টরন্টোয় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে স্মরণ

টরন্টোয় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে স্মরণ
টরন্টোয় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে স্মরণ

রাজনীতির বাতিঘর অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যু নেই। তিনি ছিলেন ছিলেন আদর্শের বাতিঘর। যিনি সারা জীবন দেশ ও জাতির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তাঁর শূন্যস্থান কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে কানাডার টরন্টোয় আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক উদ্যোগ (পিডিআই) টরন্টোর বাঙালি পাড়ার ইউনাইটেড হোপ চার্চে এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

সভায় ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসির উদ দুজা বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর ছিলেন আদর্শের বাতিঘর। বর্তমানের রাজনীতিতে আদর্শহীনতা ও স্বার্থবাদিতার অন্ধকারে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। যিনি সারা জীবন দেশ ও জাতির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন। তাঁর শূন্যস্থান কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর মতো নির্লোভ ও রাজনীতিতে স্বার্থ ত্যাগের চেতনাসমৃদ্ধ রাজনীতিকের কখনো মৃত্যু হবে না।

অন্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক-গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবক্ষয়ের মুক্তিই ছিল তাঁর একমাত্র আকাঙ্ক্ষা। তাঁর রাজনৈতিক পথ অনুসরণের মাধ্যমেই রাজনৈতিক-সামাজিক মুক্তির নতুন পথনির্দেশনা পাওয়া সম্ভব।

বক্তারা তাঁর স্মৃতিকে সামনে রেখে তাঁর রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির বিভিন্ন অংশ ও সব অনুসারীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণের আন্দোলন তীব্রতর করার আহ্বান জানান। তাঁরা আরও বলেন, সব গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তির একতা ছাড়া দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় নাসির উদ দুজা ছাড়াও বক্তব্য দেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল আউয়াল, লেখক সালমা বাণী, লেখক ফারহানা আজিম শিউলী, সাংবাদিক নুর কাজী, উদীচীর কানাডা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৌমেন সাহা, পিডিআইয়ের ননীগোপাল দেবনাথ।

সভাপতিত্ব করেন পিডিআইয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল মালিক। সঞ্চালনা করেন পিডিআইয়ের সমন্বয়ক মাহবুব আলম।

সভায় টরন্টো ও নিকটবর্তী শহর থেকে অনেকে যোগ দেন।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক মোজাফফর গত ২৩ আগস্ট ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায় ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। তার আগে ছিলেন একাধিক কলেজে। ১৯৫৪ সালে তিনি মাত্র ২২ বছর বয়সে মুসলিম লীগের এক মন্ত্রীকে পরাজিত করে প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকার ছয় সদস্যের যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছিল, তিনি তার সদস্য ছিলেন।