কোরিয়ায় বাংলাদেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মিলনমেলা

উপস্থিতির একাংশ
উপস্থিতির একাংশ

পবিত্র মধুপূর্ণিমা তিথি উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মিলনমেলা তথা মতবিনিময় ও ধর্ম সভা। জোগেজাং কোরিয়া–বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট টেম্পল এই মিলনমেলার আয়োজন করে।

গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাজধানী সিউলের গিম্পু সিটির ইয়াংগুগ এলাকায় জোগেজাং কোরিয়া বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট টেম্পলের কার্যালয়ে এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দেশটিতে ছিল ছুচকের নবান্ন উৎসব উপলক্ষে জাতীয় ছুটি। সরকারি বন্ধ থাকার কারণে দূরদূরান্ত থেকে অনেক পুণ্যার্থী বিহারে উপস্থিত হন।

ধর্ম সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিনোদ চন্দ্র সিংহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী সুমি বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন টেম্পলের সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি রানা বড়ুয়া।

সভায় প্রধান ধর্ম আলোচক হিসেবে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শ্রীমৎ সুগত স্থবির মহামানব গৌতম বুদ্ধের অমৃতময় বাণী নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অন্যতম তীর্থভূমি কুমিল্লার ময়নামতি শালবন বিহারকে নবরূপ দান করে পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করেছি। দেশের বাইরে কোনো দেশে অথবা সুযোগ পেলে দক্ষিণ কোরিয়ায়ও আমাদের একটা মেডিটেশন সেন্টার করার ইচ্ছে রয়েছে।’

প্রথম পর্বে বেলা ১১টায় জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল ও শান্তি কামনা করে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধপূজার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা হয়। সবার পক্ষ থেকে পঞ্চশীল প্রার্থনা করার জন্য ডাক আসে লেখকের ওপর। নতুন হলেও পঞ্চশীল প্রার্থনা করে সত্যিই লেখকের মনটা আচমকা আনন্দে উদ্বেলিত হয়।

পঞ্চশীলে আমরা প্রধান ধর্ম আলোচকের মাধ্যমে প্রাণী হত্যা, চুরি করা, বিনা অনুমতিতে অপরের কোনো কিছু গ্রহণ করা, মিথ্যা কথা বলা, নিজ স্বামী-স্ত্রী ছাড়া অপরের সঙ্গে অবৈধ কাম, মদ-গাঁজাসহ বিবিধ নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার শিক্ষা গ্রহণ করি। এই পঞ্চনীতি বা পঞ্চশীল গ্রহণ করে শান্ত হয়ে সুখ অনুভব করলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সবাই যেন জাগতিক ভোগ–বিলাস ত্যাগ করে নির্বাণ সুখের দিকে ধাবিত হতে শুরু করল।

দ্বিতীয় পর্বে চলে ভোজনবিলাস ও আড্ডা। দেগু থেকে আসা রণজিৎ বলেন, অনেক দিন পর সবাইকে একসঙ্গে পেয়ে ভালো লাগছে।

বিকেলে জোগেজাং কোরিয়া বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট টেম্পলের পুরোনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে বিধান মুৎসুদ্দিকে সভাপতি, অসীম বিকাশ বড়ুয়া ও সৈকত বড়ুয়াকে সহসভাপতি এবং সুমিত বড়ুয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।

সব শেষে টেম্পলকে পূর্ণ রূপ দেওয়ার মানসে কোরিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করে অনুষ্ঠানের ইতি টানা হয়।