লেবানন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের যাত্রা শুরু

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেবানন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লেবানন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে লেবানন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল যাত্রা শুরু করেছে।

লেবাননের বাংলাদেশের দূতাবাসের প্রচেষ্টায় সব আনুষ্ঠানিকতার পর অবশেষে যাত্রা শুরু করল এ কাউন্সিল।

দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। একে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া ও দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন, তথ্য বিনিময়, বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশ সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান এবং সর্বোপরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ কাউন্সিল।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সানাইয়াতে অবস্থিত বিবি হাউসে লেবাননের বিনিয়োগকারী বোর্ডের সদস্য, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সূচনা করা হয় দুই দেশের ব্যবসার সেতুবন্ধন তৈরিতে বহুল প্রতীক্ষিত এই বিজনেস কাউন্সিল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটির সাবেক মন্ত্রী ও লেবানন-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইয়াসিন জাবের এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ইয়াসিন জাবের। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ইয়াসিন জাবের। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়াসিন জাবের বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। এখানে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যাঁরা এ কাউন্সিলের সদস্য, তাঁদের সবারই বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া লেবানন তাদের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের সময় বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা কাজে লাগতে পারে। এ ক্ষেত্রে কাউন্সিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই কাউন্সিলের যাত্রার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার বলেন, দূতাবাসের প্রচেষ্টা ও লেবাননের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী বন্ধুদের অকৃত্রিম সহযোগিতার ফলে বিজনেস কাউন্সিল আজ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। এ কাউন্সিল দুই দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে। তিনি এ সংগঠন প্রতিষ্ঠায় তাঁর প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন।

নবগঠিত বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট রিয়াদ বাসাতনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘১৭০ মিলিয়নের একটি বিশাল সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে। শুধু তা–ই নয়, অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে। দুই দেশ এ কাউন্সিলের মাধ্যমে লাভবান হবে। এ কাউন্সিলের মাধ্যমে দুই দেশ কীভাবে আরও লাভবান হবে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। আমরা অচিরেই বোর্ডের বৈঠক করে আমাদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করব।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে অবহিত করছেন আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে অবহিত করছেন আবদুল মোতালেব সরকার। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত

কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ড. হাসান আল আলী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ খুবই ভালো। লেবাননের বিনিয়োগকারীদের উচিত বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানো। কাউন্সিল গঠনে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

লেবাননের যেসব ব্যবসায়ীদের ইতিমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বা ব্যবসা রয়েছে, কেবল তাদেরই প্রাথমিকভাবে এ কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ছোট পরিসরে এর যাত্রা শুরু হলেও এ কাউন্সিলের গুরুত্ব ব্যাপক। ভবিষ্যতে এর কলেবর আরও বৃদ্ধি পাবে। বিজনেস কাউন্সিল দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে অনুষ্ঠানে আগত ব্যক্তিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অনেক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন। অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে বিনিয়োগ পরিবেশ দেখার জন্য বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার কথাও রাষ্ট্রদূতকে জানান ও এ জন্য তাঁর সাহায্য কামনা করেন। বিজ্ঞপ্তি