বিজয় দিবস

বাংলাদেশ,

আজ একটি বিশেষ দিন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন,
বিজয়ের দিন।
উপলক্ষ তুমি, জনতার আনন্দ ভাগাভাগি,
পতাকা রঙে সেজেছ তুমি
হৃষ্টচিত্তে বাঙালি নর-নারী।

তুমি চল্লিশোর্ধ্ব শিশু
পঞ্চাশের টান টান খুশি তোমায় জড়িয়ে
উন্নত শির সম্মুখ চলার চেষ্টা অবিরত।
বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্র ও রাজসভায়
তুমি সফলতার এক অনন্য উদাহরণ।

এখনো তোমার শরীর বারুদের গন্ধ আবরণ
বাংলা মাটি কাঁচা রক্ত ছোপ ছোপ
নারীর আর্তচিৎকার বাতাস প্রতিধ্বনিত।
শোনা যায়
বুলেটের ঠাস ঠাস শব্দ মৃত্যুর কারণও।

সন্তানহারা বেদনাতুর মায়েরা
হারিয়ে গেছে এত দিনে হয়তো,
তবু নির্মূল হয়নি শত্রুকুল এখনো।
ক্ষমা পেয়েছিল ওরা বাহাত্তরে
পাষণ্ড খেলায় মেতেছিল পঁচাত্তরে
তারপর দম নিয়ে বীজ বপন করে সর্বত্র।
অভিস্রবণ পদ্ধতি চালু রেখে
মিশে যায় সর্বস্তরে।
জমে থাকে ম্যানহোল, আস্তাকুঁড়ে
সুযোগ পেলেই গোখরো সাপের মতো
ফণা তোলে।

ভয় হয়, আবার যদি দংশন করে!
বিষ দাঁতগুলো ভাঙা হয়নি তোমার বুকে রয়ে গেছে ওদের বিচরণ।
আজও হয়নি প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি
জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র
ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র।

গণতন্ত্র? সে শুধু নেতাদের বুলির ফুলঝুরি
এখনো কথামালা, বর্ণমালায় রাজনীতি।
সমাজতন্ত্র কখনোই হয়নি চেতনার অন্তর্ভুক্ত
শুরু থেকে আজও রয়ে গেছে বিমূর্ত।

জাতীয়তাবাদ ছিল বেশ যদিও
ক্রমান্বয়ে অবহেলা, অনিয়ম, অবিচার
বিভাজিত জনগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ়।

যেভাবেই কাটুক জনতার দিনকাল
তবু ভালোবেসে তোমাকে আজ
গাইবে দেশপ্রেমের গান,
‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার
সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার।’
কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করবে তাঁদের,
‘সব কটা জানালা খুলে দাও না
আমি গাইব গাইব বিজয়েরই গান।
ওরা আসবে চুপিচুপি, যারা এই দেশটাকে
ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ।’
–––

খুরশীদ শাম্মী: টরন্টো, ওন্টারিও, কানাডা।