স্ট্রেসের মানে কী

প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স

আমার এক জার্মান প্রতিবেশিনী তিন দিন আগে এসেছিলেন আমার বাসায়। আমি তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিলাম ডিনারে। সঙ্গে তাঁর মাও এসেছিলেন। ভদ্রমহিলার একটু বয়স হয়েছে।

ভদ্রমহিলা বেশ মজার মজার জোক করেন। আমি নিজে জোক পছন্দ করি। তাই প্রতিবেশিনী কমেন্ট করলেন, বাহ্‌, রতনে রতন চিনে।

কোনো ভদ্রমহিলার বয়স জিজ্ঞেস করা চরম অভদ্রতা। তবুও লজ্জার মাথা খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি উত্তর দিলেন, আমি এখনো ইয়ং, মাত্র ৯৮।

আমি তাঁকে বললাম, রহস্যটি কী?

তিনি বললেন, আপনিই বলুন না।

আমি আমার মগজ খাটিয়ে সক্রেটিসের মতো বাণী ছাড়লাম—আপনি খুব কম খান। তাই না?

তিনি মাথা নাড়লেন।

: আপনি প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমোন।

: হ্যাঁ, তবে এটা কোনো কারণ নয়।

: আপনি সারাক্ষণ চলাফেরা করেন। কখনো বসেন না।

: তা ঠিক, তবে আসল কারণ, আমি কখনো স্ট্রেসকে স্ট্রেস হিসেবে নিই না।

: এটা কীভাবে সম্ভব? আমি বললাম।

: খুব সহজ। আমরা খুব তাড়াতাড়ি রেগে যাই। কেউ মনে ব্যথা দিলে সারা দিন মন খারাপ করি। এর কোনো মানে আছে? আচ্ছা ধরুন, আপনার ডাক্তার আপনাকে আজকে বললেন, ম্যাক্সিমাম ছয় মাস আপনি বাঁচবেন, আপনি কি এক মুহূর্তও খারাপ মুডে থাকবেন? কখনোই না, তাই না।

জানেন, আমি যখন সকালে উঠি, খোদাকে বলি, খোদা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ, তুমি আমাকে আরেকটি দিন দিলে এই সুন্দর পৃথিবীতে। আজকের দিনটি আমি উপভোগ করব। যতই বাধা আসুক না কেন।

আমার কানে যেন রবীন্দ্রসংগীত বেজে উঠল, ‘দু বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না’।

আমি থ হয়ে গেলাম। করিডরে বড় আয়নাটির সামনে দাঁড়ালাম। কপোলে আর কপালে বার্ধক্যের ছাপ।

ভদ্রমহিলা আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন, ডোন্ট ওরি ওল্ড ম্যান, হাসবেন, দেখবেন ইয়ং হয়ে যাবেন।