বাংলা ওয়াকিং ক্লাবের এবার মাল্টা সফর

মাল্টার কসপিকুয়া, সেংলিয়া ও ভিত্তোরিওসা শহর তিনটিকে বলা হয় থ্রি-সিটি। থ্রি-সিটিতে ভূমধ্যসাগরের নীল জলে ভ্রমণ আনন্দদায়ক। ছবি: লেখক
মাল্টার কসপিকুয়া, সেংলিয়া ও ভিত্তোরিওসা শহর তিনটিকে বলা হয় থ্রি-সিটি। থ্রি-সিটিতে ভূমধ্যসাগরের নীল জলে ভ্রমণ আনন্দদায়ক। ছবি: লেখক

শেষ হয়েছে বাংলা ওয়াকিং ক্লাব বেলজিয়ামের মাল্টা সফর। গত বছরের পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশো সফরের তুলনায় এবারের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ছিল একটু ভিন্ন। ওয়াকিং ক্লাবের স্বভাবজাত কর্মসূচি যেমন ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে হাঁটাহাঁটি, বিচ ওয়াক ইত্যাদি তো ছিলই, উপরন্তু যোগ হয়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, যা আনন্দকে অনেকাংশেই নিরানন্দে পরিণত করেছে।

নভেম্বর মাসে পশ্চিম ইউরোপের কনকনে শীত থেকে পালিয়ে দল বেঁধে কোথায় হাঁটতে যাওয়া যায়, সেই চিন্তা থেকেই পছন্দের তালিকায় উঠে আসে ভূমধ্যসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টার নাম। যার উষ্ণ আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, স্থাপত্য—সর্বোপরি স্বচ্ছ নীল লেগুনের প্রতি কার না আকর্ষণ আছে!

১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বেলজিয়ামের সারলেরোয়া বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেন বাংলা ওয়াকিং ক্লাবের সদস্যরা। ইতালির আকাশসীমা পার হয়ে বিমান যখন ভূমধ্যসাগরের আকাশে প্রবেশ করে, নিচে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। সবার মনে টান টান উত্তেজনা। কখন দেখা মিলবে সেই স্বপ্নদ্বীপের। বিমানের চাকা যখন মাল্টার ভূমি স্পর্শ করল, তখন রাত ১১টা। চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ট্যাক্সিতে করে মধ্যরাতের মাল্টার অন্ধকার ভেদ করে অবশেষে পৌঁছে যাই একটি ছোট শহরে, যার নাম বুজিব্বা। সেখান থেকেই পরবর্তী তিন দিন মাল্টা চষে বেড়াই।

পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর একটি মাল্টা। ৩১৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দেশের জনসংখ্যা মাত্র চার লাখ। তিনটি ছোট–বড় দ্বীপ—মাল্টা, গোজো ও কোমিনো নিয়েই মাল্টা দেশ।

আমাদের প্রথম দিনের প্রাতর্ভ্রমণ শুরু হয় বুজিব্বা শহরের কিনার ধরে ভূমধ্যসাগরের ফুরফুরে বাতাসে মনমাতানো পরিবেশে। ফিরে এসে হোটেলে নাশতা শেষে শুরু করি প্রথম দিনের কর্মসূচি। গন্তব্য ভাল্লেট্টা। মাল্টার বর্তমান রাজধানী। প্রায় সাড়ে চার শ বছর আগে এ নগরীর গোড়াপত্তন। গ্র্যান্ডমাস্টার জ্যঁ প্যারিজো দে লা ভালেট্টার নামানুসারে নগরীর নামকরণ করা হয়। বুজিব্বা থেকে ভাল্লেট্টার দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার হলেও বাসে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো। ভাল্লেট্টা পৌঁছে শুরু হবে সিটি ওয়াক। হালকা খাবার ও পানীয় সঙ্গে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে সবাই প্রস্তুত।

