জেনেভায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয়
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয়

গভীর শোক, শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্য দিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জেনেভার জাতিসংঘ দপ্তরের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন।

দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় স্থায়ী মিশন ও দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও চিন্তাধারা এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথপরিক্রমায় সংঘটিত বিভিন্ন রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ নেতৃত্বের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চারিত্রিক গুণাবলির সঙ্গে রাজনৈতিক ধীশক্তির সংমিশ্রণে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন রাজনীতির কবি। অন্যদিকে, তিনি সহস্র বছরের পুরোনো একটি নৃগোষ্ঠীর মধ্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ এবং সুদীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে শোষিত একটি জাতিকে স্বাধীন জাতিতে রূপান্তরিত করেছেন। তাই তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি—সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

বঙ্গবন্ধু কর্নার
বঙ্গবন্ধু কর্নার

রাষ্ট্রদূত জাতির পিতার মহান আদর্শ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সকলকে তাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখতে বলেন।

উল্লেখ্য, জাতীয় শোক দিবসে মো. শামীম আহসানের একান্ত উদ্যোগে জেনেভার বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধনের মাধ্যমে দিবসটি পালনে এক ব্যতিক্রমী মাত্রা যোগ হয়। জাতির পিতার জীবন ও কর্ম নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই, নির্মিত বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও অন্যান্য শিল্পকর্ম বঙ্গবন্ধু কর্নারে স্থান পেয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ ও গণমানুষের কল্যাণে তাঁর অসামান্য অবদান প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিদেশিদের মধ্যে প্রসারের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কর্নার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু কর্নারকে ক্রমান্বয়ে আরও সমৃদ্ধ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন।

শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান
আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মো. শামীম আহসান

এর আগে সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া দূতাবাসের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত কবিতা ও প্রবন্ধ পাঠ করে শোনান। বিজ্ঞপ্তি