বাংলাদেশ ও সিশেলসের মধ্যে জনশক্তি চুক্তি স্বাক্ষর

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইমরান আহমদ ও মিস মারিয়াম তেলেমাক। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, মরিশাস
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইমরান আহমদ ও মিস মারিয়াম তেলেমাক। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, মরিশাস

পূর্ব আফ্রিকার দেশ সিশেলসে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণ বিষয়ে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) সিশেলেসের রাজধানী ভিক্টোরিয়াতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। সিশেলস সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন দেশটির এমপ্লয়মেন্ট, ইমিগ্রেশন ও সিভিল স্ট্যাটাস মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মিস মারিয়াম তেলেমাক।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদসহ বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সিশেলস সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া সাময়িক বন্ধ রাখে। এরপর উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাসসহ একটি সুশৃঙ্খল ও কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ায় সিশেলসে কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যে দুই দেশ শ্রম সহায়তা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করে।

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মার্চ মাসে সিশেলস সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে। দলটি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে টেকনিক্যাল সভায় মিলিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল।

ইমরান আহমদ ও মিস মারিয়াম তেলেমাক চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর তা বিনিময় করেন। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, মরিশাস
ইমরান আহমদ ও মিস মারিয়াম তেলেমাক চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর তা বিনিময় করেন। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, মরিশাস

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ইমরান আহমদ আশা প্রকাশ করেন, চুক্তিটি স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের মধ্যে শ্রমবাজারসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সফরকালে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও মন্ত্রীকে চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সিশেলসে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছেন। দেশটির নির্মাণশিল্পে অধিকাংশ কর্মী কাজ করে থাকেন। এ ছাড়া হোটেল, ট্যুরিজম, স্বাস্থ্যসেবা, হাউস কিপিং, কুক, ভিলা অ্যাটেডেন্ট, কৃষি খামার, পোলট্রি খামার প্রভৃতি খাতেও বাংলাদেশি কর্মীরা কর্মরত আছেন। ফিশিং ও ফিশ ইন্ডাস্ট্রিজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ট্যুরিজম খাতে বাংলাদেশি কর্মীদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরাই দেশটির বৈদেশিক শ্রম বাজারের অন্যতম প্রধান অংশীদার।

সফরকালে মন্ত্রী ইমরান আহমদ গত রোববার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মতবিনিময়কালে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাঁদের সুযোগ-সুবিধা ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে এ দেশে আমাদের শ্রমশক্তির একটি বাজার গড়ে উঠেছে এবং চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এ শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য আরও উন্মুক্ত ও সম্প্রসারিত হবে।’

মন্ত্রী সিশেলসে অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে তাঁদের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন। বিজ্ঞপ্তি