বেড়ানো: কোরাল দ্বীপের হীরা-পান্না-তিন

সেন্ট মার্টিনের লুকানো বিল। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার
সেন্ট মার্টিনের লুকানো বিল। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার

ডিম-পরোটার ওপরে এমনিতেই নাশতা হয় না। সঙ্গে আলুভাজি থাকলে এই দুনিয়াবি নাশতাই বেহেশতি চেহারা পায়। ঠেসে-ঠুসে খেয়েদেয়ে মন আবেগে টইটম্বুর। বাঙালির মনের বাস তার পেটে। কে যেন কবে বলে গিয়েছিল। ষোলো আনা সত্য কথা।

ফুরফুরে মনে আবার বেরিয়ে পড়লাম। তবে তার আগে ছোটখাটো একটা মেডিকেল ক্যাম্প বসে গেল। ভাইয়া আর আপু তাদের ডাক্তারি বিদ্যার জাদুবলে চাচার হাঁপানির ওষুধ বদলে দিল। আড়াল থেকে আমাদের ভালোমন্দ রেঁধে খাওয়ানো ইয়াসীরের মায়ের হাড়ের সমস্যার উপায় বাতলে দেওয়া হলো। আরও কতগুলো লোকজনও এসে দাঁড়িয়েছে। তাদেরও কিছু কিছু গতি করে ঝটিকা ক্যাম্পটা গুটিয়ে ফেললাম আমরা।

আমার মায়ের আশা ছিল, তার ছেলে বিধানচন্দ্র-টাইপ ধন্বন্তরি ডাক্তার হবে। বিধানচন্দ্র না হলেও লোকগুলোর চোখমুখে কৃতজ্ঞতার ছাপের দামও কম না। বেড়াতে আসা শহুরে ডাক্তার আর তার ডাক্তার বউ তাদের যত্ন নিয়ে দেখেছে।

চাচা এগিয়ে এসে ভাইয়ার হাতে আলতো চাপ দিয়ে কথা আদায় করে নিলেন, আবার যেন আসি। গেস্টহাউসটা সামলে রাখা এই পরিবারের সবাই অনেকটা এগিয়ে এসে বিদায় দিল আমাদের। সরলতার আরেক নাম বোধ হয় বাংলাদেশের মানুষ।

সাগরতীর ধরে না হেঁটে অনেকটা ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। বাঁয়ে তরমুজের খেত আর ডানে ধান মাড়াই চলছে। মাঝে খেতের আল। তাতে ধুলা উড়িয়ে ছুটছে রন আর তাফসু মিয়া। যেন মাত্রই খাঁচা থেকে পালিয়েছে। এখন দৌড়ে জান নিয়ে পালতে পারলেই বাঁচোয়া। এক-আধটা মহাবিরক্ত ছাগল ঘাস চিবানো রেখে অনিচ্ছায় পথ ছেড়ে দিচ্ছে। ফেরারি আসামি ধরতে আমাদেরও পড়িমরি ছুটতে হচ্ছে।

গাঁয়ের মেঠো পথে দৌড়ে আত্মহারা লাগছে। শিকড় খুঁজে পাওয়ার আনন্দে আত্মহারা। হঠাৎ ছবির মতো শান্ত একটা বিল দেখতে পেলাম। তার জলেও কোরাল উঁকিঝুঁকি। ক্যানভাসে আঁকা নিখুঁত ছবির মতো দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দী করে নিলাম সযত্নে। বিল ছাড়িয়ে আরও এগোতে দেখি কার যেন খড়ের গাদায় অলস গরু জাবর চিবাতে ব্যস্ত। তার ব্যস্ততায় হানা না দিয়ে কী ভেবে খড়ের গাদা দুই হাতে জাপটে ধরলাম। খড়ের মধ্যে ধান-ধান ঘ্রাণ। চট করে ঘ্রাণটা সেই যে মাথায় ঢুকে পড়ল, আর বেরোল না।

