ইগলের দ্বীপ লংকাবি

ইগলের দ্বীপ লংকাবি। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত
ইগলের দ্বীপ লংকাবি। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত

মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম ইগলের দ্বীপখ্যাত লংকাবি। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ শ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপে বছরজুড়ে থাকে পর্যটকদের ভিড়।

ফেকাহ প্রদেশের সম্পদ দ্বীপটি মূলত ইগলের জন্য বিখ্যাত। দ্বীপজুড়ে চোখে পড়বে উড়ন্ত ইগল। বন্দর দিয়ে শহরের প্রবেশমুখেই নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকৃতির ইগল মূর্তি; যা ইগল স্কয়ার নামে পরিচিত।

লংকাবির আনাচকানাচে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ফুলঝুরি। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে তার প্রিয়তমাকে। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষণ দিতে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প। যার মধ্যে অন্যতম কেব্‌ল কার ও স্কাই ব্রিজ।

ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত
ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত

পৃথিবীর সেরা ১০টি স্কাই ব্রিজের একটি লংকাবি স্কাই ব্রিজ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ১৭০ ফুট উঁচুতে নির্মিত কার্ব আকৃতির এই ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১২৫ মিটার। কেব্‌ল কারে চড়ে ওপরে উঠে লিফট কিংবা হেঁটে এই ব্রিজে যেতে পারেন দর্শনার্থীরা।

কেব্‌ল কার দিয়ে ওপরে ওঠার সময় দুটি স্পটে নেমে মেঘের মাঝে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে। দারুণ এ সুযোগে দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারেন আকাশ, পাহাড় আর সমুদ্রের চমৎকার মিলনমেলা। মেঘের মাঝে দাঁড়িয়ে সবুজ পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে নীল জলরাশির মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য পৃথিবীর আর কোথাও মিলবে কি না, আমার জানা নেই।

স্কাই ব্রিজ ও কেব্‌ল কারের নিচে গড়ে তোলা হয়েছে ওরিয়েন্টাল ভিলেজ। যেখানে থ্রিডি আর্ট গ্যালারি থেকে শুরু করে দর্শনীয় অনেক কিছুই রয়েছে।

ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত
ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত

লংকাবিতে ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে শতাধিক দর্শনীয় স্থান।

আন্দামান সমুদ্রবর্তী দ্বীপটির সমুদ্রসৈকতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর সৈকত পান্তাই ছেনাং। পর্যটকেরা সাধারণত এখানেই বেশির ভাগ সময় কাটান। এই সৈকতকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত হোটেল ও মোটেল।

তবে ‘কহোনা পেয়ার হে’ গানের একটি অংশের শুটিং হওয়া তানজুং রুহ বিচ ও ব্ল্যাক স্যান্ডি বিচ বা কালো বালুর দ্বীপ পর্যটকদের বাড়তি সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ তৈরি করে দেয়।

লংকাবিতে কম খরচে বেশি উপভোগের দারুণ সুযোগ রয়েছে হপিং আইল্যান্ড ট্যুরে। যেখানে চার ঘণ্টায় চারটি ভিন্ন ভিন্ন দ্বীপ দেখা যাবে। দেখা যাবে সমুদ্রের মাঝে ঝাঁকে ঝাঁকে ইগলদের খাওয়ানোর দৃশ্য।

ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত
ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে পর্যটক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত

দর্শনীয় স্থান

ইগল স্কয়ার, কেব্‌ল কার ও স্কাই ব্রিজ, পান্তাই ছেনাং বিচ, তানজুং রুহ বিচ, ব্ল্যাক স্যান্ডি বিচ ছাড়াও রয়েছে আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, ওরিয়েন্টাল ভিলেজ, ক্রোকোডাইল ফার্ম, বার্ড প্যারাডাইজ, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, বে রিসোর্ট, সেভেন ওয়েলস ওয়াটার ফলসহ শতাধিক দর্শনীয় স্থান।

এ ছাড়া লংকাবাবিতে ছোট-বড় জাহাজে করে সমুদ্রের মাঝে সূর্যাস্ত দেখা, অন্য কোনো দ্বীপে গিয়ে মাছ ধরা, গভীর সমুদ্রে কোরাল দেখাসহ নানা অভিজ্ঞতা অর্জনের দারুণ সুযোগ রয়েছে।

ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে সপরিবার লেখক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত
ইগলের দ্বীপ লংকাবিতে সপরিবার লেখক। ছবি: লেখকের মাধ্যমে প্রাপ্ত

কীভাবে যাবেন

লংকাবিতে বিমানে যাওয়াই ভালো। কুয়ালালামপুর কিংবা সুবাং বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৩৫ কিংবা ৪০ মিনিটে লংকাবিতে পৌঁছানো যায়। তবে যাঁরা সময় নিয়ে ঘুরতে আসেন, তাঁরা বাসে করে যেতে পারেন। কুয়ালালামপুরের টিবিএস (বান্দার তাসিক সেলাতান) থেকে বাসে কলা পেরলিস। তারপর ফেরিতে লংকাবির কুয়া ফেরিঘাটে পৌঁছে যেতে পারেন নির্ধারিত হোটেলে।

সময় আর অর্থ দুটিই বেশি থাকলে লংকাবি ভ্রমণটা আপনার কাছে সেরা ভ্রমণের একটি হয়ে থাকবে। অবসর কাটাতে যাঁরা সবকিছু ছেড়ে শুধু প্রকৃতির মাঝে কিছুটা ভালো লাগার সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য ইগলের দ্বীপখ্যাত লংকাবিই উপযুক্ত স্থান।