দিল্লিতে এক টুকরো বাংলাদেশ

নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। ২০১৯-২১ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাতে গত রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে দিকনির্দেশনামূলক স্বাগত বক্তব্য দেন পিএইচডি গবেষক কম্পিউটার সায়েন্সের সুমিত কুমার বংশাল ও আইনের আশফাকুজ্জামান চৌধুরী এবং মাস্টার্স দ্বিতীয় বর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজানা হক মিফতা।

নবীনদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে সফলভাবে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে এবং নিজের দেশের সঙ্গে বাকি সাতটি দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা গুরুত্ব পায় তাঁদের বক্তব্যে।

এখানকার আধুনিক গবেষণার সুযোগ সঠিক ব্যবহার করে দেশের জন্য, সমাজের জন্য নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন তাঁরা। শিক্ষা যে শুধু বই ও গবেষণা নয়, পারস্পরিক বোঝাপড়া, নতুন চিন্তাধারা তথা সর্বোপরি একটি উত্তম মানুষ হওয়ার মাধ্যম, এটার প্রতিই গুরুত্ব দেন বক্তারা। এ ছাড়া দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করতে সদ্য আসা গবেষক ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়েও তাঁরা কথা বলেন।

নবীনদের শুভেচ্ছা উপহার দিয়ে বরণ করে নেন পুরোনো শিক্ষার্থীরা। নবীন শিক্ষার্থীদের পরিচয় পর্বের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতা, গান, নাচ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় এই ছোট্ট পরিসরে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শেষে সবার জন্য আয়োজন করা হয় দেশীয় আঙ্গিকে রাতের খাবার। সবার একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া ও চা চক্রের মাঝে শেষ হয় একটি সুন্দর সন্ধ্যার।

এর আগে পুরোনো ঐতিহ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যথাযথ সম্মানের সঙ্গে জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠানের শুরু করেন।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ও অর্থনীতিতে অধ্যয়নরত তাসনুভা আহমেদ।

এই একটি ছোট্ট আয়োজন সম্মিলিত করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত, বিভিন্ন সমাজ থেকে উঠে আসা বাংলাদেশিদের। যা গড়ে তোলে একটা পরিবার। এ ধরনের আয়োজন মনে করিয়ে দেয় বিদেশের মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশের অস্তিত্ব। এসব ছোট আয়োজন সুযোগ করে দেয় পড়াশোনার চাপে ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের একটু আনন্দোৎসব করার। এই বাংলাদেশি পরিবারের সদস্যরা ভিনদেশের অপরিচিত মাটিকে পরিচিত ও আপন করে নেওয়ার জন্য পাথেয় হয়ে ওঠে একে অপরের। ‘আমরা সবাই এখানে এক দেশের সন্তান। পরবাসে এটা আমাদের সুখ-দুঃখের ভাগীদার এই পরিবার।’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে নবীন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে ওঠে এক অনন্য পরিবার।

উল্লেখ্য, সার্কভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০১০ সালে দিল্লির চাণক্যপুরীর আকবর ভবনে সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এখানে সাতটি বিভাগে মাস্টার্স ও এমফিল/পিএইচডি করানো হয়।
---
তানভীর হায়দার: মাস্টার্স দ্বিতীয় বর্ষ, কম্পিউটার সায়েন্স, সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি, ভারত