কিউবার হাভানায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ

কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের কাছে বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশ করেছেন মো. জুলফিকার রহমান। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের কাছে বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশ করেছেন মো. জুলফিকার রহমান। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানকারী দেশ কিউবার রাজধানী হাভানায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ও কিউবার জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও দুই দেশের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু ও ফিদেল কাস্ত্রোর বন্ধুত্বকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত জুলফিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের কাছে পরিচয়পত্র পেশের পর আলোচনাকালে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের প্রস্তাব দেন।

প্রেসিডেন্ট ব্যারমুডেজ এ প্রস্তাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ ও এ ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, কিউবার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের স্মারক হয়ে থাকবে এবং দুই দেশের জনগণ ও সরকারকে এ বন্ধন আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে ভবিষ্যতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

উল্লেখ্য, ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমান একই সঙ্গে কিউবা, বলিভিয়া, চিলি, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত।

পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে কিউবায় প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের সঙ্গে সহধর্মিণীসহ রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল
পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে কিউবায় প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের সঙ্গে সহধর্মিণীসহ রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল

মো. জুলফিকার রহমান সম্প্রতি কিউবায় বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। এ উপলক্ষে দেশটির রাষ্ট্রীয় বিপ্লব প্রাসাদে (Palacio de la Revolucion) আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তিনি প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াজ-কানেল ব্যারমুডেজের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত পরিচয়পত্র পেশ করেন।

এর আগে দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মূর্ছনায় কিউবার সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রদূত মো. জুলফিকার রহমানকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার কিউবার জাতীয় বীর জোসে মার্তির ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

প্রেসিডেন্ট ব্যারমুডেজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনাকালে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কিউবার শর্তহীন সমর্থন, বঙ্গবন্ধু ও ফিদেল কাস্ত্রোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিষয়েও তিনি অবহিত করেন।

পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার কিউবার জাতীয় বীর জোসে মার্তির ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল
পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার কিউবার জাতীয় বীর জোসে মার্তির ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাজিল

রাষ্ট্রদূত জুলফিকার প্রেসিডেন্ট ব্যারমুডেজকে ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্স জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন। ফিদেল কাস্ত্রো কীভাবে বঙ্গবন্ধুকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন সে প্রসঙ্গটিও তিনি তুলে ধরেন।

প্রেসিডেন্ট ব্যারমুডেজ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত বলে জানান ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত শ্রদ্ধার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

হাভানায় অবস্থানকালে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট ছাড়াও অন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। আলোচনাকালে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করেন। স্বাস্থ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, শিক্ষা, কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে সহযোগিতার বিষয়ে ঐকমত্য হয়।

এসব কার্যক্রমের সূচনার জন্য এবং নিয়মিত বিরতিতে সেগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে একটি স্থায়ী অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও দুই পক্ষ একমত হয়। এ লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত হয়। বিজ্ঞপ্তি