হোটেলের সামনেই বাসস্ট্যান্ড। বাস নম্বর ৪৫ টু ভাল্লেট্টা। যথাসময়ে বাস এসে থামল। একে একে সবাই উঠে গেলাম। সিট খালি নেই। কী আর করা, যেতে তো হবেই। হঠাৎ শুনি আমাদের সফরসঙ্গী খোকা ভাই চিৎকার করে বলছেন, তাঁর মানিব্যাগ খোয়া গেছে। তিনি তখনো চালকের সামনে তাঁর টিকিট স্ক্যান করছিলেন। একটু ভিড়ের মধ্যেই পকেটমার এ কাজ করে দ্রুত সটকে পড়েছে। তাৎক্ষণিক বাসচালককে অবহিত করা হলে তিনি ভাল্লেট্টা গিয়ে থানায় রিপোর্ট করতে উপদেশ দিলেন। মানিব্যাগে বেলজিয়ামের পরিচয়পত্রসহ ক্রেডিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, নগদ অর্থ ছিল। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। কী করব কিছুই বুঝে উঠে পারছিলাম না। খবরটা ইতিমধ্যেই তড়িৎ গতিতে বাসযাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। চেয়ে দেখি, সবাই নিজ নিজ পকেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রদানে ব্যস্ত। আমার মাথায় একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে—আইডি কার্ড ছাড়া তো ফিরতি ফ্লাইটে উঠতে দেবে না। পর মুহূর্তেই জানতে পারলাম, ব্যাকআপ হিসেবে উনি পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে এসেছেন, যা হোটেলের লকারে রয়েছে। খোকা ভাই আমাদের ক্লাবের একজন সিনিয়র সদস্য এবং আপাদমস্তক পরিপাটি মানুষ। তাঁর এহেন অবস্থায় আমরাও বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়ি। অপেক্ষা করি বাসটি কখন ভাল্লেট্টা পৌঁছাবে।

প্রাচীন রাজধানী মদিনা। ছবি: লেখক
প্রাচীন রাজধানী মদিনা। ছবি: লেখক

মিনিট পঞ্চাশের পর আমাদের বাস থামল ভাল্লেট্টার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। পাশেই সুবৃহৎ প্লাজা, যার মধ্যখানে শোভা পাচ্ছে ট্রিটন ফাউন্টেইন। ভাল্লেট্টাতে ঢোকার প্রধান প্রবেশপথ যেন আমাদের হাতছানি দিচ্ছে। সবার মন ইতিমধ্যেই একটু চাঙা হয়ে উঠেছে। কিন্তু সবার আগেই থানা–পুলিশ করতে হবে। ম্যাপ ধরে শুরু হলো আমাদের সিটি ওয়াক। ট্রিটন ফাউন্টেইন থেকে সরাসরি ভাল্লেট্টার প্রধান সড়ক রিপাবলিক স্ট্রিটে প্রবেশ করলাম। শুরুতেই রয়েল অপেরা হাউসের ওপেন এয়ার থিয়েটার ও আধুনিক স্থাপত্যের মাল্টার নতুন সংসদ ভবন। এভাবে শহরের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে রিপাবলিক স্কয়ার হয়ে সেন জর্জ স্কয়ারে পৌঁছে যাই। তার পাশেই রয়েছে গ্র্যান্ড মাস্টার্স প্যালেস। বর্তমানে প্রাসাদটির একটি অংশ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়। এর সন্নিকটেই রয়েছে পুলিশ স্টেশন। আর দেরি না করেই ঢুকে পড়লাম থানায়। পুলিশ রিপোর্ট করে তাড়াতাড়ি হাঁটতে বেরোতে হবে। ভাল্লেট্টা পুলিশের অপেশাদার আচরণের কারণে পুলিশ রিপোর্টে অনেক সময় চলে যায়। যা হোক, থানা–পুলিশ শেষ করে আবার হাঁটাহাঁটি শুরু করলাম। শহরের অলিগলি ঘুরে একসময় ফোর্ট সেন্ট এলমোর পাশে চলে আসি। খাড়া সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলেই ভূমধ্যসাগরের উত্তাল ঢেউ। দেখতে ভয়ংকর হলেও সৌন্দর্যের ঘাটতি নেই। নীল জলের সাগর থেকে বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে ভাল্লেট্টার পাথুরে পাদদেশে।

