ক্যাপগ্রাস সিনড্রোম

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অন্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে সেদিনের সকালটা শুরু হয়নি এমিলির। ঘুম থেকে উঠেই এমিলি জনসনের মেজাজ চরম বিগড়ে আছে। স্বামী ডেভিড জনসনকে সে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না। কোথাও বেরোলে ডেভিড সাধারণত এমিলিকে বলে যায়। এই সাতসকালে সে কোথায় বেরিয়ে গেল এমিলি বুঝতে পারছে না।

শনিবার সকালে একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আছে এমিলি ও ডেভিড জনসন দম্পতির। সেই ধারাবাহিকতায় সকাল দশটার দিকে এমিলির ঘুম ভেঙেছে। ডেভিডকে না দেখে এখানে সেখানে তাকে খোঁজ করে এমিলি। রান্নাঘরে নেই, বাথরুমে নেই, ড্রয়িংরুমেও ডেভিড নেই। কিন্তু অবাক হয়ে এমিলি দেখে, তার ভাই মার্টিন বাগানে বসে আছে। মার্টিনকে দেখেই এমিলির মেজাজ বিগড়ে যায়।

এমিলি ও ডেভিড জনসনের বিয়ে হয়েছে প্রায় ২০ বছর। তাদের কোনো সন্তানসন্ততি নেই। এ জন্য কোনো আফসোসও নেই। এমিলি তার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। আর ডেভিড হচ্ছে একটি ব্যাংকের লোকাল ব্রাঞ্চের ম্যানেজার। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো মনোমালিন্য নেই।

সকাল হলে দুজন গাড়ি নিয়ে দুদিকে অফিসের জন্য বেরিয়ে যায়। বিকেলে সাধারণত একই সময়ে বাসায় ফেরা। একসঙ্গে ডিনার ও একসঙ্গে বাইরে বেরোনো। গত রাতেই দুজন একসঙ্গে নাইট আউটে ছিল।

এমিলির মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তার বাসায় তারই আপন ভাই মার্টিন বিনা অনুমতিতে সকালে প্রবেশ করেছে। মার্টিনের সঙ্গে এমিলির কোনো যোগাযোগ নেই প্রায় ১০ বছর হতে চলল। মার্টিন এখন সপরিবারে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে।

মার্টিন ছাড়া এমিলির আর কোনো ভাইবোন নেই। মা-বাবা দুজনেই কিছুদিন হলো মারা গেছেন।

মার্টিনের সঙ্গে সমস্যা শুরু ১১ বছর আগে। এমিলির বাবা, যিনি নিজের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন, হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যান। ব্যবসা দেখার দায়দায়িত্ব মার্টিনের ওপর পড়ে। কিন্তু মার্টিন সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে বিয়ে করার জন্য অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। ফলে তাদের অনেক দিনের কাপড়ের ব্যবসাটা বাজার আর ধরে রাখতে পারেনি। একপর্যায়ে ব্যবসাটা বন্ধ করে দিতে হয়। শেষ বয়সে এমিলির মা-বাবা কিছুটা আর্থিক কষ্টে ছিলেন। একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা সত্ত্বেও সে আর্থিকভাবে মা-বাবাকে তেমন কোনো সাহায্য করেনি।

এমিলি ও মার্টিনের সম্পর্কটা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, গত প্রায় ১০ বছর দুজন টেলিফোনেও কোনো কথাবার্তা বলে না। সেই মার্টিনকে আজ সকালবেলা নিজের বাসায় দেখে এমিলি যারপরনাই অবাক। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সে এমিলির বাসার ঠিকানা জানল কীভাবে?

কিছুটা বিরক্তি ও হতাশা নিয়ে সে ডেভিডকে খুঁজতে থাকে। উপায়ান্তর না দেখে সে ডেভিডের মোবাইল ফোনে কল করে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, সে যখন ডেভিডকে ফোন করে তখন ফোন মার্টিনের হাতে রিং হচ্ছে! মার্টিন বলে উঠল, সেই-ই ডেভিড। এমিলি কোথাও ভুল করছে।

আসমান থেকে পড়ে এমিলি। বাগানে যে দাঁড়িয়ে আছে সে তো মার্টিন! সে কীভাবে ডেভিড হলো?

