অস্ট্রেলিয়ায় বনে-বাদাড়ে

ওল্ড ফোর্ড রোডের পাশের উঁচু পাথরের চাঁই
ওল্ড ফোর্ড রোডের পাশের উঁচু পাথরের চাঁই

আমার ছেলে রায়ান রাতে ঘুমাতে যায় দেরি করে। যতক্ষণ জেগে থাকে, সারাক্ষণ কোনো না কোনো কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আরও যখন ছোট ছিল, মাঝেমধ্যে রাতেরবেলা খুব কান্নাকাটি করত। তখন ওকে গাড়ির পেছনের সিটে বসিয়ে আশপাশের এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করতাম। এখনো প্রায় রাতেই ওকে নিয়ে বের হতে হয়।

প্রথম যেদিন রায়ানকে গাড়িতে নিয়ে বের হয়েছিলাম, সেদিন একটা নতুন রাস্তায় ঢুকে পড়েছিলাম। ঘন বনের মধ্য দিয়ে রাস্তা। একটু পরেই সাপের মতো আঁকাবাঁকা শুরু হয়ে গেল। সত্যি কথা বলতে, সেই রাতে আমি কিঞ্চিৎ ভয়ই পেয়েছিলাম।

কেইথ লংহার্স্ট রিজার্ভে ওঠানামার সিঁড়ি
কেইথ লংহার্স্ট রিজার্ভে ওঠানামার সিঁড়ি

সেই আঁকাবাঁকা রাস্তা একটা সময় অন্য একটা রাস্তার সঙ্গে গিয়ে মিলল। কী মনে করে আমি বাঁয়ের দিকের রাস্তাটা ধরলাম। রাস্তার দুই পাশে ঘরবাড়ির সংখ্যা একেবারেই কম। আর বাড়িগুলো মূল রাস্তা থেকে অনেক দূরে। ডানে-বাঁয়ে তাকিয়ে দেখলাম সেই সব বাড়ির বাইরে আলো জ্বলছে, কিন্তু বাড়ির মধ্যে কেউ জেগে আছে বলে মনে হলো না। কারণ, তখন রাত ১০টা বেজে গেছে।

অস্ট্রেলিয়ার লোকজন খুবই নিয়মানুবর্তী জীবন মেনে চলেন। আমাদের ছোটবেলায় পড়া ‘আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইজ, মেকস এ ম্যান হেলদি ওয়েলদি অ্যান্ড ওয়াইজ’ কথাটার মতো। এখানে রাত ১০টা মানে গভীর রাত।

আমি ডানে-বাঁয়ে তাকিয়ে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। এমনিতেই নতুন রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে গতিবেগ কমে যায়। আর আমি যেহেতু আশপাশ দেখতে দেখতে চালাচ্ছিলাম, তাই গতিবেগ আরও কম ছিল। অবশ্য ওই রাস্তায় কোনো গাড়িও ছিল না, তাই তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না।

এভাবে চলতে চলতে একটা জায়গায় এসে রাস্তাটা শেষ হয়ে গেল। সেই জায়গাটা একটা বৃত্তাকার পথের মতো। এক দিক দিয়ে এসে অন্য দিক দিয়ে ঘুরে যাওয়া যায়। আমার বেশ ভয় করছিল। কারণ, চারপাশেই ঘন ও উঁচু বৃক্ষরাজি। তবু সাহস করে গাড়ি থামালাম। গাড়ি থেকে নেমে বাইরের দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলাম। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ আমাদের দিকে চেয়ে হাসছে।

অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলোতে কখনোই তেমন বিদ্যুৎ-বিভ্রাট হয় না। তাই ভরা পূর্ণিমার চাঁদকে আলাদাভাবে দেখা সম্ভব হয় না। আমি শহরের মধ্যে অনেক সময় পূর্ণিমার চাঁদের ছবি তুলতে গিয়ে লক্ষ করেছি সেটার উজ্জ্বলতা অনেকটা রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্টের আলোর কাছে হার মেনেছে। আমার খুব ইচ্ছা করে পূর্ণিমার রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় যদি শহরগুলোতে ব্ল্যাক আউট করে দেওয়া যেত, তাহলে যান্ত্রিক নগরের বাসিন্দারা বুঝতে পারতেন, এই পৃথিবী কত সুন্দর। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা কত আনন্দময়।

যা হোক, উঁচু গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে জ্যোৎস্না এসে খোলা জায়গাটার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অবয়ব তৈরি করছে। আমি মুগ্ধ বিস্ময়ে সেদিকে একবার দেখি, আবার চাঁদের দিকে দেখি। চাঁদের আলো ও সূর্যের আলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো, চাঁদের আলো নরম ও কোমল। আর সূর্যের আলো প্রচণ্ড ও তীব্র। তাই সূর্যের দিকে না তাকাতে পারলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকা যায়।

