যুক্তরাজ্যের লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে ও একটি দিবাযত্ন কেন্দ্রে গৃহহীন ও বয়স্কদের মধ্যে বিনা মূল্যে খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী পালন করে।
দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম পূর্ব লন্ডনে সোনালি গার্ডেন সেন্টার ও ডে-কেয়ার সেন্টারে গৃহহীন ও বয়স্কদের মধ্যে দুপুরের খাবার পরিবেশন করেন।
এর আগে সকালে হাইকমিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা হয়। অন্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি আর্টস অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রথমবারের মতো পূর্ব লন্ডনে জাতীয় শোক দিবসে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করল।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে আমাদের স্বাধীনতার অর্জন ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারই করেননি, গণতন্ত্রকেও একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলছেন।’
সাইদা মুনা তাসনীম টাওয়ার হ্যামলেটসে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ে সফরের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটিকে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শচর্চার পরামর্শ দেন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস। অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির নেতা সুলতান মাহমুদ শরীফ, লেখক ও সাংবাদিক হারুন হাবিব, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাংসদ শাহজাহান কামাল ও মুহিবুর রহমান মানিক এবং আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সাইদা মুনা তাসনীম মেয়র জন বিগস, হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও অন্য অতিথিদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন পেশার দুই শ অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে হাইকমিশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ১৫ আগস্টে নিহত সবার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর পূর্ব লন্ডনে স্থাপিত জাতির পিতার আবক্ষ ভাস্কর্যে হাইকমিশনার পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন একটি স্মরণিকা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে। এ ছাড়া চারুশিল্পী এস এম আসাদের আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির এক প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি