ইস্তাম্বুলে মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা

ইস্তাম্বুলে মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা। ছবি: বাংলাদেশ কনস্যুলেট, ইস্তাম্বুল
ইস্তাম্বুলে মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা। ছবি: বাংলাদেশ কনস্যুলেট, ইস্তাম্বুল

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে ভাবগাম্ভীর্যে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস′পালন করা হয়েছে।

এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও তুর্কি-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলরন (ডেইক) যৌথ উদ্যোগে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক পরিপ্রেক্ষিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

ডেইকের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সঞ্চালনা করেন ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ডেইকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস্কুমেন্ট পোলান্ট, ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলী গোজালিজ এবং বিখ্যাত সুফি লেখক ও সংগীত পরিচালক হাকান মেনজুচ।

আলোচকেরা ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং পৃথিবীর সব ভাষার সংরক্ষণ, চর্চা ও বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা বলেন, ভাষাবৈচিত্র্য জনগণের মাঝে বন্ধুত্বকে ঘনিষ্ঠতর করতে ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে সাহায্য করে, যা জনগণের মধ্যকার যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে।

প্যানেল আলোচনার শুরুতে ডেইকের প্রেসিডেন্ট ও গেদিক হোল্ডিংয়ের চেয়ারপারসন হুলিয়া গেদিক উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন বাংলাদেশ ও তুরস্কের জনগণের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধনকে শক্তিশালী করতে আরও সহযোগিতা করবে।

কনসাল জেনারেল ড. ইসলাম উদ্বোধনী বক্তব্যে, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রেক্ষাপট, অর্থ ও তাৎপর্য সবিস্তার আলোচনা করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শুধু রাষ্ট্রভাষার দাবির আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, তা ধীরে ধীরে বাঙালিকে আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বাংলাকে জাতিসংঘের অফিশিয়াল ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি ইউনেসকো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারির অন্তর্নিহিত আবেদন আজ বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি টেকসই উন্নয়নে বহু ভাষা ও বহু সংস্কৃতির ভূমিকার গুরুত্বও তুলে ধরেন।

এর আগে সকালে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর প্রভাতফেরি করে মিশনের প্রতীকী শহীদ মিনারে মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে মিশনের সম্মেলনকক্ষে এ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

দুই অনুষ্ঠানে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ, থিংক ট্যাংক, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি