চিহ্ন

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

মেয়েটির নাম শ্রাবণ। যে–ই শোনে, সে–ই নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাল্টা প্রশ্ন করে, শ্রাবণী?

মেয়েটিকে তখন শুদ্ধ করে দিতে হয়। নামটি শ্রাবণী নয় শ্রাবণ। সে দাদুর কাছে শুনেছে, তার জন্ম নাকি শ্রাবণ মাসে। মা–বাবা দুজনই গদ্য-পদ্যের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। পরম আদরের কন্যার নামটাই রেখে দিলেন শ্রাবণ। তাঁদের ভাষ্যমতে অনেক মেয়ের নাম হতে পারে শ্রাবণী। কিন্তু শ্রাবণ নামের মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিষয়টা সত্যি। ২০ বছর বয়সী শ্রাবণ এই নামে আর কোনো মেয়েকে খুঁজে পায়নি।

মা–বাবাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। এত সুন্দর একটা নাম রাখার জন্য। কিন্তু তা আর দিতে পারল কই? মা–বাবা যে অজানা–অচেনা কোথাও হারিয়ে গেছেন!

১৯৭১ সালের জুলাই মাসে কোথা থেকে এক নৌকার মাঝিকে ধরে এনেছিলেন বাবা। কী চুক্তি করেছেন খোদা জানেন। মাঝি শ্রাবণ আর তার দাদুকে নিয়ে পাড়ি জমায় দূরে। কত দূর তা কি আর পাঁচ বছরের শ্রাবণ বোঝে? সে শুধু বুঝতে পেরেছিল, নৌকা ছুটবে ঠিক তত দূর, যেখানে গুড়ুম গুড়ুম গোলাগুলির ভয়ংকর শব্দগুলো থাকবে না। মৃত্যুর তীব্র ভয়ও থাকবে না। হয়তো সেখানে ভেসে আসবে না দাউ দাউ করে জ্বলে যাওয়া গেরস্ত বাড়ি, গোয়ালঘর, দোকানপাটের পোড়া গন্ধ। কিংবা কে জানে, হয়তো সেখানে শ্রাবণ শুনতে পাবে না তার জন্মদাত্রী মায়ের আর্তচিৎকার।

মায়ের চিৎকারের কথা মনে পড়লেই শ্রাবণ অস্বাভাবিক হয়ে যায়। ছোট একটা মফস্বল শহরে তারা থাকত। মা-বাবা দুজনই সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক ছিলেন। কিন্তু শ্রাবণের জন্মের পর তার মা কলেজের চাকরিটা ছেড়ে দেন। সারাটা দিন মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানো, মেয়েটাকে গুনগুন করে গান শোনানো, গল্পের বই পড়া, বেশ কাটছিল দিন।

কলেজের চাকরিটা ছেড়ে দেওয়ায় বাড়তি যে সময়টা পেয়েছিলেন, সে সময়কে কাজে লাগিয়ে লেখালেখিও করতেন। শ্রাবণের মনে পড়ে, তার মায়ের মূল আগ্রহের বিষয় ছিল বাংলা ভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা। শুধু মুক্তির গান গাইতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবে, কোথায়, কী বলেছেন, কী ঘোষণা দিয়েছেন, সব ছিল শ্রাবণের মায়ের আবেগের বিষয়। দেশপ্রেম ও স্বাধীনতাকে আঁকড়ে ধরে তৎকালীন বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকায় কলাম লিখতেন নিয়মিত।

পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার পক্ষে এবং বাংলাদেশ নামটিকে বৈশ্বিক মঞ্চে ঠাঁই দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁর কলামগুলো হয়েছিল প্রচণ্ড আলোচিত। আর ওই আলোচনাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়।

পূর্ব পাকিস্তানের বুকে পঁচিশে মার্চের কালরাত হানা দেবে, তা বাঙালি জাতির জন্য ছিল অকল্পনীয়। নির্বিচারে গণহত্যার সেই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাঙালি জাতি ভয়ে তটস্থ হয়ে গিয়েছিল। ঘরে ঘরে দুরুদুরু বুকে প্রতিটা মা-বোন নিজের ইজ্জত বাঁচানোর চিন্তায় অস্থির। অন্যদিকে, স্বামী–সন্তানদের নিরাপত্তা, আগামীকাল সকালটা চোখ মেলে তাকাতে পারবে কি না, সেইটাই যখন মানুষের মূল আশঙ্কা; শ্রাবণের মা তখন ঘরে বসেও স্বাধীনতাসংগ্রামে তৎপর।

চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে যখন স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সারা দেশে, শ্রাবণের আবছা আবছা মনে পড়ে তার মা-বাবার সে কী আনন্দ। সে কী উচ্ছ্বাস!

