ডেনমার্কে মাতৃভাষা দিবসে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক আবহ

সাংস্কৃতিক পরিবেশনার কিছু দৃশ্য। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার কিছু দৃশ্য। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক

বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক আবহে ডেনমার্কে পালন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবসটি পালন করা হয়।

দেশটির রাজধানী কোপেনহেগেনের এশিয়া হাউসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আলোচনা সভার পাশাপাশি বাংলাদেশ, ডেনমার্ক, নেপাল, ভারত, চীন ও সুইডেনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন।

বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা ও দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করেন।

আলোচনা সভায় দেশটির ইউনেসকো কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যানি এনেমার্ক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনার কিছু দৃশ্য। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার কিছু দৃশ্য। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক

অ্যানি এনেমার্ক বিশ্বজুড়ে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠার পেছনে বাঙালিদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ইউনেসকো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল সমাজের জন্য ভাষার গুরুত্বকে বৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি দিবসটি পালনে ইউনেসকোর এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘ভৌগোলিক সীমারেখা ছাড়িয়ে ভাষার বিস্তার’-এর ওপরও আলোকপাত করেন।

দেশটির কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়া ব্রেকহফ তাঁর মূল প্রবন্ধে বিশ্বজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বিলুপ্তির সম্মুখীন ভাষাসমূহ সংরক্ষণে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি ও যান্ত্রিক-ভাষা ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ এ মুহিত ও দেশটির ইউনেসকো কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যানি এনেমার্ক বক্তব্য দেন এবং অধ্যাপক পিয়া ব্রেকহফ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ এ মুহিত ও দেশটির ইউনেসকো কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যানি এনেমার্ক বক্তব্য দেন এবং অধ্যাপক পিয়া ব্রেকহফ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক

দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ এ মুহিত বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া একটি উপহার, যা বিশ্বজুড়ে আন্তসীমান্ত এবং সহভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, সমন্বিত ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠা করার আহ্বানে উদ্‌যাপিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ১৯৫২ সালের বীরত্বপূর্ণ ভাষা আন্দোলনে বাঙালির চূড়ান্ত আত্মত্যাগই মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বুনে দেয়।

তিনি ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, ১৯৫২ সালে কারা অন্তরীণ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় নেতৃত্ব দেন।

অতিথিদের একাংশ। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক
অতিথিদের একাংশ। ছবি: বাংলাদেশ দূতাবাস, ডেনমার্ক

পরে অতিথিরা ভারত, চীন ও ডেনমার্কের শিল্পীদের বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনা এবং নেপাল, বাংলাদেশ ও সুইডেনের শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনায় ঘণ্টাব্যাপী চলা সাংস্কৃতিক আয়োজন প্রত্যক্ষ করেন।

দিনের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ এ মুহিত দূতাবাসের সবার উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন।