বিরহী শ্লোকের পঙ্ক্তি
তোমার দেশে ফাগুন এখন পলাশ রাঙা দিনে, আমি এখন অনেক দূরে, বুকের মাঝে কষ্টনদী বরফ হয় হিমে।
ফায়ার প্লেসের গরমিতে সেই বরফ হয় জল, সেই জলেতে তোমার ছবি ভাসে টলমল।
পাড়া বেড়ানোর সন্ধ্যাবেলা ঘাটে দেখা হলো, তোমার চোখে দেখেছিলেম আকাশ ভরা আলো।
হ্যাজাক জ্বলা মেলার মাঝে, ক্রাশ খেয়েছি স্কার্ট-ব্লাউজেও। মনকাড়া তোমার বিনুনি কৃষ্ণকালো। স্কুল পালানো জীবন তখন সিলেবাসে দুর্বল, অঙ্ক, বিজ্ঞান, ভূগোল সবকিছুতেই তোমার ছিল বল।
চৈত্র মাসে রাস উৎসব, অবিরল রঙে রাঙায় প্রাঙ্গণ, আলপনা আঁকা নিকোনো উঠোনে, রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ মাঝে নিবিষ্ট আমার মন, অষ্টসখীর ললিতা ওগো, হঠাৎ কেন ঠোঁটের মধ্যে ঢেলে দিলে প্রেমের রসায়ন।
গড়িয়েছিল অনেকটা দূর, এই বেশ ঠিকঠাক, থরথর কাঁপুনিতে হাতে রেখে হাত।
সবে নিশ্বাস ঘন হয়েছে, ভারী হয়েছে কথা, তোমার ওষ্ঠ, তোমার অধর, সারা শরীর ভরা ভালোবাসায় হয়েছিল কত আত্মীয়তা।
লক্ষ্মীটি থাক ওসব কথা, আমিও চাই না এসব তোমাকে আর ভাবায়, স্নানের ঘরে তুমিও কি ভাবো, কোনো একদিন দুজনার শরীর ভিজিয়েছিলাম প্রথম বর্ষায়।
না, না, ছি, ছি, তা কী করে হয়, এখন তুমি অন্য কূলের বউ সন্ধ্যা তারা, আমিও আছি আমার মতোই তুমি ছাড়া।
শীতের দেশে লেপের ওমে মনের বরফ গলে, মন খারাপের গল্প ভাষাই ওন্টারিও লেকের জলে।
বলবে হয়তো বুদ্ধু আমি কিংবা নেহাত ছেলেমানুষী, যদিও ডোবাই প্রেমের পাণ্ডুলিপি, ডোবে না স্মৃতি অবিনাশী।
দিব্যি তোমার সিঁথির সিঁদুর, দিব্যি তোমার ঢাকাই শাড়ি,
রাগায় আমায়, জাগায় আমায়, বাঁচায় আমায়, তোমার মনকাড়া ঝুঁটি হাসি।
তবু জলে, স্থলে, অন্তরিক্ষে রবিঠাকুর বাজায় বাঁশি ভালোবাসি, ভালোবাসি।
---
হিমাদ্রী রয় সঞ্জীব: টরন্টো, কানাডা।