লেবাননে রাষ্ট্রদূতের বাংলাদেশিদের বাজার পরিদর্শন

সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের অন্যতম খোলাবাজার সাবরা। এই বাজারের সঙ্গে জড়িত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির জীবিকা। এখানে আছে প্রবাসী বাংলাদেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নানা পণ্যের ৫০টির মতো দোকান। এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সবজি, মাছসহ বিভিন্ন কাঁচামাল নিয়ে অস্থায়ী দোকান সাজিয়ে বসেন কিছু বাংলাদেশি। এর খ্যাতি ছড়িয়েছে বাংলা বাজার হিসেবে।

সাপ্তাহিক ছুটিতে শনিবার আধা বেলা ও রোববার পুরো দিন জমজমাট থাকে সাবরা বাজার। ছুটির অবসরে বৈরুতের নানা প্রান্ত থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখানে আসেন তাঁদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সদাই করতে। এই সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের পদচারণে মুখর থাকে পুরো বাজার। বেচাকেনাই শুধু নয়, সাপ্তাহিক ছুটি ঘিরে বাংলাদেশিদের মিলনমেলায় রূপ নেয় সাবরা। মনে হয় প্রবাসে একখণ্ড বাংলাদেশ।

সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই সাবরা বাজার পরিদর্শন করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। দেশটির বর্তমান সংকটময় সময়ে প্রবাসীদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে ও সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনার জন্যই তিনি সেখানে যান। এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রদূত সাবরা বাজার পরিদর্শন করেন।

রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার পুরো বাজার ঘুরে দেখেন এবং প্রবাসীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে তাঁদের খোঁজখবর নেন। তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বাজার করতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের অভিযোগগুলো শোনেন।

এ সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আবদুল্লাহ আল মামুন ও তৃতীয় সচিব আবদুল্লাহ আল সাফিসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
সাবরা বাজারে দোকানিদের সঙ্গে কথা বলছেন রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

ব্যবসায়ীদের কয়েকজন রাষ্ট্রদূতকে জানান, সাবরা বাজারে মাঝেমধ্যে চলা পুলিশি অভিযানের সময় বাংলাদেশি দোকানিদের নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তাঁরা রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।

রাষ্ট্রদূত লেবাননের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ নিরসনের সব ধরনের চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

কেনাকাটা করতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কেউ কেউ রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চান, অবৈধ হয়ে পড়া প্রবাসীদের স্বেচ্ছায় দেশে ফেরা কার্যক্রমের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে। আবার কারও জিজ্ঞাসা ছিল ডলারের সংকট নিয়ে।

রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার সাবরা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার সাবরা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশে দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ প্রবাসী নিবন্ধন করেছিলেন। এর মধ্যে ৫২৭ জনকে দেশে পাঠানো হয়েছে। দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাকিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে।

ডলারের সংকট বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু প্রবাসীরাই নন, লেবানিজরাও এই সংকটের কারণে চরম দুর্ভোগে আছেন। সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য নানা চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটির সরকার। নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করা যায়, ডলারের সংকটসহ দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতিতে ইতিবাচক চিত্র দেখা যাবে।

তিনি লেবাননের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা এবং দেশটির কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার জন্য প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ জানান। বিজ্ঞপ্তি