কিন্তু সমুদ্র ভ্রমণ না করেই কি ঘরে ফেরা যায়? পাশেই লয়ার বারাক্কার সবুজ উদ্যান পার হলেই ফেরিঘাট। সেখান থেকে আধুনিক ফেরিতে করা যায় থ্রি–সিটি ট্রিপ। কসপিকুয়া, সেংলিয়া ও ভিত্তোরিওসা—তিনটি শহরকে বলা হয় থ্রি-সিটি। ভাল্লেট্টা থেকে ফেরিতে আসা–যাওয়ায় সময় লাগে মিনিট পঞ্চাশের মতো। ভূমধ্যসাগরের নীল জলের বুক চিরে উত্তাল তরঙ্গে দুলতে দুলতে থ্রি-সিটি ভিজিট করে যখন ভাল্লেট্টায় ফিরে আসি, সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে দিগন্তরেখার প্রায় কাছাকাছি এসে পড়েছে। তাড়াতাড়ি করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ উঁচুতে আপার বারাক্কার গার্ডেনে উপস্থিত হয়ে অস্তগামী রক্তিম আলোয় মাল্টার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করি। এবার ফেরার পালা। সন্ধ্যায় বাসযোগে স্লিমা, সেন্ট জুলিয়ানের সাগরঘেঁষা রাস্তা ধরে আবার ফিরে যাই বুজিব্বা শহরের হোটেলে।

পরদিন ঘুম থেকে উঠেই বুজিব্বার সাগরপাড়ে জগিং করতে যাই। সঙ্গে ড. কুদ্দুস ও মার্তুজা কাদরী। বাংলা ওয়াকিং ক্লাব বেলজিয়ামের টি–শার্ট পরে শুরু হয় হালকা দৌড়। অতঃপর জগিং শেষ করে হোটেলে ফিরে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু করি। আজকের তালিকায় রয়েছে মাল্টার দক্ষিণ অঞ্চলের কিছু দর্শনীয় স্থান; যার প্রথমেই ছিল মধ্য মাল্টার প্রাচীন শহর মদিনা।

মদিনা হলো মাল্টার পুরাতন রাজধানী। আরব শাসনামলে মদিনার নামকরণ করা হয়। দূর থেকে দেখতে মদিনা অনেকটা মালভূমির মতো। মাত্র চার শ অধিবাসী–অধ্যুষিত শহরটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ওয়াকিং ক্লাবের সদস্যদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। হেঁটে হেঁটে শহর পরিদর্শনের বিকল্প নেই। শহরের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করেই দেখা মিলল ছোট ছোট কোর্ট, অলিগলি আর এর দুপাশের নান্দনিক স্থাপত্যসমূহ। স্থাপনাগুলো অধিকাংশই মধ্যযুগীয় এবং বারক স্থাপত্যরীতিতে প্রভাবিত। মদিনার সৌন্দর্যে আমরা অভিভূত। একসময় শহরের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাই। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২৫ মিটার উঁচু মদিনার প্রাচীর ঘেঁষা সুউচ্চ টেরাস থেকে মধ্য ও উত্তর মাল্টার বৃহৎ অংশ দৃশ্যমান হয়।

মাল্টার জুরিখ শহরের কাছে সমুদ্রের খাড়া তীরের গুহা ব্লু গ্রতো। ছবি: লেখক
মাল্টার জুরিখ শহরের কাছে সমুদ্রের খাড়া তীরের গুহা ব্লু গ্রতো। ছবি: লেখক

মদিনা থেকে বের হয়ে রাবাত শহর। সেখান থেকে বাসে চড়ে আরও দক্ষিণ দিকে রওনা দিলাম। গন্তব্য ব্লু গ্রতো। মাল্টার জুরিখ শহরের কাছে সমুদ্রের খাড়া তীরে এ গুহাগুলোর অবস্থান। উজ্জ্বল সূর্য কিরণে পানির ঘন নীল রং প্রতিফলিত হয় গুহার মধ্যে; যার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। আমরা যখন ব্লু গ্রতো প্যানোরমা পয়েন্টে পৌঁছে যাই তখন প্রচণ্ড বাতাস, সমুদ্র উত্তাল। ব্লু গ্রতোতে যাবার বোট সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তা জেনেও ঢাল বেয়ে অনেক নিচে সমুদ্রের কাছাকাছি চলে আসি। বোটগুলো ডাঙায় তোলা। আর পাশেই নীল জলের ঢেউয়ের নাচন। এক অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ, যা হৃদয়ে দাগ কাটে। আবার সিঁড়ি বেয়ে অনেক ওপরে উঠে এলাম। বাসের অপেক্ষায়। পরের গন্তব্য মারসাক্সলক।