জর্জেস নদীর কিনারে পাথরের চাঁই
জর্জেস নদীর কিনারে পাথরের চাঁই

এভাবে কতক্ষণ পার হয়েছে জানি না। হঠাৎ রায়ান চিৎকার করে জানিয়ে দিল সে ঘুমায়নি। তার চিৎকারে আমি সংবিৎ ফিরে পেলাম। তারপর আবার ফেরার পথ ধরলাম। পরদিন রাতে আমি আবার সেখানে যাই। এর আগে মেয়ে তাহিয়াকে বলেছিলাম, তোমাকে আজ মজার একটা জায়গায় নিয়ে যাব। তাহিয়া সবকিছুতেই আমাকে উৎসাহ দেয়। সে শুনেই হইহই করে উঠল।

এরপর থেকে আমরা কারণে অকারণে ওই জায়গাটায় যেতাম। কিছুদিন আগে একদিন আমরা সবাই বিকেলবেলা গিয়ে হাজির হলাম। তখন দেখলাম, যেখান থেকে পাকা রাস্তা শেষ হয়ে বনের শুরু হয়েছে, সেখানে বনের মধ্যে যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা দুই দিকে চলে গেছে। বনের মধ্যে হেঁটে বেড়ানোর জন্য এই রাস্তাগুলোকে বলা হয় বুশওয়াকিং ট্র্যাক। একটার শুরুতে নামফলকে লেখা ওল্ড ফোর্ড রোড আর অন্যটার নামফলকে লেখা কেইথ লংহার্স্ট রিজার্ভ।

জর্জেস নদীর পানি ওপর থেকে নিচে পড়ে তৈরি করেছে ছোট ঝরনা
জর্জেস নদীর পানি ওপর থেকে নিচে পড়ে তৈরি করেছে ছোট ঝরনা

আমরা ওল্ড ফোর্ড রোড ধরে হাঁটা শুরু করলাম। কিছুদূর হাঁটার পর সেটা ঢালু হয়ে সমকোণে নিচের দিকে চলে গেছে। আমরা সেটা ধরে এগোচ্ছিলাম। কিন্তু তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল। তাই শেষ পর্যন্ত না গিয়ে আমরা ফিরে এসেছিলাম। এরপর নাগরিক ব্যস্ততায় অনেক দিন সেখানে যাওয়া হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ায় এখন ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে। শীতের শেষ আর বসন্তের শুরু। সকালে অনেক ঠান্ডা। কিন্তু রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। একদিন আমি সকালবেলা শীতের পোশাক না পরেই বের হয়ে ঠান্ডা লাগিয়ে ফেললাম। ঠান্ডার সঙ্গে গলাগলি ধরে এল ভয়ংকর কাশি। আমার কাশি দেখে বস বললেন, তুমি তো দেখছি অফিসের সবাইকে অসুস্থ বানিয়ে দেবে। তুমি ছুটি নাও আর কাশি না সেরে অফিসে এসো না।

পরদিন সকালবেলা গিন্নি কাজে আর মেয়ে তাহিয়া স্কুলে চলে যাওয়ার পর আমি দুর্বল শরীরে রায়ানকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। রায়ানেরও ঠান্ডা লেগেছে। সেও আমার মতোই কাশছিল। কিন্তু এত সকালে মেডিকেল সেন্টার খোলা পাওয়া যাবে না। এ কারণেই সময়টা কাজে লাগালাম।

জর্জেস নদীর রোডের শেষ প্রান্তে পৌঁছে কেইথ লংহার্স্ট রিজার্ভের রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলাম। এই রাস্তাটা মোটামুটি সমতল। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি গাছ দাঁড়িয়ে। কিন্তু গাছের বাকলগুলো কেন জানি কালো। পরে বুঝতে পারলাম, এগুলো বুশ ফায়ারের ফল।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছরই গ্রীষ্মকালে বনগুলোতে আগুন লাগে। যেটাকে স্থানীয় লোকজন বলে বুশ ফায়ার। বুশ ফায়ারে বনের পর বন পুড়ে উজাড় হয়ে যায়। তারপর গাছগুলো আবার বেঁচে ওঠে। তেমনি ওখানকার গাছগুলো আবার বেঁচে উঠেছে। কিন্তু পোড়া বাকল রয়ে গেছে। অনেক ইউক্যালিপটাসগাছের ভেতরের ফাঁপা অংশ পুড়ে কালো হয়ে আছে। কিন্তু বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না। আবার বেশ কিছুর কাণ্ড ভেঙে পড়েছে। শুধু মাটির ওপরের কিছু অংশ দাঁড়িয়ে আছে।