ডেভিড যতই বলছে, ‘আমি মার্টিন নই, আমি হচ্ছি ডেভিড, তোমার স্বামী’, এমিলি ততই অবাক হচ্ছে! একপর্যায়ে কথাবার্তা তর্কাতর্কির দিকে মোড় নেয়। তখন এমিলি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করে, মার্টিন ডেভিডের পোশাক পরে আছে। শুধু তা–ই নয়, তার হাতে ডেভিডের মোবাইল ফোন। তাকে অবাক করে মার্টিন চাবি দিয়ে ডেভিডের গাড়িতে উঠে গেল! তাজ্জবের ব্যাপার তো! মার্টিন ডেভিডের গাড়ির চাবি পেল কোথায়? গাড়িটা একটু সরিয়ে ডেভিড ঘরে ফিরে আসে।

লেখক
লেখক

ডেভিড যতই বলছে সে মার্টিন নয়, এমিলি ততই তাকে অবিশ্বাস করছে। ডেভিড বলছে, সে ডেভিড এবং মার্টিন এখানে আসেনি। এমিলির বক্তব্য হলো সে ডেভিড নয় বরং মার্টিন এবং সে ডেভিডের পোশাক পরে আছে। বারবার কথা বলার পরও এমিলি যখন সন্তুষ্ট হতে পারেনি সে তখন পুলিশকে ফোন করে। পুলিশকে ফোন করে এমিলি বলে, তার বাসায় একজন ইন্ট্রুডার (অনধিকার প্রবেশকারী) ঢুকেছে। ফোন পেয়ে পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই জনসন দম্পতির বাসায় উপস্থিত হয়।

পুলিশ কথা বলে ডেভিড ও এমিলির সঙ্গে একক ও আলাদাভাবে। তারা বুঝতে পারে, ব্যাপারটা একটু জটিল এবং এমিলি পুরোপুরি সুস্থ নয়। পুলিশ তখন সোশ্যাল সার্ভিসকে ফোন করে। সোশ্যাল সার্ভিস দুজন সাইকিয়াট্রিস্ট ও একজন সোশ্যাল ওয়ার্কারকে ডেকে ডেভিড ও এমিলির বাসায় পাঠায়। দুজন ডাক্তারের আমিও একজন। আমাদের কাজ হচ্ছে এ তথ্য বের করা, আসলে এমিলি মানসিকভাবে সুস্থ কি না। সে হঠাৎ করে এ রকম অদ্ভুত আচরণ করছে কেন? তাকে কি বাসায় রাখা নিরাপদ হবে? না, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে?

আমি যখন এমিলির বাসায় পৌঁছাই, তখন সন্ধ্যা প্রায় হয়ে এসেছে। বাসার আশপাশে কেমন সুনসান নীরবতা থাকলেও হঠাৎ করে এমিলির চিৎকার আমি বাইরে থেকে শুনতে পাই। পুলিশ তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এমিলি বারবার বলে যাচ্ছে, ডেভিডকে (তাঁর ভাষায় মার্টিন) বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে। যদি ডেভিড বাসা থেকে বেরিয়ে না যায়, তাহলে সে তাকে আক্রমণ করবে।

অন্যদিকে এমিলি পাগলের মতো তার স্বামী ডেভিডকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। তার সামনে যে লোকটা দাঁড়িয়ে ডেভিড বলে নিজেকে দাবি করছে সে আসলে তার আপন ভাই মার্টিন। পুলিশকে বারবার বলার পরও পুলিশ এমিলির কথা বিশ্বাস করতে না চাওয়ায় সে খুবই হতাশাগ্রস্ত।

আমরা দুজন ডাক্তার ও একজন সোশ্যাল ওয়ার্কার যখন ওই বাসায় প্রবেশ করি তখন প্রবেশদ্বারে তাঁর ভীতসন্ত্রস্ত স্বামী ডেভিডকে দেখতে পাই। ডেভিড বলল, সে কোনোভাবেই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না। কারণ, এমিলি বিশ্বাস করছে না সে ডেভিড। সে ভয় পাচ্ছে এমিলি যেকোনো মুহূর্তে তাকে আক্রমণ করে বসতে পারে।

আমরা কথা বলি পুলিশ ও এমিলির সঙ্গে তার ড্রয়িংরুমে বসে। এমিলি খুব অবাক হয় আমাদের দেখে। সে বুঝতে পারছে না, তাকে কেন দুজন সাইকিয়াট্রিস্ট ও সোশ্যাল ওয়ার্কারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তার কথায় দরজার সামনে যে লোকটা দাঁড়িয়ে ডেভিড বলে নিজেকে দাবি করছে সে ডেভিড নয়, বরং সে হচ্ছে তার ভাই মার্টিন এবং এ মার্টিনকে বাসা থেকে সরিয়ে দিলে সে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