বিল পেরিয়ে, গরু ডিঙিয়ে, কার উঠানের হাঁস-মুরগি তাড়িয়ে শেষতক এসে থামলাম তীরের কাছ ঘেঁষে। সৈকতটা লোকালয়ের খুব কাছে অথচ একেবারে জনমানবশূন্য। কিন্তু চেনা-জানা পৃথিবীর কোনো কিছুর সঙ্গে এ জায়গার তো মিল নেই। সাগর এখানে তার আপন মনে আছড়ে পড়ছে। কোরালের ভেসে থাকা শরীরের গাঙচিলের জটলা। কেয়াগাছের সারিকে সাক্ষী মেনে বইঠাবিহীন একটা একলা নৌকা নির্বিকার পড়ে আছে। ছুটে আসা ঢেউয়ের ফেনিল ফণায় তার কিছু আসে যায় না।

চেনাজানা পৃথিবীর বাইরে ছিটকে পড়ে আমাদের বিস্ময় আর কাটে না। দুটো কৌতূহলী ছেলেমেয়ে পিছু পিছু এসেছে। এই সৈকত তাদের কাছে গাঁয়ের পেছনের পুকুরপাড়। এই দেখে লোকগুলো এমন বোবা হয়ে গেল কেন, তাদের ছোট মাথায় ব্যাপারটা খেলছে না।

কাঁধের বোঝা আর পায়ের চপ্পল নৌকাটায় চাপিয়ে পান্না রঙা ঢেউয়ে পা ভেজাতে নামলাম আমরা। নরম বালুতে নাম লিখে আবার জলের কালিতে মুছে দিয়ে হা-হা হাসিতে নিস্তব্ধ সাগরতীর কাঁপিয়ে স্বাদ নিলাম অদ্ভুত ছেলেমানুষীর।

বঙ্গোপসাগরের এই ছোট্ট বিন্দুর মতো দ্বীপের ছোট্ট এই তীরে জগতের সব সৌন্দর্যের যে অর্ধেকটাই লুকানো আছে, সেই কথা আমরা ছাড়া আর কেউ জানলাম না। স্থানীয় লোকজনের আদর করে দেওয়া নাম তিলোত্তমা আসলেই এক তিলোত্তমা, স্বর্গের জলপরি। স্বর্গ থেকে স্রষ্টা অফুরান মণিমাণিক্য ছড়িয়ে দিয়েছে এই বালুকাবেলায়।

সাগর চূড়ায় ফেনিল ঢেউ। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার
সাগর চূড়ায় ফেনিল ঢেউ। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার

নয়.

তল্পিতল্পা গুটিয়ে আবার শুরু হলো হন্টন। আমাদের ভ্রমণের দ্বিতীয় গেস্টহাউসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে খিদেয় সেদ্ধ হয়ে গেলাম। ক্লান্তিও ঝোপ বুঝে কোপ মারছে এই সুযোগে। ছাউনির নিচে সবাইকে বসিয়ে হাতে ডাব ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধাতস্থ হয়ে ঠিক করলাম, জোয়ার থাকতে থাকতেই আবার সাগরে যাব।

দেখা গেল এই গেস্টহাউসের প্রস্তুতি বেশ ভালো। তাদের সংগ্রহে স্কুবা ডাইভিংয়ের সরঞ্জাম আছে। সেখান থেকে কয়েকটা আন্ডার-ওয়াটার গগলস নিয়ে খিড়কির দরজা দিয়ে বেরিয়ে দেখি, আরে ওই তো দূরে তিলোত্তমা দেখা যাচ্ছে। কেয়ার কাঁটা আর কাঁধ সমান ঝোপ পেরিয়ে অনায়াসে পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম ওপাশে।

