মৃত্যুর বিন্দুটুকু ছুঁয়ে যেতে যেতে

অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী

স্কুলে শেষ ঘণ্টার শব্দ শুনলাম ঘুমে 

হঠাৎ খেয়াল করলাম জীবনকে ছাপিয়ে
অন্তিমের সুতো গুটাচ্ছি দেহ লাটাইয়ে
শুনলাম কিছু শব্দ আর্যা-তর্যা পড়ার
ধূপের পাটল গন্ধ...আগর বাতির ধোঁয়া...
বোধের জগৎ সংবাহিত তখন স্পর্শ আর ঘ্রাণে
আমি যেন গণিতবিদ লানির চতুর্ভুজ ঘনক্ষেত্রের বর্গমূলের গলদ জ্যামিতি মেলাচ্ছি
স্বপ্নে দ্রুত নামতা ধারাপাত প্রেমিকের নাম আওড়ে যাচ্ছি
তখন অনায়াস মৃত্যু হচ্ছে আমার
ধমনির গতি বন্ধ প্রায়
শুধু অস্ফুটে চিৎকার করছি
দয়া কর দয়া করে...
আমার স্মরণে মোজার্টের সংগীত পরিবেশন কর
নাড়ির স্পন্দন পরীক্ষা কর না প্লিজ
বরং মৃত্যুর সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি বলে দাও
তোমরা যারা আমার মৃত্যু ঘরে প্রবেশ করেছ
দেখ মৃত্যুর মাধুর্য আমার মুখে ছায়ারেখা খেলা করছে
চিরতরে বিসর্জন দাও আমাতে যা চাও সেই আশাগুলো
তোমাদের চাওয়াগুলো নিরাময়ের অতীত
আমার ভীষণ ভীষণ মনে পড়ছে ঘন সবুজ

লেখিকা
লেখিকা

সুরের জলকণা তরঙ্গমালা সাদর কোমল স্পর্শ...
আমাকে মুক্তি দাও
বেটোফেনের সপ্তম সিম্ফনি তুমি ঘুরে ঘুরে মৃত্যুকে অলংকৃত কর...
আমি মৃত্যু বরণ করি—আমি চিরঘুমে ঘুমিয়ে পড়ি।
আমার প্রেম আমাকে যদি জিজ্ঞেস কর
লানির মতো আমিও উত্তর দিতে পারি মৃত্যুসজ্জায় এক শ চুয়াল্লিশের স্কয়ার রুট কত...বারো...বারো...বারো
কিংবা তোমার দেওয়া চুমুর সংখ্যা চিবুকের ভাঁজে
আমার নির্মিত সব পুস্তকের শেষের লাইন কতক
দয়া কর মৃত্যু আমাকে সংক্ষিপ্ত কর শূন্য হওয়ার পদ্ধতি বলে দাও...
মৃত্যু তুমি পার্থিব কালের চাইতে অনেক বেশি প্রীতিপদ।
এখন কেবল তোমাকে পাওয়ার উচ্চাভিলাষ আমার
মৃত্যুর মাধুর্য দান কর...
প্রিয় সংগীতগুলো বাজানো শুরু কর
আমি মৃত্যু ভয়কে জয় করি
নিস্তেজ হই জীবনের সমাপ্তি উপলব্ধি করি।
...

নাজমীন মুর্তজা: অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া।