সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

সিঙ্গাপুরে বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, তাঁদের সংখ্যা ৪৫। তাঁদের অনেকেই চীন ভ্রমণ করে এসেছেন কিংবা কেউ রোগীর আত্মীয়। আবার কয়েকজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কারও সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর সরকার নড়েচড়ে বসেছে। রিস্ক লেভেল ইয়েলো থেকে অরেঞ্জ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির সরকার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে তিনটি রিস্ক লেভেল ঘোষণা করেছে।

প্রথম রিস্ক লেবেল ইয়েলো। চীনের নাগরিক যারা আক্রান্ত ও যারা চীন ভ্রমণ করে এসে আক্রান্ত হয়েছে।

দ্বিতীয় রিস্ক লেভেল অরেঞ্জ। স্থানীয় যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কিন্তু তারা কেউ চীন ভ্রমণ করেনি কিংবা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই।

তৃতীয় ও সর্বশেষ রিস্ক লেভেল রেড। দেশটির বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একাধিক রোগী শনাক্ত হলে রিস্ক লেভেল রেড ঘোষণা করা হবে। তখন সব অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

রিস্ক লেভেল অরেঞ্জ ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় এমনকি প্রবাসীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। দোকানগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। মানুষ যখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তখন তাদের মস্তিষ্ক কাজ করে না।

প্রবাসী আমরা যারা ডরমিটরিতে থাকি, তাদের ডরমিটরি থেকে বের হওয়ার সময় ও কাজ শেষে ফেরার পর শরীরের তাপমাত্রা চেক করা হচ্ছে। কারও শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই ডাক্তার দেখাতে পরামর্শ দেওয়া হবে। এমনকি অফিস বা কারখানায় প্রবেশ করার সময়ও কোনো কোনো স্থানে শরীরের তাপমাত্রা চেক করা হচ্ছে।

গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) একজন বাংলাদেশির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই প্রবাসীরা বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগে তিনি দেশটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা মোস্তফা সেন্টারে গিয়েছিলেন। তিনি কাকি বুকিত ডরমিটরিতে থাকতেন। ওখানে অনেক বাংলাদেশি থাকেন।

রোগটা যেহেতু এক মানবদেহ থেকে আরেক মানবদেহে সংক্রমিত হয়, তাই আক্রান্ত বাংলাদেশি ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আগে যাদের সঙ্গে তার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে, তাদের ভয় পাওয়ারই কথা।

বাংলাদেশি কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনার পর সিঙ্গাপুরপ্রবাসী অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাঁরা ফেসবুকে লিখেছেন, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মোস্তফা সেন্টারের দিকে আসবেন না। সবাই সাবধানে থাকবেন।