বাড়িটার নাম মুক্তিবাড়ি

এই বাড়িটা অনেক পুরোনো 

কাহিনি অনেক নিদারুণ
গুলির খাবলা খাওয়া
ফুটো আর চটে যাওয়া দেয়াল
ছাদের ভেতর-বাহিরও কেমন ফাটাফাটা
সব ক্ষত মুছে ফেলে বহুদিন পর
আবার নতুন করে রং করা
একজন রমণী বেঁচে থাকা
অন্দরমহলে কোরআন পড়ছিল
ভোরের আলোয় ধীর-মধুর লয়ে
ঘরের দরজা-জানালা খোলা।

দীর্ঘ বারান্দায় পড়ে আছে
মাড়ানো ধান-আলু-গম-ভুট্টা জড়ানো স্তূপ
তাতেই পার হয়ে যাবে বছরের খরচাপাতি
দেখভাল করার গৃহকর্তা নেই
১৯৭১ সালে গভীর রাতে ধরে নিয়ে গেছে
ওদের সঙ্গে ছিল রাজাকার দল
আর কোনো খোঁজ নেই তার
ক’জন মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছে যুদ্ধে
ও-বাড়ির দুই কিশোর সাথে দিল প্রাণ
পশুগুলোর মরা লাশও পড়েছিল শত শত।

সেই থেকে বাড়িটার নাম মুক্তিবাড়ি
পেছনেই বধ্যভূমি
এখন সে বৃদ্ধা রমণী-তখন যুবতী ছিল
বাড়িটা পাহারা দেয়, প্রতিবেশী কেউ কেউ সঙ্গ হয়
আর রাত্রি-ভোর কোরআন শুনায়
মৃত আত্মাদের জীবন্ত বধ্যভূমে