞ্চ সেরে অপরূপ প্রকৃতির সঙ্গে কিছু অসাধারণ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে রওনা দিলাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্য বিশ্বের বিখ্যাত মাল্টনোমাহ ফলে।

প্রশান্ত মহাসাগর
প্রশান্ত মহাসাগর

জলপ্রপাতটিতে ৬২০ ফুট উচ্চতা থেকে পানি পড়ে। প্রতিবছর এখানে দুই মিলিয়ন দর্শনার্থী আসেন। মাল্টনোমাহ ফল অনেক কারণে বিখ্যাত। এর মধ্যে অন্যতম হলো এর ভূতাত্ত্বিক দিক। মাল্টনোমা ফলসের প্রধান উৎস বৃষ্টিপাত। কিন্তু লার্চ মাউন্টেন থেকে বরফ গলে এবং ভূগর্ভস্থ স্প্রিংসের মাধ্যমে পানি আসে এখানে।

আপনি যদি ভালোভাবে খেয়াল করেন, তবে ‘ইয়সিমা ব্যাসাল্টের পাঁচটি প্রবাহ' শিলা ও শিলাবৃষ্টি মুখ দেখতে পাবেন। ডিজাইন এখানে আরেকটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য। আইকনমিক, পোস্টকার্ড—বিখ্যাত বেনসন সেতুটি (১৯১৪ সালে ইতালীয় পাথর দিয়ে নির্মিত)। সাইমন বেনসন নামে পরিচিত একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর নামে নামকরণ করা হয়, যিনি সেই সময়ের ফলসটির মালিক ছিলেন। কিছু কিছু সৌন্দর্য কালির আঁচড়ে বন্দী করা যায় না। তারপরও মন বলতে চায়—

‘এই সুন্দরে মুগ্ধ আমি করছি বয়ান এসে-
একবার হলেও যেও তুমি সুন্দরের এই দেশে।’

এখানে গিফট শপ থেকে সবাই স্যুভেনির কিনলাম। এরপরে আরও দুটি ফলস-Horsetail Falls ও Latourell Falls দেখে একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে রওনা দিলাম আমাদের হোটেলের উদ্দেশে। পথিমধ্যে একটি ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে ভরপেট রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। হাজার হোক, কথায় বলে ‘পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা’। রাতে হোটেলে ফিরে সাওয়ার নিয়ে, কফি খেয়ে গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টের পেলাম না। ঘুমের রাজ্যে ডোবার সঙ্গে সঙ্গে সফলভাবে শেষ হলো আমাদের তিন দিনের ট্যুরের প্রথম দিন।

পরদিন ঘুম থেকে উঠে হোটেলেই নাশতা করে আমরা মেয়েরা শাড়ি পরে তৈরি হলাম সমুদ্র দর্শনে। যদিও সময়টা মার্চ। তারপরও অনেক জায়গায় স্নো ফলের কারণে বরফ জমে থাকতে দেখতে পাওয়া যায়। আমরাও বরফ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। বরফের মধ্যে শাড়ি পরে ছবি তোলার আর বরফ উড়িয়ে স্লোমো করার ইচ্ছা অনেক দিনের। ব্যস, সুযোগ পেয়ে এই ইচ্ছাও পূরণ করে ফেললাম। তারপর দুপুরেই চলে গেলাম ক্যানন সি বিচে।

বরফের মাঝে শাড়ি পরে
বরফের মাঝে শাড়ি পরে

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের করা বিশ্বের ১০০টি সবচেয়ে সুন্দর জায়গার মধ্যে এটি একটি। ‘টোয়াইলাইট’ মুভির যে অংশে বেলা তার বন্ধুদের সঙ্গে সার্ফিংয়ে যায় এবং অ্যাডওয়ার্ড সম্পর্কে সত্যতা জানতে পারে, সেই অংশের শুটিংটা এখানেই হয়েছিল। এ ছাড়া, ১৯৯১ সালের পয়েন্ট ব্রেক মুভিরও কিছু অংশের শুটিং এখানে হয়েছিল।

২৩৫ ফুট উচ্চতার হেস্টস্ট রক বিশ্বের সর্বাধিক ফটোগ্রাফড পাথরগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ‘এক প্রস্তর স্তম্ভ’ এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বৃহত্তম স্ট্যাকগুলোর মধ্যে একটি। শাড়ি পরে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলতে তুলতে কখন যে বিকেল হয়ে গিয়েছিল, বুঝতেই পারিনি।

