মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতিগত সংস্কৃতি উৎসবে বাংলাদেশ

নানা ধরনের খাবারে সজ্জিত স্টল
নানা ধরনের খাবারে সজ্জিত স্টল

সৌদি আরবের মক্কার ঐতিহ্যবাহী উম্মুল-কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হয়ে গেল জাতিগত সংস্কৃতি উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম প্রায় ৪০টি দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ জমকালো আয়োজনে লাল-সবুজের বাংলাদেশও অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে।

চার দিনব্যাপী (১১ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত) এই সংস্কৃতি উৎসব উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের পক্ষ থেকে ছাত্রবিষয়ক অনুষদের ডিন ড. উমর সুম্বুল।

‘কুল্লুল কুরা ফি উম্মিল কুরা তথা সমস্ত জনপদ মক্কায়’ শিরোনাম ধারণ করে আয়োজিত দৃষ্টিনন্দন এই অনুষ্ঠান আগত দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সহকারী ডিন, নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষক-ছাত্রদের আগমনে উৎসবে যেন আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে প্রায় ১৫টি দেশের কূটনীতিকেরা উৎসবে আগমন করেন। উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ড. আবুল হাসান ও শেষ দিন বৃহস্পতিবার জেদ্দা কনস্যুলেটের কাউন্সেলর কামরুজ্জামান ভূঁইয়া আগমন করেন। শিক্ষার্থীদের এমন অংশগ্রহণ দেখে তাঁরা অত্যন্ত বিমোহিত হন।

উৎসবে প্রতিটি দেশই নিজেদের সমাজ-সংস্কৃতি-সভ্যতা-রীতিনীতি ও দৈনন্দিন জীবনের সামান্য কিছু চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশের স্টলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড. আবুল হাসান
বাংলাদেশের স্টলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ড. আবুল হাসান

নিজ দেশের খাবার, দেশীয় উপকরণ ও জাতীয় পোশাক ইত্যাদি এই উৎসবে উপস্থাপনের মুখ্য দিক ছিল। অংশগ্রহণকৃত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশিদের আয়োজন ছিল অনেকটা ব্যতিক্রমী ও মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ।

‘দেশ-দেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগানে মুখরিত ছিল চারদিক। প্রতিটি ইভেন্টে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ ছিল দৃষ্টিনন্দন। প্যারেডে পুরো প্রদর্শন যেন ছেয়ে গেছে লাল-সবুজের পতাকায়। দেশের গ্রাম্য জীবনের কিছু খণ্ডচিত্র অভিনয়ে অভিনয়ে তুলে ধরা হয়েছে। দেশীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোর পরিচিতিসংবলিত স্থিরচিত্রে স্টলের দেয়ালে সাঁটানো ছিল। দেশীয় পোশাক, স্বদেশি নানা ধরনের খাবার, মিষ্টান্ন ও হরেক রকমের পিঠাপুলিতে পূর্ণ ছিল কর্নারটি। নবদুলার পরিচ্ছদ, দুলহানের জন্য ব্যবহৃত পালকি ও ঐতিহ্যবাহী ত্রিচক্র যান রিকশা ইত্যাদির উপস্থাপন ছিল উল্লেখযোগ্য।

দেশীয় সাজ ও বেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
দেশীয় সাজ ও বেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

উল্লেখ্য, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে বহিরাগত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। এর মধ্যে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী মিলিয়ে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী এমফিল, পিএইচডিসহ বিভিন্ন স্তরে সুনামের সঙ্গে অধ্যয়ন করছেন।

নাজমুল হুদা হারুন: শিক্ষার্থী, উম্মুল-কুরা বিশ্ববিদ্যালয়।