ভিয়েনায় জাতীয় শোক দিবস পালন

ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়
ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় পালিত হয়েছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে দিবসটি বিনম্র শ্রদ্ধা ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়।

এ উপলক্ষে ভিয়েনার হউফসাইলে দূতাবাস কার্যালয়ের মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট বিকেলে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। সঞ্চালনা করেন কাউন্সেলর ও চ্যান্সারি প্রধান রাহাত বিন জামান।

বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সর্ব ইউরোপিয়ান শাখার সভাপতি, অস্ট্রিয়াপ্রবাসী এম নজরুল ইসলাম, অস্ট্রিয়া শাখার সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অস্ট্রিয়া ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার বায়েজিদ মীর, বঙ্গবন্ধু পরিষদের অস্ট্রিয়া শাখার সভাপতি নাহিদ সুলতানা প্রমুখ।

মো. আবু জাফর বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

এম নজরুল ইসলাম বলেন, সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনা শুধু ব্যক্তি মুজিবকে হত্যার প্রয়াস ছিল না, ছিল জাতির স্বাধীনতার শক্তিকে হত্যার অপচেষ্টা। ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে খুন করে তারা একটি আদর্শকে খুন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আজকের দিনে বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।

সভার শেষে বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এর আগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ ছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন মো. আবু জাফর। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন রাহাত বিন জামান।

আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ভিয়েনার রেনবো হলে ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের অস্ট্রিয়া শাখার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের সর্ব ইউরোপিয়ান শাখার সভাপতি অস্ট্রিয়াপ্রবাসী এম নজরুল ইসলাম।

বক্তব্য দেন বায়েজিদ মীর, নাহিদ সুলতানা, আবদুল জলিল, আকতার হোসেন, রুহী দাস সাহা, মিজানুর রহমান, আহমেদ ফিরোজ, নয়ন হোসেন, ইমরুল কায়েস প্রমুখ।

এম নজরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর আদর্শ সদা জীবন্ত, যা বাঙালিদের নিরন্তর জাগ্রত ও উজ্জীবিত রেখেছে।

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সংগ্রামের পতাকাতলে আজ ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমতাভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র, তথা সোনার বাংলা গড়ার লড়াইয়ে এগিয়ে চলছে। এ লড়াইয়ে বিজয় অনিবার্য।’

আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা
আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা

খন্দকার হাফিজুর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে ফাঁসির রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

উল্লেখ্য, এ উপলক্ষে ভিয়েনার বায়তুল মোকাররম মসজিদে বাদ জোহর কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের জাতীয় শোক দিবস পালন

জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অস্ট্রিয়া শাখা ভিয়েনায় এক শোক সভার আয়োজন করে। ভিয়েনার রেনবো হলে ১৫ আগস্ট দুপুরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নাহিদ সুলতানা। উপস্থাপনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস। প্রধান অতিথি ছিলেন এম নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন খন্দকার হাফিজুর রহমান।

বক্তব্য দেন সাইফুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, সৈয়দ রহমান, আবদুল জলিল, আকতার হোসেন, এ কে এম শওকত আলী, রুহী দাস সাহা, মিজানুর রহমান, আহমেদ ফিরোজ, সাইফুল ইসলাম, নয়ন হোসেন প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন এম নজরুল ইসলাম
বঙ্গবন্ধু পরিষদের আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন এম নজরুল ইসলাম

এম নজরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সরকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামের যাবতীয় ইতিবাচক মূল্যবোধ খণ্ডিত ও বিকৃত করেছে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজ সশরীরে আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তাঁর জীবন ও কর্মের স্মৃতি জ্যোতির্ময় শিখার মতো অন্তহীন প্রেরণার উৎস হয়ে আমাদের মধ্যে বেঁচে আছে। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি বহু চেষ্টা করেছে বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে। কিন্তু তারা পারেনি। কেউ কখনো পারবে না।’

খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

নাহিদ সুলতানা বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রিয়ার মাধ্যমে প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রচারে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

সভার শেষে বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।