বেড়ানো: পৃথিবীখ্যাত মেরিন ড্রাইভ গ্রেট ওশান রোড-দুই

অ্যাপোলো বের কাঠের মূর্তি। ছবি: লেখক
অ্যাপোলো বের কাঠের মূর্তি। ছবি: লেখক

বেশ সকালে পাখির কিচিরমিচির ও অবিরাম জলের ঝিরিঝিরি শব্দে ঘুম ভেঙে গেল।

পাশে চেয়ে দেখি শিলা সবে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে রেডি। চোখে চোখ পড়তেই বলল, ‘সেই কখন থেকে ডাকছি। ওঠ, আমাদের বের হতে হবে তো।’

ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সকাল আটটা বাজে। উঠে পড়লাম দ্রুত। কারণ, আজ যেতে হবে বহু দূর। টুয়েলভ অ্যাপসলস দেখতে। সেখান থেকে পরবর্তী থাকবার জায়গাতে।

‘টুয়েলভ অ্যাপসলস কী?’ শিলা সকালের নাশতা রেডি করতে করতে জিজ্ঞেস করল।

লেখক ও তাঁর সহধর্মিণী শিলা
লেখক ও তাঁর সহধর্মিণী শিলা

বললাম, ‘জানি না এখনো। ছবিতে দেখেছি সমুদ্রের মধ্যে কিছু পাথর দাঁড়িয়ে আছে। তবে শুনেছি ওটাই নাকি গ্রেট ওশান রোডের প্রধান আকর্ষণ। চলো তো যাই।’

নাশতা খেয়ে রেডি হয়ে বাড়িওয়ালা ভদ্রলোকের কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলাম। ভদ্রলোক বারবার করে বললেন, আবার যেন ওদের বাসায় উঠি। অনেকটা মেহমান বিদায় হলে আমরা বলি আবার আসবেন, ঠিক সে রকমভাবে বলতে লাগলেন।

শিলা এখন আবার ড্রাইভিং সিটে। গাড়িতে উঠতেই বলল, ‘একটু কড়া কফি পেলে ভালো হতো।’

পোর্ট ক্যাম্পবেলের প্রাকৃতিক দৃশ্য। ছবি: লেখক
পোর্ট ক্যাম্পবেলের প্রাকৃতিক দৃশ্য। ছবি: লেখক

বললাম, ‘বেশ উত্তম প্রস্তাব। তবে আমার অবশ্য চা খেতে ইচ্ছে করছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ওভালটিন চা। আজও মুখে যেন লেগে আছে।’

শুনে শিলা বলল, ‘হুম। আমারও। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে চায়ের থেকে কফির চল বেশি। চলো কফিই খাই। কাল রাতে যেখানে ডিনার করলাম, সেখানেই যাই চল।’

ওহ, মাই গুড গড! সেখানে পৌঁছে দেখি পুরো পরিবেশ চেঞ্জ হয়ে গেছে। কাল রাতে ছিল অন্ধকার। টিমটিমে আলো জ্বলছিল। আর এখন মেলা বসেছে। লোকে লোকারণ্য। মজার ব্যাপার কাল রাতে যেখানটা অন্ধকারে কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না, সেখানে সারি সারি কাঠের বিভিন্ন ভঙ্গিমার মূর্তি। কাঠের তক্তা দিয়ে সাজানো ‘অ্যাপোলো বে’ লেখা একটি সুন্দর ছবি তোলার জায়গা। বুঝলাম মূর্তিগুলো গতকাল রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকারের ভেতর লুকিয়ে ছিল। আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি। মনে হলো, ভাগ্যিস ওই অন্ধকার দিকটায় ঢুকিনি কাল রাতে। তাহলে মূর্তির সঙ্গে মাথা ঠোকাঠুকি হয়ে যেত। আর আমি ভূত ভেবে চিৎপটাং হয়ে যেতাম।