ভ্রমণ পৃথিবীর একমাত্র জিনিস যার পেছনে অর্থ ব্যয় করে আপনি শুধু ধনী থেকে আরও ধনী হবেন। এত দিন শুধু বইয়ে পড়েছি। দেখেছি ছবিতে বা টিভিতে। প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়ে এত বিশালতা উপভোগ করতে পারব ভাবিনি। সামনে বিশাল সমুদ্র আর আমি কী ক্ষুদ্র! নিজেকে খুঁজে ফেরা ছাড়া আর কোনো অনুভূতি কাজ করছিল না।

বিশ্বের সবচেয়ে গভীরতম সমুদ্র এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সেরা জায়গা এই সৈকত। আকাশে যদি একটি চাঁদ থাকে তাহলে তো কথাই নেই! সুন্দরে বিমোহিত হয়ে আপনি পাগল হয়ে গেলেও কিছু করার থাকবে না, যদি প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে কল্পনার সাগরে ডুব দিতে হয়! এখানেই ডুব দিতে পারবেন। এরই মধ্যে একটি কবিতা মনে পড়ে গেল—

‘বুকের ভেতরটা কী রকম যেন খালি খালি লাগছে,
তোমার কাছে ছুটে যাব বলে।
সেই যে কবে বিদায় জানিয়ে এলাম,
আবার ফিরব বলে।
আর তো তুমি আমায় ডাকলে না নিজের কাছে!
ভালোবাসার কণ্ঠে একবার ডেকেই দেখো না!
নীল পাখিদের ডানায় চড়ে উষ্ণ পরশে ছুঁয়ে দিয়ে আসব তোমায়।
তোমার মনোমুগ্ধকর জলতরঙ্গের ঢেউ আর বয়ে যাওয়া শান্ত বাতাসকে বলে দাও,
আমি আসছি শীতল পরশ নিয়ে।
উতাল ঢেউ আর শীতল পরশের মিলনমেলায়,
সাজবে আকাশ, বাজবে বাতাস।
ওগো আমার নীল পাখি আর প্রজাপ্রতিদের ঝাঁক ‘ওকে’ বলে দাও আমি আসছি
আমি আসছি...।’

সমুদ্র আপনার ভেতরের রোমান্টিকতাকে জাগিয়ে তোলে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এরপর হোটেল ফিরে ফ্রেশ হয়ে আমরা আবারও বের হলাম, সি সাইড বিচ থেকে সূর্যাস্ত দেখব বলে। একটু পরেই সমুদ্র তীরে দেখা গেল সূর্যাস্ত। সারা দিনের কোলাহল নিস্তব্ধতায় হলো শান্ত! হাত দিয়ে দুই চোখ কচলে নিয়ে তাকাই আবার, এটা স্বপ্ন বা বিভ্রম নয়তো? না, এ যে বাস্তব। এমন সুন্দর ইসকন পরিবেশ। শান্ত, পরিচ্ছন্ন, নির্মল আবেশ। এমন স্নিগ্ধ পরিবেশের কোলে ঝটিকা ভ্রমণে কি মন ভরে? মনের ব্যাকুলতা বাড়ে।

মাল্টনোমাহ ফলসে
মাল্টনোমাহ ফলসে

প্রাণ মাতানো বিশুদ্ধ হওয়া, অফুরন্ত অক্সিজেনে পূর্ণ প্রকৃতির শোভা। অফুরন্ত সময় কৃষ্ণ নামে হয়ে বিভোর, আমিও হয়েছিলাম প্রেমে বিভোর। হৃদয় ভরে নিতে প্রেমের ছোঁয়া, এতটুকু সময় যে বড়ই কৃপণতা। কী আছে উপায়, সীমিত যে সময়, এমন পরিবেশের পূর্ণ উপভোগ, প্রয়োজন নিতান্ত কয়েক দিনের প্রবাস। মন চাইলেও পরিস্থিতির চাপে, মুক্ত করতে পারব কি মনকে, এই সংসারের বেড়াজাল থেকে। যেখানে সমুদ্র থাকবে সেখানে কিছু রোমান্টিক কবিতা বা কথা আপনার মস্তিষ্কের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়াবেই।

‘কাটবে দিন কাটবে রাত চাঁদের আলো আর সাগর পাড়
তপ্ত রোদে করব তুমি আমি সময় পার।’

সূর্যাস্ত দেখে আমরা রাতের খাবার খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্ট খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু এখানে রেস্টুরেন্টগুলো ৯-১০ টার মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় বলে আমরা তেমন কোনো উপায় না পেয়ে কেএফসির খাবার দিয়েই কাজ চালালাম। হোটেলে ফিরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আমরা চারজন অর্পা, রিফাত ভাই, মৌ আর আমি রাত ১২টার দিকে আবারও হাঁটতে বের হলাম। হেঁটে চলে গেলাম আবারও সি সাইড বিচ। রাতের সমুদ্র দেখতে।

