জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জীবনে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। দেশের ঈদের আমেজ ও আনন্দ প্রবাসী মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা অনেক মিস করেন। তাই তাদের নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গত রোববার (২৩ জুন) জাপানের আশিকাগা সিটিতে বাংলাদেশ কমিউনিটির (কিতা কানতো) উদ্যোগে আয়োজন করা হয় উৎসবে আনন্দে আশিকাগা ঈদ আয়োজনের।

আশিকাগা সিটি ও এর আশপাশের বিভিন্ন শহরের ৬০টি পরিবারের প্রায় ২৫০ জন সদস্য এই ঈদ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। এ ঈদ আয়োজন জাপানের কানতো অঞ্চলের বাঙালিদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। রংবেরঙের নতুন নতুন শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে সবাই ঈদের আমেজে উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

আশিকাগা ঈদ আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন সুইয়ামা লুবনা। আরিয়ানের পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। এরপর ছিল সোনামণিদের নিয়ে প্রথম পর্ব। এ পর্বে ছিল সোনামণিদের ঈদের চিত্রাঙ্কন নিয়ে ‘রং-তুলি পর্ব’। সুন্দর চিত্রাঙ্কনের জন্য পুরস্কার লাভ করে আয়ান, মিমনুন, ফৌজি, আরোহা, নাবা ও সোহান। সবার গলায় মেডেল পড়িয়ে দেন শান্তা, বন্যা, সুমনা, সাথি ও নওশী। সবার হাতে বিশেষ পুরস্কার তুলে দেন কাজী ইনসানুল হক। জাপানের জনপ্রিয় গান পাপুরিকার সঙ্গে নাচ করে জেসিন, তিরানা, রুজাইনা, লাইবা, আরোহা ও নাবা। পাপুরিকা গানটি পরিবেশন করে সুহান। বাচ্চাদের সবাইকে চকলেট বিতরণ করেন চম্পা।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

দ্বিতীয় পর্বেরমধ্যাহ্নভোজনে ছিল সবার হাতে তৈরি মজাদার খাবারের সমাহার। বাংলাদেশের বাহারী খাবারের মধ্যে স্বাদের কমতি ছিল না। প্রায় সব নারী এক বা একাধিক পদ নিয়ে এসেছিলেন।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

তৃতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ পর্ব শুরু হয় রেইন করিমের গান দিয়ে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরও গান পরিবেশন করে নাঈম, বন্যা, নওশী, মোস্তফা ও সুমনা-সোহাগ জুটি। ঈদের রেসিপি নিয়ে হাসির নাটকে অভিনয় করেন বন্যা, সুমনা ও সোহাগ। তিনজনের সাবলীল অভিনয় দর্শকের মন জয় করে নেয়। চমৎকার কবিতা ‘সেই গল্পটা’ আবৃতি করে ইরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল নৃত্যশিল্পী পূজার ও নাবার নাচ। এই দুজনের নাচ দর্শকের মন জয় করে নেয়।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

আশিকাগা ঈদ আয়োজনে বাংলাদেশ কমিউনিটির (কিতা কানতো) পক্ষ থেকে শিশুশিল্পী আজরিন কারিমা নাবাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাকে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথি কাজী ইনসানুল হক ও দিদার কচি। এ সময় উপস্থিত দর্শকেরা করতালির মাধ্যমে নাবাকে অভিনন্দন জানান। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কুমার নন্দী, রোমন, রশিদ, মামুন, সাদেক প্রমুখ।

বিকেলের নাশতায় ছিল হাতের তৈরি কাঁচাগোল্লা, কালোজাম, সেমাই, পায়েস, কেক, পুডিং ও শিঙারা। আরও ছিল অসাধারণ মজাদার লাচ্ছি। খাবার পরিবেশন ও অন্যান্য কাজে সাহায্য করেন আলম, মিন্টু, মিলন, সাজ্জাদ, ইমন, মিজান, ফরহাদ, শাহাদাৎ, তাহের, বাবুল ও রাজা।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

এরপর শুরু হয় আশিকাগা ঈদ আয়োজন সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব জাপানের একমাত্র বাংলা ব্যান্ড দল ঝিঁঝি পোকার কনসার্ট। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যান্ড দল ঝিঁঝি পোকার পথচলা শুরু হয়। ঝিঁঝি পোকার আড়াই ঘণ্টাব্যাপী মনোমুগ্ধকর গান উপস্থিত দর্শকেরা মন ভরে উপভোগ করেন। জাপানে বাংলা ব্যান্ড দলের প্রথম কনসার্টের কারণে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল ঝিঁঝি পোকার এই কনসার্ট নিয়ে। সব সদস্যর পারফরম্যান্স ছিল এক কথা অসাধারণ। কনসার্ট শেষ হয় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে। এই সময় উপস্থিত দর্শকেরা দাঁড়িয়ে সম্মান জানান জাতীয় সংগীতকে।

কনসার্টে আগে বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে ঝিঁঝি পোকাকে বরণ করে নেন লুবনা, বন্যা, সুমনা ও চম্পা।

জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব
জাপানের আশিকাগায় ঈদ উৎসব

প্রথম কনসার্ট উপলক্ষে ঝিঁঝি পোকাকে ক্রেস্ট তুলে দেন নোমান, মোস্তফা, সাজ্জাদ, লুৎফুর ও সোহাগ। বিশেষ দুটি সুভেনিয়র ঝিঁঝি পোকাকে তুলে দেন কাজী ইনসানুল হক ও সুইয়ামা লুবনা।

সব শেষে ছিল র‌্যাফল ড্র। পাঁচজন ছোট সোনামণি পাঁচটি নাম তোলে বক্স থেকে। র‌্যাফল ড্রর পাঁচটি পুরস্কার জিতে নেন ঊর্মি, রিনি, শওকত, রায়েদ ও লুবনা।

সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য অতিথিদের পক্ষ থেকে সুইয়ামা লুবনাকে ফুলের তোড়া উপহার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের ছবির তোলার দায়িত্ব পালন করেন মনসুর আহমেদ মিলন ও রাহাত বশর। পরিচালনা করেন সুইয়ামা লুবনা, নোমান সৈয়দ ও গোলাম মোস্তফা।