এখন সুন্দর মূর্তি ও কাঠের কাজ দেখে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারছি না। কিন্তু দুজনে দুজনার হয়ে ছবির পোজ দিতে গেলে একজন ক্যামেরাম্যান দরকার। কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ভদ্রলোক। তাঁকে অনুরোধ করতেই ক্লিক ক্লিক। ব্যাস হয়ে গেল যুগলবন্দী ছবি কয়েকখানা।

কফি শেষ করে শুরু হলো পথ চলা। গুগল দেখাচ্ছে ঘণ্টা দুইয়ের ড্রাইভ। অ্যাপোলো বে শহরটা বেশ ছোট। গাড়ির এক্সেলেটরে পা দিতেই শাঁ করে পার হয়ে গেলাম। অ্যাপোলো বে থেকে বের হতেই লক্ষ করলাম রাস্তার ডিজাইনে প্রকৃতি কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। আসলে প্রকৃতির দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইনের মধ্যে কত যে বৈচিত্র্য রয়েছে তার হিসাব করতে করতে জীবন পার হয়ে যাবে। কিন্তু হিসাব শেষ হবে না।

টুয়েলভ অ্যাপসলস। ছবি: লেখক
টুয়েলভ অ্যাপসলস। ছবি: লেখক

ছয়

আজকের রাস্তার পাশে সমুদ্র তেমন একটা নেই। দুই পাশে শুধু বন জঙ্গল আর উঁচু উঁচু গাছপালা। সেই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আঁকাবাঁকা দুই লেনের সরু রাস্তা। গাছের ফাঁক দিয়ে একটু একটু করে সূর্য উঁকি দিচ্ছে। আবছা আলোছায়ার খেলা। একটা কেমন যেন গা ছমছম ভাব আছে। গাড়ি চলছে Need 4 Speed-এর মতো করে। বেশ খানিকক্ষণ চলার পর বন জঙ্গল শেষ হয়ে গিয়ে কিছুটা সমতল ভূমি পাওয়া গেল। এক পাশে পাহাড় আর অন্য পাশে উঁচুনিচু ধু ধু সবুজ মাঠ। আর সেই মাঠে হাজার হাজার গরু ও ভেড়া চরে বেড়াচ্ছে। দৃশ্যটা আমার খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। কোথায় যেন দেখেছি, ঠিক মনে পড়ছে না। কিছুক্ষণ পর মনে পড়ল। একসময় উইন্ডোজ এক্সপিতে ডেস্কটপ ওয়াল পেপার ছিল এ রকম কিছু ছবি।

শিলা হঠাৎ গাড়ি চালাতে চালাতে হেসে উঠল হো হো করে। আমি অবাক হয়ে তাকালাম ওর দিকে। আমার তাকানো বুঝতে পেরে বলল, ‘এই অজস্র গরুর সারি দেখছ, এদের পূর্বপুরুষ গরুদের দুধ খেয়েছি আমরা সবাই।’

‘মানে?’ জিজ্ঞেস করলাম আমি।

শিলা বলল, ‘বুঝলে না? বাংলাদেশে আমরা অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের গরুর পাউডার দুধ ছোটবেলায় কত খেয়েছি। এদের মধ্যে কারওর না কারওর পূর্বপুরুষ তো হবেই।’

‘উহু, হলো না। পূর্বপুরুষ না বলে, বলো পূর্বগাভি।’

টুয়েলভ অ্যাপসলস। ছবি: লেখক
টুয়েলভ অ্যাপসলস। ছবি: লেখক

ঘণ্টা দুই টানা ড্রাইভ করার পর আমরা পৌঁছালাম পোর্ট ক্যাম্পবেল নামক জায়গায়। বহু লোকের ভিড় আর অনেক গাড়ি দেখে বুঝলাম এটি একটি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ দর্শনীয় স্থান। শুরুতেই একটি বড়সড় ম্যাপ আছে। ভালো করে চোখ বুলিয়ে দেখলাম বেশ অনেকগুলো দেখার স্থান রয়েছে এখানে।