মাল্টার দক্ষিণ–পূর্ব কোণে অবস্থিত মারসাক্সলক একটি সমুদ্রঘেঁষা ছোট শহর, যাকে জেলেপল্লি বললে ভুল হবে না। আমরা যখন ওখানে পৌঁছি, তখন প্রায় শেষ বিকেল। আমরা সমুদ্রের পাড়ে হাঁটাহাঁটি করতে লাগলাম। পাশেই রংবেরঙের জেলেনৌকাগুলো আপনমনে সমুদ্রের নীল জলে ঢেউয়ে দুলতে দুলতে আমাদের যেন স্বাগত জানাচ্ছিল। ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে এসেছে, এবার হোটেলে ফেরার পালা।

যথারীতি সকালের জগিংয়ের পর আমাদের তৃতীয় দিনের যাত্রা শুরু করি। এবারের গন্তব্য মাল্টার উত্তর–পশ্চিম দিকের গজো দ্বীপ; যার পাশেই ব্লু লেগুনখ্যাত কমিনো দ্বীপ। বাসে চড়ে সিরকেওয়া ফেরিঘাট। তারপর ফেরি ধরে যখন গজো দ্বীপে পৌঁছালাম, তখন সূর্য মাথার ওপরে। বাসে করে সমুদ্রপৃষ্ঠের বেশ ওপরে ভিক্টোরিয়া শহরে হাজির হলাম। ছোট শহরের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে পুরোনো সিটাডেল। পাহাড় সমান উঁচু। শুরু হলো হাঁটা। কেউ কেউ এত উঁচুতে পায়ে হেঁটে ওঠার চেয়ে নিচে পার্কে বসেই কাটিয়ে দিল। সিটাডেল দেখে নিচে নেমে এসে সমুদ্র স্নানের আশায় ছুটে গেলাম রামলা বিচে। পানি ঠান্ডা থাকায় তেমন জমেনি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, আবার ফেরার পালা।

শেষ দিনে ভ্রমণ নয়, ঘরে ফেরার পালা। বেলা দুইটার মধ্যে বিমানবন্দরে যাই। কিন্তু সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কষ্ট হলো ফাতিন আর আরশির কথা ভেবে। কথা ছিল সকালে হোটেলের সুইমিংপুলে ওদের নিয়ে সাঁতার কাটব। কিন্তু বিধি বাম। হোটেল থেকে চেক আউট করে সুইমিংপুলের সামনেই বসে অপেক্ষা করছি ট্যাক্সির জন্য। মনে হলো বিদায়বেলায় মাল্টা আমাদের জন্য অশ্রু বিসর্জন করছে। দেখতে দেখতেই ট্যাক্সি চলে এসেছে। বিদায় বুজিব্বা।

ব্রাসেলসগামী বিমানে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি। সন্ধ্যা নেমে এসেছে মাল্টায়। অন্ধকারে ছেয়ে গেছে চারদিক। পাইলট রানওয়ের দিকে এগিয়ে গিয়ে টেক অফ করার ঘোষণা দিয়ে সজোরো চলা শুরু করেছে। দেখতে দেখতে বিমান বাতাসে ভর করে ওপরে উঠে গেল। অপলক দৃষ্টিতে নিচে তাকিয়ে আছি। কেবল রাস্তার বাতিগুলো চোখে পড়ে। তা–ও আবার ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে নিমেষেই নিচের ঘুটঘুটে অন্ধকারে হারিয়ে গেল। বিদায় মাল্টা!

খেলাধুলা ও অবসরে বিনোদন—এই দুই উদ্দেশ্য সামনে রেখে গঠিত হয়েছে বাংলা ওয়াকিং ক্লাব বেলজিয়াম। নিয়মিত হাঁটাহাঁটির পাশাপাশি বছরে অন্তত একবার বিদেশ ভ্রমণের আয়োজন করে এ ক্লাব।