অবশ্য সে তার স্বামী ডেভিডের ব্যাপারেও চিন্তিত। কারণ, সকাল থেকে এখনো সে তার সঙ্গে কথা বলতে পারেনি। পুলিশকে সে অনুরোধ করছে, ডেভিডকে খুঁজে বের করার জন্য। একই সঙ্গে সে পুলিশকে অনুরোধ করছে, মার্টিনকে চোখের সামনে থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

এমিলির বয়স তখন ৪৫। তার কোনো মানসিক বা শারীরিক রোগের ইতিহাস নেই। ১৫ বছর ধরে সে স্কুলে শিক্ষকের চাকরি করে আসছে। কখনো ডাক্তার দেখিয়েছে বলে মনে পড়ে না। ডেভিডের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে প্রায় ২০ বছর। তাদের দুজনের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। কখনো ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে বলে মনে পড়ে না।

সোমবার থেকে শুক্রবার দুজনই দুজনের চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। রাতে বাসায় একসঙ্গে ডিনার সারে। উইকএন্ডে মাঝেমধ্যে বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায়। ড্রিংক করার কোনো অভ্যাস নেই। সে সিগারেটও খায় না। স্কুলশিক্ষক হওয়ার কারণে অনেক কিছু থেকেই সে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

আগের দিন শুক্রবার সে দিনের বেলা পুরো সময় স্কুলে ছিল। রাতে তারা একটি তান্দুরি হাউস থেকে টেকওয়ে অর্ডার করে বাসায় একসঙ্গে বসে খেয়েছে। তারপর দুজন একসঙ্গে বিবিসির নিউজ নাইট দেখেছে। খবর দেখেছে আমেরিকার মিডটার্ম ইলেকশনের। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হঠাৎ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় উত্তেজিত হয়ে যাওয়ার ভিডিও দেখে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই হাসাহাসি করেছে।

একটি দেশের প্রেসিডেন্ট এভাবে আচরণ করতে পারেন না। এমিলির মতামত। ডেভিড সায় দিয়েছে। প্ল্যান ছিল শনিবার বিকেলে দুজন একসঙ্গে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার স্টোরে জামা কিনতে যাবে। ডিসেম্বরে ক্রিসমাস। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। বুদ্ধিমানের কাজ হলো আগেভাগেই শপিং শেষ করা। কিন্তু শনিবার বিকেলে আর বাইরে যাওয়া হয়নি। সকাল থেকেই তার মেজাজ বিগড়ে আছে এবং ক্রমাগত ডেভিডের সঙ্গে তর্ক করে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে ডেভিডের পরিচিত দুই প্রতিবেশী ও কয়েকজন বন্ধু এসে এমিলিকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে চোখের সামনে যাকে সে দেখতে পাচ্ছে সে হচ্ছে ডেভিড। তার ভাই মার্টিন নয়। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এমিলি তাদের কথা বিশ্বাস করেনি। শুধু তা–ই নয়। মুখের ওপর বলেছে তাদের বাসা থেকে চলে যাওয়ার জন্য। সবাই চলে গেলে সে পুলিশকে ফোন করেছে এবং পুলিশের মাধ্যমে আমরা এসে তার বাসায় উপস্থিত তখন।

কথা বলি এমিলির সঙ্গে। তাকে জিজ্ঞেস করি কেন তার মনে হচ্ছে তার সামনে যে ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন তিনি ডেভিড নন। কেন তার কাছে মনে হচ্ছে ডেভিডের পোশাক পরে তার ভাই মার্টিন এখানে দাঁড়িয়ে আছে? মার্টিনের তো জানার কথা নয় এমিলি কোথায় থাকে। কারণ, গত দশ বছর বোনের সঙ্গে মার্টিনের কোনো যোগাযোগ নেই। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই মার্টিন বোনের বাসার খবর পেয়ে এখানে চলে এসেছে, প্রশ্ন হচ্ছে সে কেন ডেভিডের পোশাক পরে থাকবে? শুধু তা–ই নয়, ডেভিডের হাতে ঘরের ও গাড়ির চাবি গেল কীভাবে? ডেভিডের মোবাইল মার্টিনের হাতে কেন? আর ডেভিডই বা গেল কোথায়?