প্রথমে আমরা বেছে নিলাম পৃথিবী–খ্যাত ট্যুরিস্ট স্পট টুয়েলভ অ্যাপসলস (Twelve Apostles)। তথ্য নির্দেশনামূলক বোর্ড থেকে জানলাম, আজ থেকে অনেক আগে সমুদ্রের মধ্যে বারোটি পাথরের স্তম্ভ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। যেগুলো একসময় হয়তো মূল ভূখণ্ড থেকে সমুদ্রের পানির জোয়ারের ধাক্কায় আলাদা হয়ে গিয়েছিল। ‘ছিল’ বললাম তার কারণ সেই বারোটি স্তম্ভের মধ্যে এখন আটটি আছে। এই বারোটি স্তম্ভকে অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীরা যিশু খ্রিষ্টের বারোজন সঙ্গীর নামানুসারে টুয়েলভ অ্যাপসলস বলত।

পড়ন্ত বিকেলে সমুদ্রের নীল জলরাশির মধ্যে সোনালি রঙের পাথরের স্তম্ভগুলো স্বর্গীয় দৃশ্য বলে মনে হতে লাগল। প্রমত্ত সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে কী অবলীলায় মাথা উঁচু করে রয়েছে অ্যাপসলসের পাথরগুলো। এ যেন ‘জ্বলেপুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়’।

লন্ডন ব্রিজের একাংশ। ছবি: লেখক
লন্ডন ব্রিজের একাংশ। ছবি: লেখক

টুয়েলভ অ্যাপসলস দেখা শেষে যখন বেরিয়ে আসছি তখন দেখি কিছু যুবক-যুবতী হইহই, রইরই করে আনন্দ করছে। কী সুন্দর জমকালো রঙিন পোশাক পরে ঘুরতে বেরিয়েছে। কত স্বাধীন ওরা। বয়স কত হবে! হয়তো ১৮ থেকে ২০। সবে হয়তো কলেজ শেষ করে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে বেরিয়েছে। বুকটা একটু যেন চিনচিন করে উঠল। মনে পড়ে গেল, আমরাও সেই ছোটবেলায় ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে আমার দেশের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা থেকে শিলাইদহ রবিঠাকুরের কুঠিবাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেই যাত্রায় আমরা চার বন্ধু ছিলাম। সেই বোধ হয় আমার দেশ দেখার শুরু। ভীমরতি হওয়ার বয়সে মাঝেমধ্যেই চোখের কোণে জল জমে যায়। তখন নিজেকে আমি মাঝে শাসন করে থাকি। নস্টালজিক হয়ে আনন্দ নষ্ট করতে চাই না।

আমরা দুজন ওই দলের পেছনে হাঁটতে লাগলাম। একটু হেঁটে যে জায়গাটিতে এসে পৌঁছালাম, তার নাম লন্ডন ব্রিজ। এবার আমার অবাক হওয়ার পালা। বিশাল বিশাল কয়েকটি সোনালি রঙের পাথরের চাঁই সমুদ্রের মধ্যে। পাথরের ওপরের দিক ঠিকই আছে, ঘন সবুজ ঘাস। কিন্তু নিচে সমুদ্রের পানির জোয়ারে সুড়ঙ্গ হয়ে গেছে। সেই সুড়ঙ্গ দিয়ে চলছে নীল পানির আসা যাওয়া। দেখতে অনেকটা ব্রিজের মতো। অস্ট্রেলিয়ার পূর্বপুরুষ তো ইংল্যান্ডবাসী। তাই হয়তো ভালোবেসে এই জায়গার নাম রেখেছে লন্ডন ব্রিজ।