জোয়ারের বড় বড় ঢেউ দেখে বাচ্চাদের নামতে দেওয়া হলো না। তাদের আমার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে নিয়ে আসা খেলনা শাবল আর বালতি দিয়ে আগ্রহ নিয়ে বালুর দুর্গ বানাচ্ছি। কাছেই রুমিকে হাওয়া খেতে দেখা যাচ্ছে। পানিতে নামেনি সে। এই বেড়ানোর কোনো কিছু নিয়ে তাকে ভাবতে হচ্ছে না। ভাইয়া-আপু তাকে মানিব্যাগও ছুঁতে দিচ্ছে না। সে ব্যাপারটাকে ‘ডিফল্ট’ জামাই আদর ভেবে নিয়ে রাশভারী মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এখানে এসে সে খুশি হয়েছে নাকি বেজার, সেটা বোঝার উপায় নেই। দশজনের আনন্দের প্রকাশ যে এক রকম নয়। সেটা প্রমাণ করতে আচমকাই বাঁই বাঁই করে এক দিকে দৌড়ানো শুরু করেছে রুমি। অথচ দৌড়ানো তার দুই চোখের বিষ। ডেকে লাভ হলো না। সে মেঠো ইঁদুরের গতিতে দৌড়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। এই চৌষট্টি হাজার বর্গমাইলের পুরোটাই তার। এর তীর ঘেঁষে সে একবার ঘুরে আসতে চায়।

তাফসু মিয়া তার বালুর কেল্লা হেলায় ফেলে বাবার পিছু নিয়েছে। ভাইয়া-আপু আর রেন পানি ছেড়ে উঠে এসেছে এর মাঝে। রনকে মায়ের কাছে গছিয়ে আমিও বাবা-ছেলে বরাবর ছুটলাম। শণ শণ বাতাস কেটে দৌড়াচ্ছি। নাকি উড়ে যাচ্ছি? এত স্বাধীন কখনো লাগেনি।

দুজনকে শেষমেশ বাগে পেয়ে ফিরিয়ে এনে ছানাবড়া চোখে দেখি এদিকে আরেক কাণ্ড। রন-রেন দুই ভাইবোন মিলে ভাইয়াকে ভাস্কর্য বানিয়ে ফেলেছে। কাজটা ভেজা বালু চেপে চেপে নিখুঁতভাবে করা হয়েছে। ভাইয়াকে আগস্ট রোনে রদ্যাঁর ‘দ্য থিংকার’-এর মতো লাগছে। এই বিখ্যাত ফরাসি ভাস্করের সঙ্গে তার নামের মিল আছে। দুজনের নাম রোনে।

ফ্রান্সে জন্ম নেওয়ায় ভাইয়ার নাম নিয়ে যথেচ্ছ কেরিক্যাচার করা হয়েছে। চার শব্দের নামের অর্ধেকই ফরাসি। মায়ের পিএইচডি গাইড আর হাসপাতালের ডাক্তার কী ভেবে দারুণ উৎসাহে নিজেদের নাম উপহার হিসেবে গছিয়ে দিয়েছিলেন। উপহারের ঢেঁকি গিলে তার নাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘রোনে সুজন ক্লোদ সরকার’। বেচারার জীবনটাই গেছে জনে জনে নামের ব্যাখ্যা দিয়ে।

গেস্টহাউসের ছাউনিতে বসে সবাই অল্প বিস্তর ঘামছে। ফরসা হওয়ায় ঝুমু আপু আর রুমির গাল-কপাল আপাতত টকটকে লাল টমেটো। ভাইয়া আর আমি আগ্রহ নিয়ে তাই দেখছি। আমরা দুই বর্ণবাদী ভাইবোন খুঁজে খুঁজে ফরসা লোক বের করেছি। খুব বড় দাও মারা গেছে। খাঁটিয়ে রাখা হ্যামকগুলোতে হাত-পা টান টান করতে করতে এক ধরনের আত্মপ্রসাদ নিয়ে ভাবছি আমরা।

