ক্যালগেরিতে দেওয়ান গাজীর কিসসার মঞ্চায়ন
কানাডার ক্যালগেরি শহরে মঞ্চস্থ হলো বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের খুবই আলোচিত নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’। ব্রের্টল্ড ব্রেখটের নাটক অবলম্বনে দেওয়ান গাজীর কিসসা রচনা করেছেন নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর আর এই প্রযোজনার নির্দেশনা দিয়েছেন মাহমুদুল ইসলাম সেলিম।
প্রবাসে নাটক মঞ্চায়নের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা জয় করে দর্শকদের ব্যাপক আনন্দ দিয়েছে নটনন্দনের এই প্রযোজনা।
নাট্য রজনীর উদ্বোধন করেন একুশে পদকে ভূষিত নাট্যব্যক্তিত্ব জামালউদ্দিন হোসেন ও অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেন।
‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ আল ইমরান নিক্কন, শুভাশিস চক্রবর্তী, জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, ইকবাল রহমান, ফারজানা সোমা, পাপ্লু পাল, তুরীন চৌধুরী, অনামিকা পূজা, গোলাম তাঞ্জিম অনিক, বিনীতা মৌ দত্ত, আরাফাত আহমেদ বাপ্পি, শর্মিলা নন্দী শর্মী, সালেহা আশরাফ কান্তা, সঞ্জয় দেব রায়, লাভলী বেগম, শুভ্র দাস শুভ ও মাহমুদুল ইসলাম সেলিম।
আলোক নির্দেশনায় ছিলেন সুরঞ্জিত চন্দ, শব্দনিয়ন্ত্রণে জয়ন্ত বসু, রূপসজ্জায় বিউটিশিয়ান ইসমত জেরিন, সেট নির্মাণে মোশারেফ মাসুদ, অভ্যর্থনায় জুবায়ের সিদ্দিকী ও সিমায়লা বুশরা জহির, স্থিরচিত্র ধারণে আলোকচিত্রী মাসরুর আহমেদ দীপক। নাটকটির শুরুতে দর্শকদের শুভেচ্ছা জানাতে প্রারম্ভিক সঞ্চালনায় ছিলেন রাইসা আফ্রিদা।
মিলনায়তন ভর্তি দর্শকের উপস্থিতিতে নির্মল আনন্দ নিয়ে ক্যালগেরিবাসী উপভোগ করেছেন নাটকটি।
নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে মাহমুদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘ব্রের্টল্ড ব্রেখট ছিলেন একজন প্রগতিশীল নাট্যকার। তাঁর বেশির ভাগ নাটকেই উঠে এসেছে মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা, শোষণ-নিপীড়নের কথা, যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এখনো বিদ্যমান। এই নিগূঢ় সত্যকে তিনি কেবল হাস্যরসের মাধ্যমে নান্দনিকভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপনই করতে চাননি, তাঁদের ভাবাতেও চেয়েছেন।’
‘সেই একই ধারাতে বিশিষ্ট অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর সত্তরের দশকে নাটকটি সম্পূর্ণ দেশজ মেজাজে রচনা করেছিলেন, যা কোনোভাবেই বিদেশি নাটকের রূপান্তর বলে মনে হয় না। চার দশক ধরে সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে ঢাকার মঞ্চে এই নাটক অভিনীত হয়ে এসেছে। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো সেই পঙ্কিলতা আমরা দেখতে পাই, প্রবাসে থেকেও আমাদের এসব ভাবিয়ে তোলে। আর তাই নটনন্দন থিয়েটার এবার এই নাটকটি মঞ্চায়নের জন্য বেছে নিয়েছে।’
দূর পরবাসে নানামুখী ব্যস্ততার মাঝেও বাংলা নাটকের এই সফল মঞ্চায়নে সাধুবাদ জানিয়েছেন দর্শক। নটনন্দনকে এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তাগিদ দিলেন অনেকেই।