লন্ডন ব্রিজের একাংশ। ছবি: লেখক
লন্ডন ব্রিজের একাংশ। ছবি: লেখক

আমরা ওই যুবক–যুবতীর দলটাকে সেখানে রেখে আরেকটি লুক আউটের দিকে রওনা দিলাম। ম্যাপে দেখেছিলাম ‘লচ আর্ড গর্জ (Loch Ard Gorge)’ নামে আরেকটি সুন্দর জায়গা আছে দেখার। অল্প হেঁটে সেখানে যেতেই চোখে পড়ল একটি সমাধিক্ষেত্র। নির্দেশনা বোর্ড থেকে যা বুঝলাম তাতে বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক ঘটনা।

‘লচ আর্ড গর্জ’ নামের জায়গাটি প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেয়াল। সমুদ্রের কিনারে একটি ছোট সৈকত যার প্রায় চারদিকই বেশ উঁচু উঁচু গিরি ও পাহাড় দিয়ে ঘেরা। আর সমুদ্রের দিকে অল্প একটু দরজার মতো খোলা, যা দিয়ে সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে এই গিরি ঘেরা সৈকতে। লচ আর্ড গর্জে প্রকৃতি রঙের এমন ব্যবহার ও বিষয়ের এমন বৈচিত্র্য করেছে যে একটি ঘোর লাগা অনুভূতি তৈরি হচ্ছে আমার। উজ্জ্বল নীল আকাশ, ঘন নীল সমুদ্র, সোনালি রঙের পাহাড়ের খাড়া গা, পাহাড়ের ওপর সবুজ গাছপালা-ঘাস আর সেই সঙ্গে সমুদ্র সৈকতের বালিতে কমলা রঙের ছোঁয়া হাজার হাজার পর্যটকদের মোহিত করে ফেলছে প্রতিনিয়ত। আমার মুখে আর কথা সরছে না।

সিঁড়ি দিয়ে পাহাড়ের ওপর থেকে এই অদ্ভুত সৈকতে নেমে পড়লাম। নিচে নেমে চারপাশের উঁচু পাহাড়গুলোকে দেখলে মনে হচ্ছে যেন চারপাশ থেকে গিলে ফেলবে আর সামনে সমুদ্রের জলরাশিতে সমাধি হবে। তাই নামার পর থেকেই আমার কেমন যেন ভয় ভয় করতে লাগল।

এবার আসি সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার কথা।

লচ আর্ড গর্জের ওপর থেকে তোলা ছবি। ছবি: লেখক
লচ আর্ড গর্জের ওপর থেকে তোলা ছবি। ছবি: লেখক

১৮৭৮ সালে ইংল্যান্ড থেকে ‘লচ আর্ড’ নামে একটি জাহাজ এই অঞ্চলে এসেছিল। কিন্তু প্রবল স্রোত ও ঘন কুয়াশার কারণে নাবিক বুঝতে না পারায় এই জায়গায় জাহাজটি ঢুকে আটকে পড়ে এবং চারপাশের পাহাড়ে ধাক্কা খেতে থাকে। ফলে জাহাজটি চূর্ণ–বিচূর্ণ হয়ে যায়। জাহাজে অবস্থানরত ৫৪ যাত্রীর মধ্যে দুজন ছাড়া সবাই মারা যায়। টম পিয়ারসন নামে একজন শিক্ষানবিশ নাবিক বেঁচে যায় ওই যাত্রায়। হঠাৎ করে তিনি ইভা কারমাইকেল নামের এক আইরিশ তরুণীর আর্তচিৎকার শোনেন এবং নিজের জীবনবাজি রেখে তাঁকে বাঁচান। সেই সময় তাঁদের দুজনের বয়স ১৯ ছিল। পরবর্তী সময়ে ইভা আয়ারল্যান্ডে ফিরে যান। আর অস্ট্রেলিয়া টমকে বীরের মর্যাদা দেয়। শেষ বয়সে টমও ইংল্যান্ডে ফেরত চলে যান। আমাদের দেখা ওই সমাধিক্ষেত্রটি আসলে ওই দুর্ঘটনায় মৃত যাত্রীদের। প্রতিদিন বহু পর্যটক সমাধিক্ষেত্রে এসে শ্রদ্ধা জানিয়ে যান।

