সাহেব-বিবি-গোলাম

এখানে নরকের উত্তাপ পৌঁছায় না, হাওয়ায় চুঁইয়ে পড়ে নোনাজল 

কোনো এঁটোকাঁটা নেই-ধুলো পড়ে না অন্দরে, কোনো আসবাবে—
এই সব-পেয়েছিল চক্করে অবিরাম খেলি সাহেব-বিবি-গোলাম।
গড়গড়া, তোমার ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিই অমীমাংসিত বাঁটোয়ারা
যাক, যা গেছে তা যাক। পরোয়া করি না রোষে, অঙ্গারে;
আমাদের আর কোনো মতিভ্রম হয় না এই গহিন পরবাসে।
আমরা তো ভালোবাসতাম নরকের কুম্ভীপাককে, ভালোবাসতাম
আলতো হাতে কপালের ঘাম গামছায় মুছে হুঁক্কোয় টান দিতে
সাহেবের, বিবির, তাদের গোলামের পার্টে ন্যুব্জ হইনি কোনোকাল
ভালোবাসতাম বীজের সাদাসিধা অপেক্ষাকে, কর্ষিত ভূমিতে বীজ ছিটিয়ে
তৃণমূলে শুনতাম শস্যের রিনরিনে মধু গান। আমরা বরং খুশিই ছিলাম
কবিরাজি জরিবুটিতে। কীভাবে যেন জানতাম—এই তো আছি বেশ।
এ গহিন বনবাস! এ চিতায় সহমরণ নেই, এ আর কী পোড়াবে!
গোলাম-বিবি-সাহেবও বুঝি জোয়ারজলের সাদামাটা গোলকধাঁধা!
কারও আত্মা আর যেন দহে না এই জাতিস্মর ঝুলোনো মেঘে
লিখে আর কে রাখে দূরাগত প্রান্তরের খোলস ছাড়ানোর চর্বিত চর্বণ!
এখানে নোঙর নেই, নৌকো ভিড়োনোর কোনো বালাইও তাই নেই।
---

বিপাশা বিনতে হক: অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া। কবিতা লেখেন তিনটি ভাষায়। জীবনবোধ তাঁর কবিতার প্রাণ।