আমি রায়ানকে সঙ্গে নিয়ে বনের ভেতর দিয়ে হাঁটছিলাম, তখন রায়ানের উৎসাহই বেশি দেখা যাচ্ছিল। আমি ওর পেছন পেছন হাঁটছিলাম। কিছুদূর পরপর পাথরের চাঁইয়ের ভেতর দিয়ে পায়ে হাঁটার রাস্তাটা সামান্য নিচে নেমে গেছে। বেশ কয়েকটি পাথরের চাঁই পেরিয়ে আমরা যেখানে পৌঁছলাম, সেখানে ঝরনার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সামনের দিকে তাকিয়ে জর্জেস নদীর অন্য পাশের পাহাড় দেখতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু ঝরনাটা দেখা যাচ্ছিল না। পরে খুঁজে পেলাম। গাছের পাতার আড়ালে ঢাকা পড়েছিল।

জর্জেস নদীর শান্ত প্রবাহ
জর্জেস নদীর শান্ত প্রবাহ

ভাবছিলাম ঝরনার পানিতে নামব কি না। নামা হয়তোবা যাবে, কিন্তু ওঠার সময় যদি রায়ানকে কোলে বা কাঁধে নিয়ে উঠতে হয়, তাহলে মুশকিলে পড়ে যাব। এর মধ্যে দেখি রায়ান পাথরের ফাঁকের কাঠের গুঁড়ির সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করেছে। আমি ওর পিছু নিলাম।

কাঠের গুঁড়ির সিঁড়িটা এঁকেবেঁকে নিচে নেমে গেছে। আমি রায়ানের হাতটা শক্ত করে ধরে রাখলাম। পুরো পথটা রায়ান একাই হেঁটে গেল। নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে একটা শীতল বাতাস আমাদের শরীরটা জুড়িয়ে দিল। আমরা হঠাৎ করে এসেছি, তাই দুজনই স্যান্ডেল পরে এসেছি। কিন্তু ওখানে জুতা পরে যাওয়াই ভালো। হাঁটতে সুবিধা হয়।

জর্জেস নদীর পানি ওখানে পাথরের ওপর থেকে নিচে পড়ে একটা ছোট ঝরনার মতো তৈরি করেছে। তারই এক কোনায় আবার একটা ঘূর্ণি তৈরি হয়েছে। আশপাশে কোনো জনমানবের চিহ্ন নেই। ঝরনার পানির শব্দ, পাখিদের কুহুতান আর বাতাসে গাছের পাতার নড়াচড়ার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। নেই কোনো আধুনিক সভ্যতার চিহ্নও।

আমরা স্যান্ডেল খুলে পানির মধ্য দিয়ে অপর পাড়ে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় রায়ানকে কোলে নিয়ে নিলাম। কারণ, পাথরের ওপর শেওলা জমে অনেক পিচ্ছল হয়ে আছে। নদীর অপর পাশ থেকে পানি নিচে পড়ার দৃশ্যটা আরও সুন্দর দেখাচ্ছিল। এই পাড়ে ফিরে আসার সময় রায়ানকে আর কোলে নিলাম না। সে অবলীলায় হেঁটে পার হয়ে এল। একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পিছলে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। আমি ওর হাত শক্ত করে ধরে ছিলাম, তাই কোনো অঘটন ঘটেনি।

ফেরার সময় এক ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হলো। তিনিও বললেন, এই জায়গাটা আসলেই সুন্দর। তিনি দৌড়ের প্র্যাকটিস করছিলেন। আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন দ্রুতই। ওপরের ওঠা নিয়ে আমি দুশ্চিন্তায় ছিলাম। মুহূর্তেই তা দূর হয়ে গেল। কারণ, রায়ান নিজে থেকেই অনেক স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওপরে ওঠা শুরু করে দিল। বরং আমারই ওপরে উঠতে কষ্ট হচ্ছিল। রায়ান কিছুদূর গিয়ে থামে। আমি নিজেকে কিছুটা এগিয়ে নিই। এভাবে একসময় ওপরে এলাম।

ওপরে এসে সেই ভদ্রলোকের সঙ্গে আবারও দেখা হলো। তখন দেখি তাঁর গায়ে কালো পোশাক। তাতে অনেক পকেট। এ ধরনের পোশাক সাধারণত সেনারা পরেন। পোশাকের পকেট গুলির ম্যাগাজিন রাখার জন্য। আমি ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কেন পরেছ? তিনি বললেন, এর মধ্যে এখন ১০ কেজি ওজন আছে। প্রথমে ১০ কেজি, এরপর ২০ কেজি, সবশেষে ৩০ কেজি ওজন নিয়ে আমি প্র্যাকটিস করি।

