স্থানীয় শিশু-কিশোরদের সক্রিয় অংশগ্রহণ

অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়
অনুষ্ঠানে ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়

স্থানীয় শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের এবারের আয়োজনের বিকেলের পর্বে জনকূটনীতির মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণ তথা শিশু-কিশোরদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরার প্রয়াস নেওয়া হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠানে দুটি স্থানীয় স্কুলের ৭০ জন ছাত্রছাত্রী তাদের শিক্ষকসহ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমান শিশুতোষ ব্রাজিলিয়ান-পর্তুগিজ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর শিশুকাল, তাঁর প্রতিবাদী চরিত্র, সময়ের পরিক্রমায় তাঁর বাঙালি জনগণের প্রিয় নেতা ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠার গল্প, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জন ইত্যাদির প্রাঞ্জল বর্ণনা করেন।

এরপর বঙ্গবন্ধুবিষয়ক দুটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। সবশেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে রাষ্ট্রদূত বেশ কিছু উৎসাহী ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। মূলত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা নিয়ে তাদের আরও জানার উৎসাহের প্রকাশ ঘটে প্রশ্নোত্তর পর্বে।

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. জুলফিকার রহমান
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. জুলফিকার রহমান

এ অনুষ্ঠানের সব শেষ পর্বে ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

স্কুল দুটির শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা এই আয়োজনের জন্য দূতাবাসের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের বন্ধন রচনায় সহায়ক হবে। ভবিষ্যতেও এই ধরনের আয়োজন করার আর সেসব আয়োজনে আরও বেশি স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাঁরা আগ্রহ দেখান।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমান এর আগে (২০১২) তুরস্কের আঙ্কারায় নিয়োজিত থাকাকালে এ জনকূটনীতি শুরু করেন। এত দিন এটি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন উপলক্ষে। এবারই প্রথম ব্রাজিলের শিশু-কিশোর তথা দেশটির ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের নিয়ে জাতীয় শোক দিবসে ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাস এ আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোর ও শিক্ষকেরা
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোর ও শিক্ষকেরা

এর আগে সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমান শোক দিবসের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার সূচনা করেন। প্রবাসী বাংলাদেশি, দূতাবাসের ব্রাজিলিয়ান শুভাকাঙ্ক্ষী ও দূতাবাসের কর্মীদের নিয়ে কর্মসূচির এ অংশে রাষ্ট্রদূত জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে জাতির জনকসহ অন্য শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন ও বিশেষ দোয়া করা হয়। এরপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়।

সকালের এ অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর সমাপনী বক্তব্যে এই শোককে জাতীয় উন্নয়নের শক্তিতে রূপান্তরিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত ২০২০ সালে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠেয় অনুষ্ঠানাদির বিষয়েও আলোকপাত করেন এবং এসব কর্মসূচি সুচারুভাবে সম্পন্নের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন। বিজ্ঞপ্তি