সর্বাধিক প্রেরণকারীকে সম্মাননা দেওয়া হবে

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, যুক্তরাজ্য
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেবে দেশটির বাংলাদেশ হাইকমিশন। লন্ডনে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

‘ইনসেন্টিভাইজিং রেমিট্যান্স ফ্রম দ্য ইউকে: মাইলস্টোন ইনিশিয়েটিভস অব প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এই আলোচনা গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম জানান, যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে। ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন এই সম্মাননা প্রদান করবে।

সাইদা মুনা তাসনীম আরও বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে। এ জন্য তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আরও বাড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী আয়ের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আশা করেন, প্রণোদনা দেওয়ার ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আগামী বছর রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে ২০টির বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বৈধ পথে প্রবাসীরা যত খুশি রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন। এই রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রতি ট্রানজেকশনে ১ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি না হলে যুক্তরাজ্যে বা বাংলাদেশে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলবে না। বরং প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা রেমিট্যান্স প্রেরণকারীকে দেওয়া হবে। এ জন্য ইতিমধ্যে সরকার ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাইদা মুনা তাসনীম। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, যুক্তরাজ্য
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন সাইদা মুনা তাসনীম। ছবি: বাংলাদেশ হাইকমিশন, যুক্তরাজ্য

অর্থমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্সের ওপর এই প্রণোদনা জুলাই ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে। কাজেই যাঁরা ওই সময় থেকে বাংলাদেশে বৈধ পথে টাকা পাঠিয়েছেন, তাঁরা রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের প্রাপ্য প্রণোদনা গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে পারেন।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। বিশ্বের আর কোনো দেশের প্রবাসীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন না। তিনি জানান, রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধাগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত হাইকমিশনারের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন বন্ডের কথা উল্লেখ করে প্রবাসীদের এসব বন্ডে বিনিয়োগে পরামর্শ দেন। মন্ত্রী জানান, আগামী মাসে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বাংলা টাকা বন্ড চালু করা হচ্ছে। যা প্রবাসীদের বিনিয়োগের একটি বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রায় ১৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০টি অঞ্চলের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি লাভবান হতে পারেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে রেমিট্যান্স হাউসের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে প্রবাসী আয়ের ওপর প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, এই প্রণোদনার জন্য বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের পরিমাণ বাড়বে। তাঁরা এ ক্ষেত্রে সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করার পরামর্শ দেন। বিজ্ঞপ্তি