আমি অন্ধ চোখে আবার এসে দাঁড়ালাম রাস্তার পাশে

একদিন রাস্তায় নেমেছিলাম

একদিন পথের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম
একদিন ঘুরতে বেড়িয়ে ছিলাম, হাতে ছিল সাদাছড়ি।
এই জন্মান্ধ আমি বাতাসের গতি বুঝে চিনেছিলাম পথ,
মানুষের গায়ের সুবাস নিয়ে জেনেছিলাম সম্পর্ক।
নিশ্বাসের শব্দে বুঝে নিতাম ভালোবাসা, বিশ্বাস।

বহু বছর পরে একদিন দৃষ্টি ফিরে পেলাম আমি।
কিন্তু আমাকে ছেড়ে যেতে থাকে আমার বিশ্বাস, ভালোবাসা!
পথের কাছে গিয়ে দাঁড়ালে দেখি-মৃত মানুষের হাড়গোড়
শুনতে পাই বিচার না পাওয়া আত্মার অভিশপ্ত কণ্ঠ
মানুষ দেখে সম্পর্ক বুঝতে ভুল হয়
চোখের চাহনিতে ভুল করি ভালোবাসা, বিশ্বাস।
বাতাসে ভেসে থাকে চেঙ্গিসের রাঙা চোখ
নিরীহ মানুষের রক্তে উতরাই জমিন।

ক্রমশ নষ্ট হতে থাকে আমার আত্মার আলো।
আমার আত্মা এখন আর চিনতে পারে না অলৌকিক অপার সৌন্দর্য।
যে আত্মা স্পর্শ করতে পারে পাতাদের সবুজ
সূর্য-আলোর ছন্দ, বৃক্ষের গান, পাখিদের বিনোদন
সে আত্মা ছাড়া মানুষের কল্যাণ অসম্ভব।

আমি আবার নিজের চোখের আলো কেড়ে নিলাম—
কোনো এক বিদ্রোহ ধনুকে রাখা তির দিয়ে।
কিন্তু ততটা সুখ আমাকে আলিঙ্গন করতে পারেনি—
যতটা সুখ আমি জন্মান্ধ থেকে পেয়েছিলাম।
চোখের ভেতর দিয়ে বুকে ঢুকে পড়া শোষকের অযাচিত শাসন—
আর নিষ্ঠুরতা আমার আত্মার আলোকিত সৌন্দর্য নষ্ট করেছে।
যে সৌন্দর্য মানুষ ইচ্ছে করলেই ফিরে পায় না—
তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ ছাড়া।

আমি অন্ধ চোখে আবার এসে দাঁড়ালাম রাস্তার পাশে
আর ফিরে পেতে চেষ্টা করলাম আমার আত্মার আলোকিত সৌন্দর্য।
---

কাজী সাইফুল ইসলাম: রিয়াদ, সৌদি আরব।