তার বাবাও প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে প্রতিদিন রেডিওতে শুধু খোঁজ রাখছেন পাকিস্তানি বাহিনীর কী অবস্থা আর মুক্তিবাহিনীর প্রস্তুতি কত দূর। এ রকম এক অকুতোভয় দেশপ্রেমিক মা-বাবার সন্তান শ্রাবণ কিছু বুঝুক আর না বুঝুক, মুক্তি চাই, বিজয় চাই, জয় বাংলা—এই শব্দগুলো আওড়াত খুব।

এমন দিনে বলা নেই, কওয়া নেই পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে কেউ একজন শ্রাবণের মায়ের কাগজে বের করা কলামগুলোর কপি পাঠাল।

সেদিন দুপুরের ঘটনা শ্রাবণ আজও ভুলতে পারে না। যদিও তার দাদু তাকে নিয়ে লুকিয়েছিলেন চালের ড্রামের ভেতরে। শ্রাবণ কিছু দেখতে পায়নি।

সে কেবল আর্তনাদ শুনেছে। সে তার বাবারও অনুনয়-বিনয় শুনেছে। সে পাকিস্তানিদের উর্দু ভাষায় গালাগালও শুনেছে। শুনেছে ভয়ংকরভাবে পায়চারি করা বুটের শব্দ। যে শব্দে হৃৎপিণ্ডকে সামলে রাখা দুষ্কর হয়ে পড়ে। তারপর সে চলন্ত গাড়ির শব্দ শুনেছে। শ্রাবণের ছোট্ট মন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল কোনো গুলির শব্দ শুনতে না পেয়ে। শ্রাবণ ভেবেছিল গুলির শব্দ হলেই বুঝি বিপদ। যেহেতু গুলি হয়নি, তাহলে বিপদ কেটে গেছে!

অনেকটা সময় পর ড্রাম থেকে দাদু তাকে বের করল। সে ভেবেছিল ডাইনিংরুমে গুনগুন করতে করতে মা গান গাইছে হয়তো। তাকে এতক্ষণ পর দেখে জাপটে ধরবে। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। ছোট্ট শ্রাবণ কল্পনাও করেনি যে সে তার মাকে আর কখনোই দেখবে না। শুনবে না মায়ের কণ্ঠে মুক্তির গান। কিংবা মায়ের মুখে তার নাম। শ্রাবণ দেখেছিল, তাদের বাড়ির সামনের খোলা রাস্তায় মায়ের শাড়ি। আর দেখেছিল তার বাবার চোখের শ্রাবণ ঢল।

লেখিকা
লেখিকা

তবু শ্রাবণ বুঝতে পারেনি আসলে কী হয়েছিল। বুঝেছিল অনেক বড় হওয়ার পর। যেদিন বুঝেছে সেদিন তার প্রচণ্ড আফসোস হলো, কেন সে বড় হয়েছে তা ভেবে। আরও একটা কারণে আফসোস হয় তার। সেদিন যদি শ্রাবণ বুঝত আর কোনো দিন মায়ের স্পর্শ পাবে না, রাস্তায় পড়ে থাকা মায়ের শাড়িটাই গায়ে জড়াত। শেষ চিহ্নের মতো করে শাড়িটি রেখে দিত তার সিন্দুকে, আর বুক ভরে শাড়িতে মাখা মায়ের গায়ের গন্ধ নিত। চোখ ভিজে যায় শ্রাবণের।

সেদিন রাতেই বাবা নৌকায় করে শ্রাবণ আর তার দাদুকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ভারত সীমান্তের আশ্রয়শিবিরে। তারপর শ্রাবণ আর কোনো দিন তার বাবাকেও দেখেনি। তার দাদু লোকমুখে একেকবার একেক তথ্য পান। একবার শোনে, তার বাবা মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। একবার শোনে, তার বাবা শহীদ হয়েছেন। আবার শোনে, তার বাবা তাদের মফস্বলের ভিটেমাটি আঁকড়ে বেঁচে আছেন।

