বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ

অনুষ্ঠানে ল্যাপটপে কাউন্টডাউন ক্লক চালুর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার কর্মসূচি শুরু করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইতালি
অনুষ্ঠানে ল্যাপটপে কাউন্টডাউন ক্লক চালুর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার কর্মসূচি শুরু করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইতালি

ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় উদ্বোধনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ল্যাপটপে কাউন্টডাউন ক্লক চালুর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনাও শুরু করা হয়েছে।

ক্ষণগণনার কর্মসূচি শুরু করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার।

এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে দূতাবাসের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনায় বক্তারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে। যাঁর নেতৃত্বে বাঙালি পেয়েছে এক স্বাধীন বাংলাদেশ।

রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন করলেও ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্ত হন। সেখান থেকে লন্ডন ও দিল্লি হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলেও জনগণ প্রকৃত বিজয় উপলব্ধি করেন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে। তার আগ পর্যন্ত স্বাধীনতা পেয়েছে কি না, সে বিষয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ ছিল।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু অস্থিমজ্জায় একজন প্রকৃত বাঙালি হিসেবে সারা জীবন বাঙালি জাতির উন্নয়নে কাজ করেছেন। রাষ্ট্রদূত দুঃখের সঙ্গে বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করেছেন, তাঁকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালিরাই নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইতালি
বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইতালি

আবদুস সোবহান সিকদার আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশ উন্নয়নের সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়নের আগেই নির্মমভাবে খুন হন; যা বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা নিজেই সেই অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে নিয়োজিত আছেন। তাঁর এই আরাধ্য কাজে সব স্বাধীনতাকামী মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য তিনি উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করতে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে তুলে ধরতে সরকার ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ১৭ মার্চ ২০২১ সময়কে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন করা হবে। ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন করবে। কর্মসূচির মধ্যে থাকবে আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ‍ওপর চিত্র প্রদর্শনী এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এ ছাড়া দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ কনস্যুলার সেবা প্রদান। এসব কর্মসূচিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাসহ প্রবাসী বাঙালিরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। বিজ্ঞপ্তি