একটু পরেই অবশ্য বোঝা গেল কে আসলে দাও মেরেছে। আমাকে দেখা গেল এই দুদিনের আধোয়া কাপড় ধুয়ে চিপিয়ে চিপিয়ে গেস্টহাউসের তারে শুকাতে। ভাইয়াকেও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে রনকে গোসল দেওয়ার কাজে। ওদিকে ফরসা দুজনকে হ্যামক দখল করে আধবোজা চোখে গেস্টহাউসের দারুণ সাউন্ড সিস্টেমে নব্বইয়ের দশকের ইংরেজি গান শুনতে দেখা গেল। জর্জ মাইকেল আর পিংক ফ্লয়েড গানের ব্যাকগ্রাউন্ডে কাপড় নাড়তে অবশ্য অতটা খারাপ লাগল না।

সপরিবার লেখিকা ও সঙ্গীরা। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার
সপরিবার লেখিকা ও সঙ্গীরা। ছবি: ডা. রোনে সুজন ক্লোদ সরকার

দশ.

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। ঝুমু আপুর চাপাচাপিতে বাগানে কেটে রাখা কোর্টে ব্যাডমিন্টন চলল খানিকক্ষণ। তাকে দেখে এখন কে বলবে যে তার সারা দিন কাটে রোগীদের হাত-পা কেটে বা জুড়ে দিয়ে। অর্থোপেডিক সার্জনের ভারী তকমাটা খুলে সে খোলা চুল উড়িয়ে ছোট্ট মেয়ের উচ্ছ্বাসে খেলছে। যার যার যাপিত জীবনের বোঝা আমরা ঢাকায় রেখে এসেছি। এখানে আর আনিনি।

এদিকে, খেলাটা একদম না জানা রেন দশ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত চাপ মেরে আমাকে বসিয়ে দেওয়ার জোগাড় করছে। এককোণে তাফসু মিয়া আর রন খুব মনোযোগে দাবার ছক নিয়ে বসেছে। তাফসু মিয়া ইচ্ছেমতো রাজা-মন্ত্রী উল্টে দিচ্ছেতো রন হাতি-ঘোড়া ছুটিয়ে রাজার ঘাড় মটকানোর তাল করছে। এমনতর দাবা খেলা দেখলে বোধ হয় রানি হামিদ কী নিয়াজ মোর্শেদ হাত কামড়ে মরে যেত।

একটা দুইটা করে তারা ফুটতে শুরু করেছে সন্ধ্যা পেরোনো রাতের আকাশে। খেলাধুলা শিকেয় তুলে আমরা আকাশ দেখতে বেরোলাম। গোটা কয়েক তাকিয়া পেতে দিয়েছে গেস্টহাউসের হাসিখুশি কেয়ারটেকার। তাতেই গ্যাঁট হয়ে শুয়ে আছি আকাশের দিকে মুখ করে। সেই মুখ আমাদের হা হয়ে গেল পর মুহূর্তেই। হিরার কুচি ছড়ানো এই চাঁদোয়া আবার আকাশ হয় কেমন করে?

রেন আর আমি একসঙ্গে আকাশ দেখছি। সে আমার ভক্ত। আমিও তার কড়া ভক্ত। এক রেখায় ভেসে থাকা বড় বড় তিনটা তারার দিকে তাক করে রেন দেখাল, ‘রিম, ওই যে অরিয়নস বেল্ট’। কালপুরুষ ইত্যাদি তার মুখস্থ। তার দুটি বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ। এক, মিসরীয় মমি আর দুই, গ্রহ-নক্ষত্র। আশপাশে মিসরীয় কী দেশীয় মমি বা তাদের ভূত না থাকার কারণে সে তার আকাশবিজ্ঞানের জ্ঞান কপচানোর ধান্দায় আছে।