এ সময় দেখি অন্য রাস্তা দিয়ে আরেক মধ্যবয়সী ভদ্রলোক এলেন। আমি তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, এই রাস্তাটা দিয়ে আমরা এর আগে একবার যেতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কিছুদূর গিয়ে ফিরে এসেছি। এই রাস্তাটা কি অনেক লম্বা। শুনে তিনি বললেন, হ্যাঁ, একটু বেশিই লম্বা। কিন্তু পাশের পাহাড় দেখতে দেখতে তুমি কখন যে শেষ মাথায় পৌঁছে যাবে, বুঝতেই পারবে না।

সেদিন আমি ওই রাস্তা ধরে যাইনি। পরদিন ওই রাস্তা ধরে যতই এগিয়ে যাচ্ছিলাম, ততই মুগ্ধ হচ্ছিলাম। পাথর কেটে কেটে রাস্তা বানানো হয়েছে। রাস্তার পাশেই পাথরের ঢাল। আবার রাস্তার নিচেও পাথরের ঢাল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এসব পাথরের মধ্যেও অনেক বড় বড় গাছ জন্মেছে। সেগুলো স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে।

চলার পথে দেখা মিলবে এমন গুহার মতো পাথর
চলার পথে দেখা মিলবে এমন গুহার মতো পাথর

রায়ান আর আমি পাথরের ফাঁকে লুকোচুরি খেলতে খেলতে এগোচ্ছিলাম। একসময় আমরা জর্জেস নদীতে পৌঁছে গেলাম। এখানে প্রবাহটার তেমন কোনো ছন্দপতন নেই। কারণ, মোটামুটি সমতল পাথরের ওপর দিয়ে নদীটা বয়ে চলেছে। আমরা ঘাসের মধ্য দিয়ে এগিয়ে পাথরের ওপর গিয়ে শুয়ে পড়লাম। পাশেই পানির প্রবাহ। আমাদের দেখে একটা গিরগিটি পাথরের আড়ালে সরে গেল। এই গিরগিটিগুলো দেখে মোটেও ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, এগুলো নিভৃতচারী। বাংলাদেশে গ্রাম এলাকায় আমরা এগুলোকে অঞ্জনি বলতাম। মানুষ দেখলেই পালিয়ে যায়। এমনকি সেখানে আমরা বাংলাদেশের আলোকলতারও দেখা পেলাম।

বনে-বাদাড়ে দুটি দিন ঘোরাঘুরি করে একটা পুরোনো উপলব্ধিই আবার নতুন করে হলো, সেটা হচ্ছে মানুষ জন্মগতভাবেই প্রকৃতিপ্রেমিক। তবে যতই তার বয়স বাড়তে থাকে, ততই নগরকেন্দ্রিক ব্যস্ততা বাড়ে ও প্রকৃতি থেকে সরে যেতে থাকে। রায়ানের বয়স এখন চার বছর। তাই হয়তোবা ওর মধ্যে প্রকৃতিপ্রেম এখনো এতটা প্রকট।

বন, পাহাড়, নদী—এগুলো এমনই জায়গা, যেখানে বারবার যাওয়া যায়। আমি পরে আরও একবার গিয়েছি তাহিয়াকে সঙ্গে নিয়ে। তাহিয়াও জায়গাটা অনেক পছন্দ করেছে। যেদিন তাহিয়াকে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেদিন একটা নতুন পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তারা আমাকে বললেন, যেহেতু তুমি এমন জায়গা পছন্দ করো, এই অ্যাপটা ইনস্টল করে নাও। বলে তিনি তাঁর মোবাইল ফোনে থাকা অ্যাপটা আমাকে দেখালেন। চাইলেই সহজেই এই অ্যাপ দিয়ে এমন বন, পাহাড়, নদী খুঁজে নেওয়া যায়। অ্যাপসটির নাম এনএসডব্লিউ পার্কস অ্যাপ।

যাঁরা এসব জায়গায় বেড়াতে চান, তাঁদের একটা বিষয় জানা জরুরি। সেটা হচ্ছে অনেক স্থানে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক থাকে না। তাই দল বেঁধে যাওয়াই উত্তম। আর হাঁটার সুবিধার জন্য অবশ্যই কেডস পরে যেতে হবে। সঙ্গে একটা ব্যাকপ্যাকে পানির বোতল বা প্রয়োজনীয় কিছু খাবারও নিতে হবে।