শ্রাবণ শেষোক্ত যুক্তিটাই মেনে নিয়েছে। তাই তো সে আজ তার জন্মস্থান, সেই মফস্বল শহরে ছুটছে। ১৯৭১ সালে সেই বাড়িটা ছাড়ার প্রায় ১৫ বছর পর প্রাপ্তবয়স্ক শ্রাবণ তার বাড়ি যাচ্ছে। তার ঠিকানায় ফিরছে। তার মন বলছে, সেখানে সে তার বাবাকে খুঁজে পাবে। তার মায়ের সঙ্গে কী হয়েছে, তা ভাবতে চায় না সে! অন্তত বাবাকে পেলেও হয়। যদিও সে জানে, বাবাকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। বাবা যদি বেঁচে থাকতেন, তবে কি শ্রাবণকে খুঁজে বের করত না? তবু শ্রাবণ তা বিশ্বাস করতে নারাজ। সে কিছু যুক্তিও বানিয়েছে মনে মনে। হতেই পারে তার বাবা ঘটনার আকস্মিকতায় স্মৃতিভ্রষ্ট। কিংবা স্ত্রীর মর্যাদা রক্ষা করতে না পারার অদৃশ্য অপরাধবোধে দুষ্ট। অথবা শারীরিকভাবে পঙ্গু, পক্ষাঘাতগ্রস্ত। কত কিছুই তো হতে পারে। পৃথিবী হলো সম্ভাবনার জায়গা। অনেক কিছুই ঘটার সম্ভাবনা আছে! শ্রাবণ তাই তার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকু চেষ্টা করবে। খুঁজবে বাবাকে, ফিরে যাবে জন্মকুটিরে।

বিজয়ের পর যখন হাজার হাজার শরণার্থী স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরেছে, সব কেমন ওলট–পালট হয়ে গিয়েছিল। ছেলের কোনো খবর না পেয়ে শ্রাবণের দাদু হয়ে পড়েন দিশেহারা। কিন্তু ছোট্ট শ্রাবণকে নিয়ে পথে পথে ঘোরার মানসিকতা তার ছিল না। যদি শ্রাবণের কোনো ক্ষতি হয়।

ঢাকা শহরে শরণার্থীদের বিভিন্ন ভাতা ও চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা থাকায় তিনি নাতনিকে নিয়ে ঢাকা থেকে নড়লেন না। বছরখানেক গড়াল, তিনি শত রকম উড়ো খবর পান, কিন্তু শ্রাবণকে নিয়ে নিজ ঠিকানায় যাওয়ার সাহস করেন না।

বিষয়টির গভীরতা বড় হয়ে শ্রাবণ বুঝেছিল। দাদু আসলে চাননি, শ্রাবণ তার মাতৃপিতৃহীন বাড়িতে ফিরুক। সেখানে হয়তো শৈশবের স্মৃতি তাকে পীড়া দেবে। দাদু ঠিক করেছিলেন, ছেলের ব্যাপারে একদম নিশ্চিত কোনো সংবাদ পেলেই তিনি শ্রাবণকে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হলো না।

শ্রাবণের যখন আট বছর, ঢাকার একটি আশ্রয়স্থলে দাদু মারা যান। শ্রাবণ তখন একটি মিশনারি স্কুলের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। তত দিনে প্রিয় মানুষের মৃত্যু কিংবা হারিয়ে যাওয়ার শোক শ্রাবণের জন্য ডালভাত। সে অন্য এতিম বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে। শুধু হৃদয়ের গহিনে চুপটি করে আশা লুকিয়ে রাখে। একদিন বাড়ি ফিরবে। বাবাকে খুঁজবে। খুঁজবে নিজের ভিটেমাটির চিহ্নটুকু।

আজ সেই প্রতীক্ষিত দিন। শ্রাবণ উচ্চমাধ্যমিক পাস করে একটি ছোটখাটো চাকরিও জুটিয়ে ফেলেছে। আজ আর নিজ মফস্বলে যেতে কোনো বাধা নেই। যেতে যেতে বুড়ো দাদুটার কথা মনে করে ভীষণ কান্না পেল তার। দাদুর হাত ধরেই তো জন্মস্থান ত্যাগ করে ছুটেছিল নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।

