আমি কেন বাংলা শিখছি

শিশুদের যে বই লেখিকাকে বাংলা শিখতে অনুপ্রাণিত করেছে
শিশুদের যে বই লেখিকাকে বাংলা শিখতে অনুপ্রাণিত করেছে

আমার নাম মিজুকি তাকাহাশি। আমি টোকিও বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এখন আমি আমার ক্লাসের ৯ জন বন্ধুর সঙ্গে বাংলা ভাষা শিখছি।

হাইস্কুলের ছাত্রী থাকার সময় বাংলা ভাষা শেখার চেষ্টা আমি করেছিলাম। কারণ জুনিয়ার হাইস্কুলে পড়ার সময় একটি বেসরকারি সংগঠনে (এনজিও) ভলান্টিয়ারের কাজ আমি করেছি। সেই এনজিও ভারত আর বাংলাদেশের গ্রামের স্কুলগুলোকে সাহায্য করছে। সেই অফিসে আমি বাংলায় লেখা বাচ্চাদের বই দেখেছি। আর স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ছবিও দেখেছি।

আমি নিজে সেই বইগুলো পড়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। তখনই আমার মনে হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বাংলা ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। গত বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা শেখা শুরু করলেও এখনো আমি বাংলাদেশে যাইনি। আগামী গ্রীষ্মে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা আমার আছে। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বাংলায় কথা বলার ইচ্ছাও আমার আছে।

কলকাতায় শিশুদের সঙ্গে
কলকাতায় শিশুদের সঙ্গে

বাংলাদেশে এখনো আমি যাইনি। কিন্তু এ বছর পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছি। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ছয় সপ্তাহ কলকাতায় আমি ছিলাম। আমার বন্ধুরা আর আমি সেখানে ক্লাসে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতি শিখেছি। ক্লাসের বাইরেও আমরা কলকাতার মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে অনেক কথা বলেছি। তারা সবাই বন্ধুর মতো। তাই আমরা অনেক কথা বলতে পেরেছি।

এখন আমি মা-বাবার সঙ্গে টোকিওতে থাকি। আমাদের বাড়িতে একটা কুকুরও আছে। তার নাম ‘নোনতা’। আমার একজন শিক্ষক কুকুরের সেই নাম শুনে অনেক হেসেছেন। সেই সময়ে আমি তাঁর হাসির কারণ বুঝতে পারিনি। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারি। আসলে, সেই কুকুরের গায়ের রং হচ্ছে নুনের মতো সাদা।

আমি প্রতিদিন ট্রেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। আমার বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টার পথ। ট্রেনে আমি বই পড়ি। কারণ ছুটির সময় বই পড়া আমার পছন্দ। কিন্তু আজকাল বাড়ির কাজ অনেক থাকে বলে আমার হাতে বই পড়ার সময় নেই।

স্বেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে লেখিকা (ডানদিক থেকে তৃতীয়)
স্বেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে লেখিকা (ডানদিক থেকে তৃতীয়)

বই পড়া ছাড়া আকাশের তারা দেখতে আমি ভালোবাসি। হাইস্কুলের ছাত্রী থাকার সময় আমি মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে তারা দেখতে যেতাম। সন্ধ্যা থেকে ভোরবেলা পর্যন্ত আমরা বাইরে কথা বলতে বলতে, চা খেতে খেতে তারা দেখতাম। সেই স্মৃতি খুব মধুর। এখন আমি প্ল্যানেটারিয়ামে পার্টটাইম কাজ করি। সেখানে তারা দেখে হাইস্কুলের স্মৃতি আমার মনে পড়ে যায়।