কাজরী নদী

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কাজরী নদী
নাজমীন মর্তুজা

আজ বসন্ত নয়
কোকিলের ডাক কানে শুনিনি
তবুও বলব—ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত।

জানি বলবে—আজ দোলপূর্ণিমার রাত নয়
তবুও আমি রং দিতে আসবই আসব।

তোমার আমার প্রেম
সে তো এক নদীকে ঘিরেই
যে নদীকে আমি ডাকি যামিনী বিভোর
সে নদীকে তুমি ডাকো কাজরী।

আমাদের সাতসতেরো
গল্পের রচনাকাল-ভূমিকা-উপসংহার
এক নদীকে ঘিরে।

কেবল ভালো লাগা-ভালো লাগা
এ ছাড়া আর কিছু বলার নেই অনর্থক
আমরা দুজনা সময়ের ভালো লাগা অভ্যাসের কাঙাল।

বাদ বাকি, সমাজ, অর্থনীতি, শিক্ষা-দীক্ষা
সাহসিকতা সৃজন ক্ষমতা যেন
অভিনয় পেশার মতো মেকআপের রঙে ঢাকা।

তোমার-আমার জীবনটাই এমন
মানুষে মানুষে ভরা প্রেম
তারই মাঝে সংসার, যদিও নিয়ম বাঁধা নয়
তবুও ভাঙাচোরা নদীর মতো নিরবধি
খেটেখুটে হোঁচট খেয়ে দাঁড়িয়ে
বেঁচেবর্তে থাকতে পারা।

চলো আজ মন ভেজাই
যামিনী বিভোর কাজরীর জলে।

মনে কর এক পলক চোখের দেখায়
আমার হাসি ধরা ছবি
হাসির শব্দেরা টাপুরটুপুর করে
ছন্দে ছন্দে পড়ছিল যামিনীর জলে।

তুমি পা টিপে টিপে চলে এলে
মনে হলো—হঠাৎ শোনা এক লাইনের গান
আমার হাসি তোমার পায়ের শব্দে।

আজও কি জানতে চাইবে—
প্রবাস বাসের সুখ কেমন?

জীবন দেখছি, যাপন দেখছি, বুঝছি
বহমানতাই জীবন, আর নিশ্চলতাই মৃত্যু
বাস্তবতার কাঠিন্যই বেঁচে থাকার শ্বাসকণা।

মমতা ভালোবাসা যা কিছু জড়িয়ে এসেছি
সবটুকুই খুঁজে পাবে যামিনী বিভোর জলের তলে দীর্ঘ অববাহিকায়।

জানি বলবে—কিছুই মনে পড়ছে না এখন!
কিন্তু আমি তো তোমার জীবনের প্রতিটি
স্তরবিন্যাসে কাজরীর জলে ভাসি।

যতই বলো না কেন শীত করছে না তোমার
তবুও আমি আজ যামিনী বিভোর জলে
ভোরের কুয়াশা হয়ে অপেক্ষায় থাকব।

নাজমীন মর্তুজা: অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া।