যুদ্ধ হয়, হানাহানি হত্যাযজ্ঞের পর একদিন শান্তিচুক্তিও হয়। কিন্তু কখনো কি ফিরে দেখা হয় যুদ্ধের কবলে আটকে থাকা মানুষ কী কী হারিয়েছে? কী দোষ ছিল সেসব মানুষের? আজ নিজের ঠিকানার খোঁজে ছুটন্ত মেয়েটি সমস্ত নাড়ির টান হারিয়ে এই প্রশ্নের দুর্বিপাকেই বাঁধা পড়ছে বারবার।

কিন্তু অবাক বিষয় হলো সে তার জেলা শহরে এসে থমকে গেছে। তার মফস্বলটা সে খুঁজে পাচ্ছে না। কোনো বাসচালক, ট্যাক্সিচালক ‘সুধাপুর’ নামের জায়গাটি চেনে না! সে প্রতিটা দোকানে দোকানে জিজ্ঞেস করতে লাগল। মা–বাবার কোনো ছবিও তার কাছে ছিল না। তার মা-বাবা যে কলেজের প্রভাষক ছিলেন, সে কলেজের নাম বলে খোঁজ করতে লাগল। লোকজন কলেজ চিনলেও শ্রাবণের জন্মস্থান সুধাপুরকে চিনল না।

একটা স্টেশনারি দোকান থেকে ম্যাপ কিনে এমাথা–ওমাথা চষে খুঁজল। নাহ, সুধাপুর নামে কিছু নেই। বেচারীর পাগলামি দেখে তখন জায়গাজুড়ে বেশ ভিড়। ১৫ বছর তো বেশি আগের না, সে সময়ের কেউ না কেউ আশপাশে থাকার কথা, যারা সুধাপুর সম্পর্কে জানে। তারপর একথা–সেকথায় যে খবর বেরোল, তা হজম করার শক্তি ছিল না শ্রাবণের।

পাকিস্তানি বাহিনীরা সমস্ত সুধাপুরকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। ব্রাশফায়ার করে নিশ্চিহ্ন করেছে সমস্ত সুধাপুরের ছেলে, বুড়ো, শিশুদের। আর এই কাজটা করেছে শ্রাবণের মায়ের চোখের সামনে। শ্রাবণের মায়ের হাত বেঁধে গাড়িতে করে দেখিয়ে দেখিয়ে হত্যা করেছে সুধাপুরের প্রতিটি প্রাণ। শ্রাবণের মায়ের দোষ, তিনি স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। স্বাধীনতার পক্ষে কলাম লিখেছিলেন।

সুধাপুর নামটাই এ তল্লাটে একটা কালো অধ্যায়ের নাম। ১৫ বছর ধরে সবাই সুধাপুরের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার চেষ্টায় মগ্ন। কেউ ভাবেনি সুধাপুরের কোনো বাসিন্দা বাংলাদেশের কোথাও বেঁচে আছে। আজ তাই হঠাৎ শ্রাবণের উপস্থিতি সবাইকে নতুন করে ভাবাচ্ছে।

শ্রাবণ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি নিজের মা-বাবার শেষ চিহ্নটুকু খুঁজতে এসে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে তার সমস্ত আশা। এই জন্যই হয়তো দাদু তাকে কখনো জন্মস্থানে নিয়ে যেতে চাননি। আজ শ্রাবণের নিজেরও মনে হলো না আসলেই ভালো হতো। অন্তত আশাটা বেঁচে থাকত তার অন্তরে।

ছলছল চোখে শ্রাবণ যখন ফেরার পথে পা বাড়াল। একজন বয়স্ক লোক তাকে একটা কিছু দেখাতে চাইল। নিয়ে গেল একটি রাস্তায়, রাস্তার পাশে ছোট একটা নামফলক।

‘শহীদ বীরাঙ্গনা সাবেরী বেগম সড়ক।’

শ্রাবণ দৌড়ে গিয়ে নামফলকটি ছুঁয়ে পাগলের মতো কাঁদতে লাগল। তার স্বাধীনতাপ্রেমী সাহসী মায়ের আত্মত্যাগের সম্মান। স্বাধীনতাযুদ্ধে সর্বহারা মেয়েটির জন্য নিশ্চিহ্ন সুধাপুরে এই নামফলকই অনেক বড় অস্তিত্বের চিহ্ন।

কাজী সাবরিনা তাবাসসুম: মিলান, ইতালি।