এমিলির কাছে এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। কিন্তু সে নিশ্চিত যে চোখের সামনে যে লোক দাঁড়িয়ে আছে সে হচ্ছে মার্টিন, ডেভিড নয়। তাকে জিজ্ঞেস করি, ডেভিডের পোশাক পরে যে লোক সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার গলার স্বর কী ডেভিডের মতো না মার্টিনের মতো? এমিলির বক্তব্য মার্টিন ডেভিডের গলার স্বর নকল করছে। মাটিন নিশ্চয়ই ডেভিডকে গুম করে ফেলেছে এবং তার পোশাক পরে এখন তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

পুলিশ ও আমরা যতই তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করি, এমিলি তা কিছুতেই মানবে না। তার দৃঢ় বিশ্বাস চোখের সামনে মার্টিন দাঁড়িয়ে আছে এবং তাকে এক্ষুনি বাসা থেকে সরে যেতে হবে। যদি সে বাসা থেকে সরে না যায় তাহলে তাকে সরানোর ব্যবস্থা এমিলি করবে। জিজ্ঞেস করলাম, কী ব্যবস্থা সে করবে। এমিলি কোনো জবাব দেয় না। তবে তার চোখেমুখে রাগের ভাব স্পষ্ট। জিজ্ঞেস করলাম যদি ডেভিড (তার ভাষায় মার্টিন) বাসা থেকে চলে না যায় সে কি তাকে আক্রমণ করবে?

এমিলির উত্তর, হ্যাঁ। সে এ–ও বলে যে যদি মার্টিন বাসা থেকে সরে না যায় বা এমিলিকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয় তাহলে সে আত্মহত্যা করবে।

এটি একটি ভয়াবহ ব্যাপার! আমরা এমিলিকে আত্মহত্যা করতে দিতে পারি না। আবার একই সঙ্গে ডেভিডকে বাসা ছেড়ে চলে যেতেও বলতে পারি না। কারণ, এটা তারই বাসা।

এমিলি কি মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ? উত্তর হচ্ছে, না।

এমিলি যে সমস্যায় ভুগছে মেডিকেলের ভাষায় তা হচ্ছে একধরনের রোগ। এমিলি যাকে ইন্ট্রুডার হিসেবে বিবেচনা করছে সে আসলে তার কল্পনায়। বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই। মার্টিন আসলেই অস্ট্রেলিয়ায় আছে। চোখের সামনে এমিলি যাকে দেখতে পাচ্ছে, এ হচ্ছে তারই স্বামী ডেভিড। কিন্তু এমিলির কাছে তাকে মার্টিন মনে হচ্ছে। কথা বলার মাধ্যমে কোনো অবস্থাতেই এমিলির এ বিশ্বাস ও ধারণা পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না। এমিলিকে বাসায় রেখে যাওয়া একটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার। সে যেকোনো সময়ে ডেভিডের ওপর আক্রমণ করে বসতে পারে। অসম্ভব নয় যে সে চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে এসে আত্মহত্যা করে বসতে পারে।

তাকে জিজ্ঞেস করলাম সে কি হাসপাতালে যাবে। সে তো আসমান থেকে পড়ল! সে কেন মানসিক হাসপাতালে যাবে? সে তো পুরোপুরি সুস্থ ও সোমবার তাকে স্কুলে যেতে হবে! সমস্যা হচ্ছে ডেভিডকে নিয়ে। তাকে কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? মার্টিন ডেভিডের ভান ধরে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কেন? আমরা আর তর্কে জড়াই না। এমিলিকে ইংল্যান্ডের মেন্টাল হেলথ অ্যাক্টের (Mental Health Act, 2007, Section 2) আন্ডারে হাসপাতালে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভর্তি করি।

এমিলি ক্যাপগ্রাস সিনড্রোমে (Capgras Syndrome) ভুগছে। এ সিনড্রোমে যারা ভোগে, তাদের কাছে মনে হয় তাদের পরিচিতজনকে হঠাৎ করে অন্য আরেকজন এসে পুরোপুরি ভর করে দখল করে নিয়েছে। চেহারায় পরিচিতজনের মতো থাকলেও তাদের বিশ্বাস নতুন আরেকজন এদের শরীরে প্রবেশ করেছে। তারা তাদের এ বিশ্বাসে অনড় থাকে এবং ওষুধ ছাড়া এই বিশ্বাসকে নাড়ানো বা সরানো মুশকিল।

(পেশেন্ট কনফিডেনশিয়াল ইস্যু থাকায় এই কাহিনিতে স্থান, কাল ও পাত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে)
---

ডা. আলী জাহান: বিলেতে কর্মরত বাংলাদেশি সাইকিয়াট্রিস্ট। ই–মেইল: <[email protected]>