হেস্টস্ট রক ও প্রশান্ত মহাসাগরের সামনে
হেস্টস্ট রক ও প্রশান্ত মহাসাগরের সামনে

সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে সেই বিখ্যাত কথাটা মনে পড়ল, ‘ভ্রমণ মানুষকে বিনয়ী করে তোলে। সে জানতে পারে দুনিয়ার তুলনায় সে কত ক্ষুদ্র।’ আসলেই সমুদ্রের তুলনায় আমরা কত ক্ষুদ্র! তাই না? হঠাৎ করেই আমরা ঠিক করলাম, আমাদের জীবনের একটি বড় গোপন কথা, যেটা আমরা নিজেকে ছাড়া কাউকে জানাইনি, সমুদ্রকে জানাব। জানালামও সবাই, জীবনানন্দ দাশের সেই কবিতার মতো—

‘তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয়।’

কিছুক্ষণ সমুদ্রের তীর ধরে হাঁটলাম আমরা। এবার হোটেলে ফেরার সময়। কাল সকালে যে আবারও ফিরব আমরা এখানে সূর্যোদয় দেখতে। পরদিন ভোরে আবারও সময়মতো সবাই চলে এলাম সি সাইড বিচে। ভোরের সমুদ্র অনেক শান্ত! সূর্যোদয় দেখে হোটেলে ফিরে নাশতা করে আমরা রওনা দিলাম আমাদের শেষ গন্তব্যের দিকে। পেছনে রেখে গেলাম প্রশান্ত মহাসাগরকে। ঠিক যেন জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতো—

‘তুমি একা! তোমারে কে ভালোবাসে!—তোমারে কি কেউ
বুকে করে রাখে!
জলের আবেগে তুমি চলে যাও—
জলের উচ্ছ্বাসে পিছে ধু ধু জল তোমারে যে ডাকে!’

পোর্টল্যান্ডের একটি দোকান থেকে আমরা বাংলাদেশের ইলিশ, রুই মাছ, মাছের ডিম, শুঁটকি, হাঁস, আচার কিনলাম। পরে একটি ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে বুফে লাঞ্চ করলাম। খাবারগুলো আসলেই অসাধারণ ছিল। আমেরিকায় আসার পর এটাই আমার খাওয়া বেস্ট ইন্ডিয়ান খাবার ছিল। এরপর আমরা গেলাম ‘Pittock Mansion’। এখান থেকে পুরো পোর্টল্যান্ড শহরটাকে দেখা যায়। ১৯১৪ সালে নির্মিত পিটক ম্যানসনটি পোর্টল্যান্ডের ইতিহাসের অগ্রদূত। শহর থেকে আধুনিক, শিল্পায়িত শহর থেকে ইতিহাসের পোর্টল্যান্ডের রূপান্তর এবং এটির সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবার পিটকসের গল্প বলে।

হেস্টস্ট রকের সামনে
হেস্টস্ট রকের সামনে

এরপর আমরা মাউন্ট হুড পাহাড় দেখতে দেখতে এবং অরেগন সিটির মধ্য দিয়ে যেতে লাগলাম। মাউন্ট হুড পাহাড় চিরস্থায়ী বরফের পাহাড়, যা ১১টি গ্লসিয়ার দিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ। এটি হাজার মাইল দূর থেকেও দেখা যায়। রাতের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আমরা বয়েসিতে পৌঁছে গেলাম। আগেই রেস্টুরেন্টে খাবারের অর্ডার দেওয়া ছিল। খাবার নিয়ে সবাই একসঙ্গে খেয়ে নিজ নিজ নীড়ে ফিরে গেলাম। আর এর সঙ্গে শেষ হলো আমেরিকায় আসার পর থেকে বেস্ট ট্যুরের সমাপ্তি।

ভ্রমণের সার্থকতা নির্ভর করে আপনি কাদের সঙ্গে ভ্রমণ করছেন, অনেকটা সেটার ওপর। সিনিয়র, ব্যাচমেটদের সঙ্গে এমন একটা ট্যুর জীবনের স্মরণীয় ট্যুরগুলোর মধ্যে অবশ্যই থাকবে। কারণ ট্যুরটা ছিল ছয় অসমবয়সী বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে। শেষ করব দালাই লামার একটি উক্তি দিয়ে, ‘বছরে একবার এমন জায়গায় যান যেখানে আপনি আগে কখনো যাননি।’