এক পারিবারিক দুর্গোৎসবের কথা

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

মেলবোর্নের চক্রবর্তী পরিবারটি এখনো এই প্রবাসেও মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে পুরোনো দিনের এক সুখী একান্নবর্তী পরিবার।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

এই বাড়ির ‘মা’ কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও ‘বাবা’ অজয় চক্রবর্তী। পুত্র সানি সঞ্জয়, পুত্রবধূ ঊর্মি ভট্টাচার্য, কন্যা ইতিকা ইতু ও জামাতা চন্দন তাঁদের কিছু বন্ধুবান্ধব নিয়ে পাঁচ বছর আগে প্রথম শুরু করেন এক ঘরোয়া দুর্গাপূজা।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

সেই প্রথম বছরেই তিথি-নক্ষত্র মেনে, দেশ থেকে পুরোহিত এনে, নিয়মনিষ্ঠায় করেন পূজা পালন। আন্তরিক আতিথেয়তা ও সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক আবহ ‘কৃষ্ণা কুটির’–এর এই আয়োজন সবাইকে একঝলকে নিয়ে যায় অন্যরকম এক উৎসব অভিজ্ঞতায়!

সেই শুরু। তাঁরা ভেবেছিলেন বছর তিনেক এই ঘরোয়া আয়োজন চালিয়ে যাবেন। কিন্তু না; আর থামতে পারেননি।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

গত বছর বাড়ি পরিবর্তনে মেলবোর্নের মূল শহর থেকে অনেকখানি দূরে চলে গেলেও, মানুষের ভালোবাসা তাঁদের সবার কাছেই রেখেছে। ফি বছর শারদীয় পুজো এলে, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে মানুষের ঢল নামে কৃষ্ণা কুটিরে। প্রতি বছর শখানেক মানুষ যেন আরও বাড়ছে এই আয়োজনে।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের জিজ্ঞাসা করলে জানা যায়, এখানে আসতে তাঁদের ভালো লাগে। কারণ শৈশবের বাড়ির পূজার অনুভূতিটুকু এই উৎসবে ফিরে পান। ঘরোয়া আয়োজনে গানবাজনা, মিষ্টিমধুর খানাপিনা তো আছেই; সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে পরিচিত অনেকের সঙ্গে এক আড্ডাতেই মিলনের সুযোগ হয়।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

প্রবাসীর দুর্গাপূজা মানেই বিশাল কোনো হলরুম ভাড়া করে মণ্ডপ বানিয়ে শ তিন–চার মানুষের আনন্দযজ্ঞের আয়োজন। দেশে পাড়ার মন্দিরে মন্দিরে আয়োজিত পুজোর সঙ্গে এর কিছুটা মিল পাওয়া যায়। প্রবাসের মাটিতে এটুকুও কিন্তু কম কিছু নয়। তবু আবেগপ্রবণ মানুষের মন পড়ে থাকে, বনেদি ধারায় পালিত সেই বাড়ির পুজোয়।

মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত
মেলবোর্নে কৃষ্ণা কুটিরের দুর্গোৎসবের একটি দৃশ্য। ছবি: জান্নাতুল ফেরদৌসের মাধ্যমে প্রাপ্ত

বাড়ির নিজস্ব পূজামণ্ডপে, দেশীয় আবহে, শয়ে শয়ে মানুষকে পুজোৎসবের অংশ করে কৃষ্ণা কুটিরের এই উদ্যোগ তাই হয়ে উঠছে ব্যতিক্রমী এক মিলনমেলার জমাটি আয়োজন। ক্রমেই চক্রবর্তী পরিবারের এই পারিবারিক আয়োজনটি হয়ে উঠছে মেলবোর্নপ্রবাসী বাঙালির আকাঙ্ক্ষিত এক বিনোদন।
–––

জান্নাতুল ফেরদৌস নৌজুলা: ব্যাকাশ মার্শ, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া।