স্টকহোমে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালন

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. নাজমুল ইসলাম
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. নাজমুল ইসলাম

বিনম্র শ্রদ্ধা, শোক ও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে সুইডেনের বাংলাদেশ দূতাবাস। গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী স্টকহোমের দূতাবাস প্রাঙ্গণ ও বাংলাদেশ হাউসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে শোক দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।

বিকেলে দূতাবাস প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

‘চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর এক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বিকেলের আয়োজন শুরু হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা সভা। দূতাবাসের প্রথম সচিব সায়মা রাজ্জাকীর সঞ্চালনায় আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকে বক্তব্য দেন। তাঁরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসামান্য আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তাঁরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছিল। ১৫ আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে নিজ নিজ জায়গা থেকে অধিকতর দেশপ্রেমে আত্মনিয়োগ করবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বক্তারা।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শকে সামনে রেখে একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সাফল্যজনক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে ঘাতকেরা মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মূল্যবোধ ও আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকদের সেই হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন
দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন

রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাই নন, স্বাধীনতা-উত্তর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর প্রাজ্ঞ কূটনীতি তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে।

রাষ্ট্রদূত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলার গড়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশের বাইরে বসবাসরত নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরও জানতে হবে এবং তাঁর সংগ্রামী জীবনের আদর্শকে ধারণ করে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।

এর আগে আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও অন্য পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তাঁদের তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোগী জামালসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে আগত অতিথিরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি
জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর এক বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দোয়া মাহফিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বিজ্ঞপ্তি