সাত

লচ আর্ড গর্জ দেখা শেষে আমরা পৌঁছে গেলাম পোর্ট ফিয়ারি নামক একটি ছোট্ট শহরে। টুয়েলভ অ্যাপসলস বা লচ আর্ড গর্জ যেখানে অবস্থিত সেই জায়গার নাম পোর্ট ক্যাম্পবেল। সেখান থেকে পোর্ট ফিয়ারি প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার পথ। আমার আবার নতুন নতুন শহরে থাকতে খুব ভালো লাগে। কারণ, প্রতিটি শহরের আলাদা আলাদা গল্প থাকে। আলাদা চেহারা, আলাদা কৃষ্টি, কালচার থাকে। আমাকে সেই গল্পগুলো খুব টানে। পোর্ট ফিয়ারি একটি সাজানো গোছানো ব্রিটিশ আদলে গড়া ছোট শহর। চার্চ থেকে শুরু করে হোটেল বা ক্যাফে-রেস্টুরেন্ট বা পার্কসহ বিভিন্ন জায়গা, সবকিছুতেই যেন একটা ব্রিটিশ ঐতিহ্যের ছোঁয়া। আমরা যে হোটেলটিতে রয়েছি সেটিও প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বছরের পুরোনো। অস্ট্রেলিয়ার সরকার এটাকে হেরিটেজ বিল্ডিং ঘোষণা করেছে। হোটেলের ভেতরে সবকিছুই সেই পুরোনো আমলের সাক্ষ্য বহন করছে। নিজেকে ইংল্যান্ডবাসী মনে হচ্ছে। আরও মজার ব্যাপার হোটেলের সামনে একটি চার্চ আছে। এক দোকানদারের কাছে শুনলাম সেটিও ২৫০ বছরের পুরোনো। চার্চটি অনেকটা হ্যারি পটারের বিল্ডিংয়ের মতোই।

পোর্ট ফিয়ারির হেরিটেজ ভবনের ২০০ বছর আগের ও বর্তমানের ছবি। ছবি: লেখক
পোর্ট ফিয়ারির হেরিটেজ ভবনের ২০০ বছর আগের ও বর্তমানের ছবি। ছবি: লেখক

ফুটপাতের ওপর একটি ছবি ঝোলানো আছে। তাতে এই হোটেল ও চার্চের ইতিহাস আছে। ছবিতে দেখাচ্ছে প্রায় ২০০ বছর আগে এই জায়গাটা কেমন ছিল। অস্ট্রেলিয়ার সরকার খুবই সচেতন এই হেরিটেজের ব্যাপারে। সব সময় তাঁরা অতীত ও বর্তমানের তুলনা করে থাকে এবং পুরোনো প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণ করে।

পরদিন সকালে উঠে দেখি সারা শহরে ভিনটেজ গাড়ির প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। সেই ব্রিটিশ আমলে পুরোনো মডেলের বহু গাড়ি সারা শহরে প্রদক্ষিণ করছে। সে এক অন্য রকম মজার অনুভূতি।

আসলে পোর্ট ফিয়ারি জায়গাটি ছিল আমাদের বিশ্রাম নেওয়ার ও সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ কোলাহলমুক্ত একটি জায়গায় নিবিড়ভাবে সময় কাটানোর স্থান। সেটি খুব ভালোভাবেই হলো। শরীর–মন একেবারে সতেজ তখন। তাই সেই দিন পোর্ট ফিয়ারির আতিথেয়তা গ্রহণ করে বিকেলের দিকে রওনা দিলাম মেলবোর্নের উদ্দেশে। (শেষ)

এই ভ্রমণকাহিনির আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: বেড়ানো: পৃথিবীখ্যাত মেরিন ড্রাইভ গ্রেট ওশান রোড