হঠাৎ কালপুরুষের হাতের বাঁকানো ধনুক থেকে একটা তীর ছুটে যেতে দেখলাম মনে হলো। ইংলিশ মিডিয়ামের রেন আর বাংলা মিডিয়ামের আমি প্রায় একসঙ্গে ‘শুটিং স্টার’! আর ‘তারা খসা’ বলে চেঁচিয়ে উঠলাম। আরও কতগুলো তারা খসিয়ে বিশাল এক চাঁদ উঠেছে। আগের দিনে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমায় বোম্বে থেকে বিশাল গোল লাইট এনে কায়দা করে ঝুলিয়ে চাঁদ বানানো হতো। এই চাঁদকে দেখে মনে হচ্ছে তাকেও বোম্বে থেকে আনানো হয়েছে। তারা খসাদের ‘শুটিং’ শেষ হয়ে গেলে বাতি নিভিয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে।

এগারো.

এই দুই দিনে কোরাল দ্বীপের সৌন্দর্য খেয়ে মন ভরেছে আর পেট ভরেছে সাগরের ভীষণ স্বাদের মাছ, কাঁকড়া আর লবস্টার খেয়ে। মন-পেট পুরে তৃপ্তি নিয়ে আজকে ফেরত যাচ্ছে আমাদের দলটা। আবারও সেই স্পিডবোট। আবারও আগুনরঙা লাইফ জ্যাকেট। পার্থক্য একটাই। সাগর মারাত্মক উত্তাল।

ঝাঁকি খেয়ে আমাদের অবস্থা হলো কাচের জার থেকে ছলকে পালানো মাছের মতন। একেবারে ফিশ আউট অব অর্ডার। এই বুঝি স্পিডবোট চার টুকরা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আর আমরা ভাঙা পাটাতন আঁকড়ে ভাসতে থাকি। এর ভেতরে রন আর তাফসু হো হো করে হাসছে। তাদের ‘ন ডরাই’ ভাবভঙ্গিতে সাহস খোঁজার চেষ্টা করছি। কারণ, ভয়ে একেকজনের কিডনি গলে যাওয়ার মতো অবস্থা।

নাফ নদীতে এসে হাঁফ ছাড়া গেল অবশেষে। স্পিড কমিয়ে বোট বনে গেছে স্পিডবোটটা। কাছেই সাদা বকের মেলা বসেছে জেগে ওঠা ছোট ছোট চরে। দেখলাম আকারে বড় এক বককে ঘিরে সভা বসিয়ে দিয়েছে তারা।

হুমদো বড় বকটা ভাষণ দিচ্ছে, ‘ভাইয়েরা আমার, এলাকার এক বিশিষ্ট বক ধার্মিক আমি। আপনাদের দোয়ায় এবার পালক মার্কায় দাঁড়িয়েছি। চরিত্র আমার পালকের মতোই সফেদ। ভোট আমাকে দিতেই হবে-এইটা কিন্তু ছোট ভাইয়ের আবদার,...ইত্যাদি।’ সামান্য তফাতে একটা বুড়ো মদনটাক খুব উদাস মুখে কী যেন চিবোচ্ছে। দুটো গাঙচিল এসে তার টাকে ঠোকর দিয়ে গেলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। মদনটাক ভাইকে আমাদের খুব ভালো লেগে গেল।

ঘাটে নেমে দূরে দৃষ্টি ছুড়ে দিলাম। যদি কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনকে আবার দেখা যায়। কিন্তু দেখা গেল না। ঢেউয়ের আড়ালে মিলিয়ে গেছে। মিলিয়ে গেলেও কোরাল দ্বীপের হীরা-পান্না আমাদের স্মৃতির কুঠুরিতে চোখ ধাঁধানো এক গুপ্তধন হয়ে থাকবে বহুদিন। (সমাপ্ত)
---

ড. রিম সাবরিনা জাহান সরকার: গবেষক, ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, স্কুল অব মেডিসিন, টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ, জার্মানি।

ধারাবাহিক এ ভ্রমণকাহিনির আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন